জাতীয়

ঘূর্ণিঝড় আম্ফান : সংকেত নেমে সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর সতর্কতা

ঘূর্ণিঝড় আম্ফান দুর্বল হয়ে গভীর স্থল নিম্নচাপ আকারে রাজশাহী-পাবনা অঞ্চলে অবস্থান করছে। তাই মোংলা, পায়রা, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। এখনও স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৪ থেকে ৬ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসের সম্ভাবনা রয়েছে। ভারী বৃষ্টিসহ ঘণ্টায় ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝড়ো হওয়া বইতে পারে। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

Advertisement

বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ কেরে বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানায় আবহাওয়া অধিদফতর। এরপর থেকে আম্ফান কেন্দ্রিক আর কোনো বিশেষ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করবে না সংস্থাটি।

সর্বশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঝিনাইদহ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় আম্ফান আরও উত্তর দিকে অগ্রসর ও দুর্বল হয়ে গভীর স্থল নিম্নচাপ আকারে আজ (২১ মে) সকাল ৯টায় রাজশাহী-পাবনা অঞ্চলে অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে বৃষ্টি ঝরিয়ে ক্রমান্বয়ে দুর্বল হতে পারে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় বায়ুচাপের তারতাম্যের আধিক্য বিরাজ করছে। সাগর উত্তাল রয়েছে।

তাতে বলা হয়, 'মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরের ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।'

Advertisement

'বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্য এবং অমাবশ্যার প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও চট্টগ্রাম এবং এসব অঞ্চলের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৪ থেকে ৬ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।'

'সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, জালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদুপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও চট্টগ্রাম জেলায় এবং এসব অঞ্চলের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরে ভারী বৃষ্টিসহ ঘণ্টায় ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝড়ো হওয়া বয়ে যেতে পারে।'

'উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার সব নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।'

এই আম্ফানের প্রভাবে দেশের বিভিন্ন জেলায় ৯জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে যশোরে দুজন, পটুয়াখালীতে দুজন, ভোলায় দুজন, পিরোজপুরে একজন, সন্দ্বীপে একজন ও সাতক্ষীরায় একজন রয়েছেন।

Advertisement

তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে সাতক্ষীরার উপকূলীয় অঞ্চল। ইতোমধ্যে শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। উপকূলীয় এলাকার বাঁধগুলোর অর্ধশত পয়েন্ট ভেঙে গেছে। জনপদে প্রবল বেগে পানি প্রবেশ করছে। বিধ্বস্ত হয়েছে কাঁচা ঘরবাড়ি, উপড়ে পড়েছে গাছপালা।

অন্যদিকে তছনছ হয়ে পড়েছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য। বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে অতি প্রবল এই ঘূর্ণিঝড়টি রাজ্যটিতে আঘাত হানে বলে জানায় দেশটির আবহাওয়া দফতর। তখন এর গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১৫৫ থেকে ১৬৫ কিলোমিটার। সর্বোচ্চ গতিবেগ ১৮৫ কিলোমিটার।

পিডি/জেডএ/জেআইএম