ঠাকুরগাঁওয়ের রসিক রায় জিউ মন্দিরে দুইটি সংগঠন পৃথক দুর্গাপূজার আয়োজন করায় সেখানে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। রোববার সন্ধ্যা ৬টায় এ আদেশ জারি করে স্থানীয় প্রশাসন।সদর উপজেলার আউলিয়াপুর ইউনিয়নের মাদারগঞ্জ গ্রামে রসিক রায় জিউ মন্দিরে সনাতন হিন্দু সম্প্রদায়ের একটি দল ও কৃষন ভাবনামৃত সংগঠন ইস্কন পৃথকভাবে দুর্গাপূজার আয়োজন করায় সেখান উত্তেজনা বিরাজ করে। আর এরই প্রেক্ষিতে মন্দির চত্বরে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করে সেখানে পূজা না করার নিদের্শ দিয়েছে প্রশাসন।এলাকাবাসী জানান, দীর্ঘদিনের পুরাতন রসিক রায় জিউ মন্দিরের নামে দুইটি মৌজায় মোট ৫২ একর দেবত্তোর জমি রয়েছে। এই জমির মালিকানা নিয়ে মন্দিরের সেবাইত ফুলেন চন্দ্র সরকারের সঙ্গে এলাকার কিছু লোকজনের বিরোধ চলছিল। ১৯৯৩ সালে স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে সেই বিরোধ নিষ্পত্তি হয়।কিন্তু ২০০৯ সালে ইস্কনের লোকজন ওই জমির মালিকানা দাবি করে আকস্মিকভাবে মন্দিরে অবস্থান নেয়। আর এই নিয়ে ২০০৯ সালে সেখানে সনাতন হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনের সঙ্গে ও ইস্কনের লোকজনের সংষর্ষ হয়। ওই সময়ে ফুলবাবু নামে এক ব্যক্তি নিহত হন। এ ঘটনায় ইস্কনের লোকজনের নামে একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।আর এ সূত্র ধরে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলতে থাকে এবং প্রতি বছর দুর্গাপূজার সময় উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়। বিরোধ নিরসনে বেশ কয়েকবার স্থানীয় সংসদ সদস্য রমেশ চন্দ্র সেন ও জেলা-উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা এবং পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দ বৈঠকের মাধ্যমে আপোস করার চেষ্টা করেন।সম্প্রতি ওই মন্দিরে সনাতন হিন্দু সম্প্রদায় ও কৃষন ভাবনামৃত সংগঠন ইস্কনের লোকজন পৃথকভাবে দুর্গাপূজা উদযাপনের প্রস্তুতি নেয়। এদের মধ্যে এক পক্ষ মন্দিরের বাহিরে ও অন্য পক্ষ মন্দিরের ভিতরে প্রতিমা তৈরি করে পূজার প্রস্তুতি নেয়।আর এ নিয়ে ওই এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা দেখা দিলে উপজেলা প্রশাসন রোববার সন্ধ্যা ৬টা থেকে অর্নিদিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করে। একই সঙ্গে ওই মন্দিরে পূজা পালন না করার নির্দেশ দেয়া হয়।এ ব্যাপারে সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফুল ইসলাম জানান, `যেহেতু পূজার সময় শুরু হয়েছে, সেহেতু পরিস্থিতি শান্ত রাখতে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। পূজার পর এ বিরোধ মিমাংসার চেষ্টা করা হবে। বর্তমানে ওই এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।রবিউল এহসান রিপন/এআরএ
Advertisement