জাতীয়

মহিমান্বিত রাতে অচেনা আজিমপুর কবরস্থান

রাত ১০টা। রাজধানীর আজিমপুর পুরাতন কবরস্থানের প্রধান ফটকের সামনে এক নিরাপত্তারক্ষী টুল পেতে বসে আছেন। ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের প্রভাবে বাইরে টিপটিপ বৃষ্টি ঝরছে। রাস্তাঘাটে মানুষজন নেই বললেই চলে। কবরস্থানের গেটে বিপরীত দিকে একটি স্কুলের সামনের ফুটপাতে সাহায্যের আশায় বসে আছে এক নারী। মাঝে মাঝে দু-একটি রিকশা ও মোটরসাইকেল তার সামনে দিয়ে ছুটে যাচ্ছিল। সেখানে বসে থেকেই সামনে হাত বাড়িয়ে সাহায্য চাইতে দেখা যায় ওই নারীকে। কবরস্থান গেটে ‘শেষ বিদায় স্টোরে’ একজন কর্মচারী বসে আছেন।

Advertisement

আজ পবিত্র লাইলাতুল কদর। প্রতি রোজায় মহিমান্বিত এ রাতে এমন সময়ে আজিমপুর কবরস্থানের সামনে শত শত মানুষের ভিড় থাকে। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন তাদের স্বজনদের কবর জিয়ারত করতে ছুটে আসেন এখানে। কবরের পাশে নীরবে দাঁড়িয়ে দোয়া-দরুদ পড়েন। মহান আল্লাহ তায়ালার দরবারে দুই হাত তুলে কবরবাসীর গুনাহ মাফ চান। তাদের বেহেশতবাসী করার জন্য মোনাজাত করেন। এরপর বেরোনোর সময় স্বজনদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় গেটে সারি বেঁধে অপেক্ষমান ভিক্ষুক-দুস্থদের অর্থকড়ি দান করেন।

কিন্তু এ বছর করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে আজিমপুর কবরস্থানে স্বজনদের সেই ভিড় নেই। এর মধ্যে ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের প্রভাবে বৈরী আবহাওয়া পরিস্থিতিকে করেছে আরও নীরব এবং গুমোট।

কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা যায়, শুধু আজিমপুর কবরস্থান নয়, এলাকার মসজিদগুলোতেও মুসল্লি ও সাহায্যের আশায় বসে থাকা লোকজনের উপস্থিতি ছিল অপেক্ষাকৃত কম। মসজিদ মসজিদে ‘করোনা আযাব’ থেকে রক্ষা পেতে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা আল্লাহ তায়ালার দরবারে মোনাজাত করে কান্নাকাটি করছেন।

Advertisement

কয়েকজন মুসল্লির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, করোনার কারণে স্বাস্থ্য অধিদফতরের সংক্রামক ব্যধি আইনের প্রয়োগের ফলে এমনিতেই রাতের বেলায় এখন রাস্তাঘাটে মানুষ ও যানবাহনের সংখ্যা কম থাকে। আর আজ ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের কারণে অন্যান্য দিনের চেয়ে রাস্তাঘাটে মানুষ ও যানবাহনের উপস্থিতি একেবারেই নেই বলা যায়।

এমইউ/এইচএ/পিআর