জাতীয়

অতি প্রবল রূপে আঘাত হানবে ঘূর্ণিঝড় আম্ফান

বর্তমানে সুপার সাইক্লোন রূপে আছে আম্ফান। মঙ্গলবার (১৯ মে) শেষরাত নাগাদ এর প্রভাব পড়তে শুরু করবে। উপকূলের কাছাকাছি আসলে ও ভূমি স্পর্শ করলে ঘূর্ণিঝড়ের শক্তি কমতে থাকে। তাই শেষরাত থেকে আম্ফানের শক্তি কমতে পারে। শক্তি কমে সুপার সাইক্লোন থেকে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় রূপে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চল অতিক্রম করতে পারে।

Advertisement

মঙ্গলবার (১৯ মে) দুপুর আড়াইটার দিকে জাগো নিউজকে এসব তথ্য জানান আবহাওয়াবিদ মনোয়ার হোসেন।

তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড় যখন ভূমি স্পর্শ করে তখন ধীরে ধীরে এর গতি কমে। একবারে কমে না। আমাদের উপকূলীয় অঞ্চলে আজ শেষরাত থেকে বুধবার (২০ মে) সন্ধ্যা পর্যন্ত আম্ফানের প্রভাব থাকবে। ফলে ভোর থেকে এর গতি কমতে থাকবে। ভূমিতে চলে আসলে ১৪০ থেকে ১৬০ কিলোমিটার শক্তিতে আমাদের উপকূল অঞ্চল অতিক্রম করতে পারে। এখন সুপার সাইক্লোন থাকলেও উপকূল অতিক্রমের সময় অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে।

এদিকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে আবহাওয়া অধিদফতর জানায়, ঘূর্ণিঝড় অতিক্রমকালে সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও চট্টগ্রাম জেলাসমূহ এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণসহ ঘণ্টায় ১৪০ থেকে ১৬০ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।

Advertisement

আরও বলা হয়, পশ্চিম মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত সুপার সাইক্লোন আম্ফান উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে বর্তমানে একই এলাকায় অবস্থান করছে। এটি আজ (১৯ মে) দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৮১০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৯০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে খুলনা ও চট্টগ্রামের মধ্যবর্তী অঞ্চল দিয়ে ১৯ মে শেষরাত থেকে ২০ মে বিকাল বা সন্ধ্যার মধ্যে বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

সুপার সাইক্লোন কেন্দ্রের ৯০ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ২২৫ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ২৪৫ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। সুপার সাইক্লোন কেন্দ্রের কাছে সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ রয়েছে।

মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ৭ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ৬নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

Advertisement

ঘূর্ণিঝড় এবং অমাবস্যার প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও চট্টগ্রাম এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৫ থেকে ১০ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে

উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

পিডি/এমএসএইচ/পিআর