বাংলাদেশের আপামর মানুষ শান্তিপ্রিয়। যুগ যুগ ধরে এদেশের মানুষ প্রতিটি উৎসব জাতি, ধর্ম নির্বিশেষে এক সঙ্গে শান্তিপূর্ণভাবে পালন করে আসছে। হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপূজাকে ঘিরে বাগেরহাটে হাকিমপুর শিকদার বাড়ি আজ মিলন মেলায় পরিণত হয়েছে এটা তারই প্রমাণ। সোমবার বিকেলে বাগেরহাট সদর উপজেলার শিকদার বাড়িতে দুর্গাপূজার উদ্ধোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় নৌ পরিবহন মন্ত্রী মো. শাহজাহান খান এ কথা বলেন। তিনি আরো বলেন, বর্তমান সরকার সারা দেশের মানুষের শান্তি ও কল্যাণের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। অন্যদিকে একটি চক্র দেশের শান্তি সৌহার্য্য বিনষ্টের অব্যাহত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এই অসুর শ্রেণিরা দেশের কল্যাণকামী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। দেবী দুর্গা যেমন অসুরকে বধ করেছিল তেমনিভাবে আমাদের নেত্রীর হাতে অসুরের বধ হতে হবে। মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয় সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট মীর শওকত আলী বাদশা এমপির সভাপতিত্বে চার দিনব্যাপি দুর্গোৎসবের উদ্ধোধনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লা, কেন্দ্রীয় মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান ইসমত কাদির গামা, বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর আলম, পুলিশ সুপার মো. নিজামুল হক মোল্যা,হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের বাগেরহাট জেলা শাখার সভাপতি শীব প্রসাদ ঘোষ, বাগেরহাট জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অমিত রায়, চলচ্চিত্র অভিনেতা মো. রিয়াজ খান প্রমুখ। অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে স্বাগত বক্তব্য রাখেন শিকদার বাড়ি দুর্গাপূজা উৎসবের আয়োজক বিশিষ্ট শিল্পপতি লিটন শিকদার। এ বছর ৪৫১টি দেব-দেবীর প্রতিমা নিয়ে বাগেরহাটের শিকদার বাড়িতে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আয়োজনের সমারোহ সর্বাধিক প্রতিমার ও আধুনিকতার দিক দিয়ে এ বছর ব্যক্তিগত উদ্যোগে অনুষ্ঠিত শিকদার বাড়ির দুগাপূজা দক্ষিণ এশিয়ার সর্ব বৃহৎ পূজামণ্ডপ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। বাগেরহাট জেলায় এ বছর ৫৮৭টি পূজামণ্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা হচ্ছে। শারদীয় দুর্গোৎসবকে ঘিরে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে এক ধরনের উৎসব বিরাজ করছে। সোমবার ষষ্ঠীপূজার মধ্য দিয়ে শুরু হলো ৪ দিনব্যাপি শারদীয় দুর্গা উৎসব। শেষ হবে ২২ অক্টোবর বির্সজনের মধ্য দিয়ে। এই মণ্ডপে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের হুগলি থেকে আসা দর্শনার্থী অনিল দেব নাথ (৬৫) বলেন, এত সংখ্যক প্রতিমা কখনও দেখিনি। অনেক আনন্দ ও অনেক ভাল লাগছে। আমার মনে হয় ব্যক্তি উদ্যোগে এই পূজামণ্ডপটি বিশ্বসেরা। অপর এক দর্শানার্থী কনিকা রানী মন্ডল বলেন, চট্টগ্রাম থেকে বেড়াতে এসে এই পূজামণ্ডপ দেখে আমি গর্বিত। যারা আয়োজন করছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। এত বড় আয়োজনে ৪৫১টি দেব-দেবীর প্রতিমা দিয়ে তৈরি মণ্ডপ আমি আগে কখনও দেখিনি। কেউ দেখেছে তাও শুনিনি। বাগেরহাটের হাকিমপুর শিকদার বাড়ির দুর্গা পূজামণ্ডপের আয়োজক ডা. দুলাল কৃষ্ণ শিকদার জানান ব্যক্তি উদ্যোগে দক্ষিণ এশিয়ার সর্ব বৃহৎ দুর্গাপূজা বলে তিনি দাবি করেন। তিনি বলেন, দুর্গাপূজার শুরু থেকেই এলাকার মানুষের উৎসাহ ও সহযোগিতা পেয়ে আসছি। তাই এ বছর পূজামণ্ডপে ৪৫১টি প্রতিমা স্থাপন করেছি। অনেক শ্রেণি পেশার মানুষ আমাদের বাড়িতে পূজা দেখতে আসে। এ বছর মণ্ডপে জাকজমকপূর্ণ পরিবেশে শারদীয় দুর্গোৎসব উপভোগ করার জন্য এখন থেকেই আসতে শুরু করেছে দর্শনার্থীরা। অনেকে পরিবার পরিজন নিয়ে আসছেন পূজামণ্ডপে।শওকত আলী বাবু/এসএস/পিআর
Advertisement