প্রবাস

বাউল রণেশ ঠাকুরের ঘর বানিয়ে দেবেন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী

সুনামগঞ্জের বাউল রণেশ ঠাকুরের নতুন ঘর বানিয়ে দেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী সাদিকুর রহমান সুফিয়ান। এজন্য তিনি রণেশ ঠাকুরের সঙ্গে যোগাযোগও করেছেন। এই সপ্তাহের মধ্যেই ঘর নির্মাণ কাজ শুরু হবে। শুধু ঘর নয়, রণেশ ঠাকুরকে বাদ্যযন্ত্রও কিনে দিতে চান সাদিকুর। এক্ষেত্রে সবার সহযোগিতা কামনা করেছেন তিনি।

Advertisement

গত ১৭ মে রাতে সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার উজানধল গ্রামে বাউল রণেশ ঠাকুরের চল্লিশ বছরের সাধনার গানের বই ও বাদ্যযন্ত্রসহ ঘর আগুনে পুড়ে যায়। দুর্বৃত্তরা ঘরে আগুন দিয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। পরদিন সোমবার (১৮ মে) বিকেলে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পুলিশ ।

যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী সাদিকুর রহমান সুফিয়ান বলেন, আমি ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানার পর নিজে নিজে ছোট বোধ করেছি। অনুতপ্ত হয়েছি। আমি বিশ্বাস করতে চাই না আমার এলাকায় এতো খারাপ মাুনষ আছে যে বাউলের ঘর পুড়িয়ে দিয়েছে। আমরা হাফিজুর-হালেমা ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে সাধ্য মতো চেষ্টা করবো একটি ভালো মানের ঘর বানিয়ে দিতে, বাদ্যযন্ত্র কিনে দিতে। এ বিষয়ে অন্যান্যরা এগিয়ে এলে কাজটি আরও সহজ হয়ে যাবে।

তিনি ঘর পুড়িয়ে দেয়ার পেছনে জড়িত অপরাধীদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনার জন্য প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানান।

Advertisement

রণেশ ঠাকুর প্রয়াত বাউল সম্রাট শাহ আবদুল করিমের শিষ্য। বসতঘরের উল্টোদিকে তার বাউল গানের ঘর। ওখানেই তার ও শিষ্যদের বাদ্যযন্ত্র থাকতো।

রোববার রাত ১১টায় পরিবারের সবাই ঘুমোতে গেলে ১টার দিকে রণেশ ঠাকুরের বড় ভাইয়ের স্ত্রী চিৎকার করে সবাইকে ডাকতে থাকেন। তখন সবাই ঘুম থেকে উঠে দেখেন গানের ঘর পুড়ে যাচ্ছে। পরে আশপাশের লোকজন চেষ্টা করে আগুন নেভালেও পুরো ঘরই পুড়ে ছাই হয়ে যায়।

রণেশ ঠাকুর জানান, গ্রামের বা আশপাশের কারও সঙ্গেই তার কোনো শত্রুতা নেই। কারা যে এমন ঘটনা ঘটিয়েছে তা তিনি বুঝতে পারছেন না।

বাউল সম্রাট শাহ্ আবদুল করিমের ছেলে নূর জালাল জানান, আগুনে রণেশ ঠাকুরের প্রায় চল্লিশ বছরের সাধনার সব যন্ত্রপাতি, গানের বই-পত্র পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।

Advertisement

দিরাই থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জহিরুল ইসলাম জাগোনিউজকে জানান, গভীর রাতে এ আগুন জ্বালানোর ঘটনা ঘটে। আগুনে বাউলের দোতরা, বেহালা, হারমোনিয়ামসহ গান গাওয়ার সব যন্ত্রপাতি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ঘরের একপাশে দুটো ভেড়া ছিল। এগুলো বের করে দিয়ে আগুন ধরানো হয়েছে। আমরা ঘটনাটি তদন্ত করছি।

এইচএ/পিআর