ফরিদপুরে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রথম মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার (১৯ মে) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ৮০ বছর বয়সী এক মুক্তিযোদ্ধা করোনায় মারা গেছেন। তিনি জেলার বোয়ালমারী উপজেলার চতুল ইউনিয়নের বাসিন্দা ছিলেন।
Advertisement
গত রোববার ওই মুক্তিযোদ্ধা ও তার স্ত্রীর (৭০) করোনা শনাক্ত হয়। করোনা শনাক্ত হওয়ায় বাড়িতে রেখেই তাদের বিচ্ছিন্ন করে চিকিৎসা সেবা দেয়া হচ্ছিল। তারা সম্প্রতি ডাক্তার দেখাতে ঢাকার কচুখেতে ছেলের বাসায় এসেছিলেন। গত শনিবার তারা গ্রামে ফিরে যান। রোববার তাদের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হয়।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বোয়ালমারী উপজেলার চতুল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শরীফ মো. সেলিমুজ্জামান বলেন, মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মারা গেছেন ৮০ বছর বয়সী ওই বৃদ্ধ। বাড়ির পাশে একটি বাগানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে তার দাফন সম্পন্ন করা হবে।
ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. আলীমুজ্জামান বলেন, ওই মুক্তিযোদ্ধাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করার সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।
Advertisement
এদিকে ফরিদপুরে দুই বোন ও ভাগনিসহ আরও আটজনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। মঙ্গলবার (১৯ মে) সকালে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজের করোনা ল্যাব থেকে এ তথ্য জানা গেছে। এ নিয়ে ফরিদপুরে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ৬১ জন।
ফরিদপুরে নতুন করে যে আটজনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে তাদের মধ্যে সাতজন নগরকান্দা এবং একজন সালথা উপজেলার বাসিন্দা। নগরকান্দার সাতজনের মধ্যে দুইজন জন চাকরি সূত্রে নগরকান্দা রয়েছেন। আক্রান্ত আটজনের মধ্যে পাঁচজন নারী এবং তিনজন পুরুষ।
আক্রান্তদের মধ্যে দুই বোন (৩৮) ও (২০) এবং এক ভাগনী (১৪) রয়েছেন। এরা নগরকান্দা উপজেলার ফুলসূতি ইউনিয়নের বাসিন্দা। সম্প্রতি এক বোনের (২০) বাচ্চা হয় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এ সময় ওই পরিবারের সদস্যরা হাসপাতালে থাকাসহ কয়েক দফা আসা যাওয়া করেন। এতেই তারা করোনায় আক্রান্ত হতে পারেন এমন সন্দেহে গত সোমবার ওই পরিবারের সদস্যরা নমুনা দিয়েছিলেন পরীক্ষার জন্য।
এছাড়া একই উপজেলার কাইচাইল ইউনিয়নের একটি গ্রামের এক ব্যক্তির (৫০) করোনা শনাক্ত হয়েছে। তিনি কিছুদিন আগে ঢাকায় গিয়েছিলেন।
Advertisement
অপরদিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত দুই স্বাস্থ্য পরিদর্শিকা (৪৮) ও (৫০) এবং এক স্বাস্থ্য পরিদর্শিকার ছেলে (২৮) করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এরা তিনজনই টাঙ্গাইল জেলার ধনবাড়ী উপজেলার বাসিন্দা।
এছাড়া সালথা উপজেলায় আক্রান্ত হয়েছেন ২৩ বছর বয়সী এক তরুণ। তার বাড়ি উপজেলার গট্টি ইউনিয়নে।
ফরিদপুর জেলায় এ পর্যন্ত মোট ৬১ জনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। নয়টি উপজেলার মধ্যে এতদিন সালথায় কোনো করোনা রোগী ছিল না। মঙ্গলবার সালথায় করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ায় ফরিদপুরের নয়টি উপজেলাতেই করোনাভাইরাস শনাক্ত হলো।
ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. আলীমুজ্জামান জানান, নগরকান্দার ফুলসুতী, কাইচাইল ইউনিয়ন এবং সালথা উপজেলার গট্টি ইউনিয়নে করোনা শনাক্ত হওয়া বাড়িগুলো বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। পাশাপাশি শনাক্ত হওয়া ব্যক্তিরা কাদের সঙ্গে মিশেছে তাদের শনাক্ত করে বিচ্ছিন্ন করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
সিকদার সজল/এফএ/এমকেএইচ