বেশিদিন আগের কথা নয়, ১৪ মাসের মতো হবে। বাংলাদেশ জাতীয় দলের ম্যানেজার তখন খালেদ মাসুদ পাইলট। টাইগাররা খেলতে গিয়েছিল নিউজিল্যান্ডে। বিভীষিকাময় সেই সফরের শেষ টেস্ট না খেলেই ফিরতে হয়েছিল দেশে।
Advertisement
তবে তার আগে খেলা কোন ম্যাচেই জয় পায়নি বাংলাদেশ। খেলোয়াড়দের উজ্জীবিত করার জন্য, ভালো পারফরম্যান্স আদায়ের জন্য টেস্ট সিরিজে একটি ঘোষণা দেন ম্যানেজার পাইলট। বলেন, টেস্টে যে সেঞ্চুরি করবে তাকে এক লাখ টাকা পুরস্কার দেয়া হবে।
এই ঘোষণার ঠিক পরের ম্যাচেই তামিম ইকবালের ব্যাট থেকে আসে ১২৬ রানের ইনিংস। পাইলটের ঘোষণা অনুযায়ী এক লাখ টাকা পাওয়ার কথা তামিমের। কিন্তু ১৪ মাস পেরিয়ে গেলেও, এখনও নিজের সেঞ্চুরির পুরস্কার পাননি তামিম।
সেই ঘটনা হয়তো আড়ালেই থেকে যেত সবার। কিন্তু মঙ্গলবার তিন সাবেক অধিনায়ক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু, আকরাম খান ও খালেদ মাসুদ পাইলটকে নিয়ে করা লাইভে সেটি জানিয়ে দিলেন তামিম নিজেই। একইসঙ্গে বোর্ডের দুই কর্তার (আকরাম-নান্নু) কাছে অনুযোগও করেন তিনি।
Advertisement
প্রসঙ্গটা আনেন তামিমই। গত বছরের ফেব্রুয়ারি-মার্চে করা নিউজিল্যান্ড সফরের কথা মনে করে তিনি বলেন, ‘নিউজিল্যান্ড ট্যুরে পাইলট ভাই ছিলেন আমাদের ম্যানেজার। সেই ট্যুরের ওয়ানডে সিরিজে আমরা খুব খারাপ খেলি। আপনারা (আকরাম-নান্নু) দুইজন বোর্ড মেম্বার আছেন, আপনারাও শোনেন, বিচার কইরেন।’
‘ওয়ানডে সিরিজে খারাপ খেলার পর, টেস্ট সিরিজের আগে পাইলট ভাই ম্যানেজার হিসেবে ঘোষণা দিলেন যে, টেস্টে যে সেঞ্চুরি করবে তাকে এক লাখ টাকা পুরস্কার দেয়া হবে। তো আমি প্রথম ইনিংসেই সেঞ্চুরি (১২৬) করেছিলাম। কিন্তু আমার টাকাটা কই?’
তামিমের টাকা না পাওয়ার অভিযোগে নিজের পক্ষে পাইলট বলেন, ‘আসলে কখনও কখনও ভালো খেলার জন্য অনেক কিছুই বলতে হয়। সেই সফরটা খুব বাজে যাচ্ছিল আমাদের। তাই আমি চাচ্ছিলাম যেকোনভাবে নিজেদের সেরাটা বের করে আনতে। তাই আর কি বলেছিলাম সেঞ্চুরি করলে... আমি তো জানতাম তামিমই সেঞ্চুরি করবে আর আমাকে জ্বালাবে (হাসি)।’
পাইলটের টাকা না দেয়ার ঘটনা চাচা আকরাম খানকে আগেই জানিয়েছেন তামিম। সে কথা জানিয়ে আকরাম বলেন, ‘তামিম আমাকে বলেছে যে, চাচা, পাইলট ভাই বলেছিলেন সেঞ্চুরি করলে এক লাখা টাকা দেবেন। আমি জিজ্ঞেস করলাম, তাহলে দিচ্ছে না কেন? তামিম বলে, আমি যদি ডানে যাই, উনি যায় বামে আর আমি বামে গেলে উনি যায় ডানে। উনি আমার সাথে কথাই বলছে না (হাসি)।’
Advertisement
চাচা-ভাতিজার মজার মধ্যে কোণঠাসা হয়ে পড়া পাইলট বলার জন্য আর কিছু খুঁজে পাচ্ছিলেন না। অনুযোগের স্বরে বলেন, ‘চাচা-ভাতিজা মিলে এখন আমার পিছে লাগছে। আমি টেনশনে ছিলাম, জানতাম তামিম এটা নিয়ে আমাকে ধরবে।’
এদিকে তামিম শুধু পাইলটের কাছেই এক লাখ টাকা পান এমনটা নয়। কয়েকদিন আগে মাশরাফি বিন মর্তুজার সঙ্গে করা লাইভে জানা গেছে, তিনি মাশরাফির কাছেও পান সমান এক লাখ টাকা। তাও অন্য কিছুর নয়, বরং ব্যাটের বদলে এই টাকা দেয়ার কথা বলেছিলেন মাশরাফি। কিন্তু এখনও সেই টাকা পাননি তামিম।
পাইলট বা মাশরাফির কাছ থেকে এই এক লাখ টাকা করে পাওয়ার বিষয়টা অবশ্য গুরুত্বের সঙ্গে দেখেন না তামিম। এ নিয়ে তার কোন অভিযোগও নেই। বরং সাধারণ দর্শকদের দলের ভেতরের মজার ঘটনা জানানোর জন্যই এসব গল্প, কাহিনী শুনিয়েছেন তামিম, মাশরাফিরা।
এসএএস/পিআর