ধর্ম

যেসব কাজে ইতেকাফ মাকরূহ ও নষ্ট হবে

রমজানের শেষ দশকের বিশেষ আমল ইতেকাফ। অধিকাংশ মানুষই রমজানের শেষ ১০ দিন এ ইতেকাফ করে থাকেন। কিন্তু কিছু মানুষ শেষ ৭/৫/৩ দিন ইতেকাফে অংশগ্রহণ করে। আল্লাহর নৈকট্য লাভের উদ্দেশ্যেই পরিবার পরিজন ছেড়ে মুমিন মুসলমান মসজিদে অবস্থান করে।

Advertisement

ইতেকাফে শরঈ ও মানবীয় একান্ত হাজত বা প্রয়োজন ছাড়া ইবাদত-বন্দেগির বাইরে অন্য কোনো কাজ করা যায় না। এমনকি মসজিদে বাইরে বের হওয়াও বৈধ নয়। বের হলে ইতেকাফ ভেঙে যায়। ইতেকাফ ছুটে যাওয়ার কিছু কারণ হলো-

- মসজিদে থেকে বিনা কারণে বের হলে।- ফরজ গোসল ও স্বাভাবিক নিয়মিত গোসল ছাড়া গরম কিংবা ঘামের দুর্গন্ধের কারণে অতিরক্তি গোসল করতে মসজিদে বাইরে যাওয়া বৈধ নয়। আর মসজিদে ভেতরে যদি গোসলের ব্যবস্থা থাকে তবে গোসল করা যাবে নতুবা গামছা দিয়ে শরীর মুছে নেবে। তবে ইস্তেঞ্জায় বা হাজত সারতে গিয়ে অজু করার পরিমাণ সময়ের মধ্যে গোসল করতে পারলে তাতে কোনো অসুবিধা নেই।

- ইতেকাফ অবস্থায় মেসওয়াক বা ব্রাশ করার জন্য মসজিদে বাইরে যাওয়া যাবে না। মসজিদে ব্রাশ করে ওজু করতে বাইরে যাওয়া যাবে। কিংবা ওজুর সময় মেসওয়াক করা যাবে। শুধু মেসওয়াক বা ব্রাশ করার জন্য মসজিদে বাইরে যাওয়া বৈধ নয়।- মৃত ব্যক্তির জানাজায় অংশগ্রহণের জন্য মসজিদের বাইরে যাওয়া যাবে না।- অসুস্থ ব্যক্তির সেবা করার জন্যও মসজিদে বাইরে যাওয়া যাবে না।- ফোনে কথা বলার জন্যও মসজিদ থেকে বের হওয়া যাবে না।- ইতেকাফ অবস্থায় রোজা ভাঙ্গা যাবে না। কেননা ইতেকাফের জন্য রোজা রাখা শর্ত। কেউ যদি অসুস্থতার কারণে রোজা ভেঙে ফেলে তবে তার ইতেকাফ নষ্ট হয়ে যাবে।- ইতেকাফকারী অসুস্থ হয়ে চিকিৎসার উদ্দেশ্যে মসজিদের বাইরে ডাক্তারের কাছে গেলেও ইতেকাফ ভেঙে যাবে।

Advertisement

তবে অসুস্থতার জন্য রোজা ভাঙা কিংবা ডাক্তারের কাছে চিকিৎসা গ্রহণের যাওয়ার ফলে এ ব্যক্তি গোনাহগার হবে না।

মনের রাখতে হবে, ইতেকাফে যে কোনো অপ্রয়োজনীয় কাজই মাকরূহ। তা হতে পারে-- অনর্থক গল্প করা।- মোবাইলে খেলা করা।- সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চ্যাট করা।- ইতেকাফ অবস্থায় চুপচাপ বসে থাকাকে ইবাদত মনে করে মসজিদে অবস্থান করাও মাকরূহ। কারণ চুপচাপ বসে থাকা ইবাদত নয়।- বিনা প্রয়োজনে বেচাকেনা সংক্রান্ত কথা বলা। একান্ত প্রয়োজনের ক্ষেত্রে বেচাকেনা করার অনুমতি রয়েছে। এক্ষেত্রে শুধু প্রয়োজনী কথাই বলবে। তবে মসজিদে ব্যবসার মালামাল নিয়ে আসা মাকরূহ।

সুতরাং ইতেকাফ অবস্থায় উল্লেখিত কাজগুলো থেকে বিরত থাকা জরুরি। নতুবা রোজাদারের ইতেকাফ নষ্ট হয়ে যাবে কিংবা মাকরূহ হয়ে যাবে।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে ইতেকাফকালীন সময়ে প্রত্যেককে যথাযথভাবে ইতেকাফের হক আদায় করে ইবাদত-বন্দেগিতে অতিবাহিত করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

Advertisement

এমএমএস/জেআইএম