জাতীয়

রফতানিতে চামড়াকে ছাড়িয়ে দ্বিতীয় স্থানে পাট খাত

দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারের চাহিদা বিবেচনায় পাট চাষীদের উদ্বুদ্ধকরণের পাশাপাশি পাট শিল্পের সম্প্রসারণে সবধরনের সহায়তা করবে সরকার। পাটের ন্যায্যমূল্য নির্ধারণ, পাট ক্রয়-বিক্রয় সহজীকরণের জন্য এসএমএস ভিত্তিক পাট ক্রয়-বিক্রয় ব্যবস্থা, কাঁচা পাট ও বহুমুখী পাটজাত পণ্যের উৎপাদন বৃদ্ধি, পাটজাত পণ্য রফতানিতে প্রনোদনা ও অভ্যন্তরীণ ব্যবহার বৃদ্ধি ইত্যাদি ক্ষেত্রে বর্তমান সরকার ব্যাপক ভূমিকা রাখতে সক্ষম হয়েছে।

Advertisement

এসব কার্যকর পদক্ষেপের কারণে চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথম দশ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) পাট ও পাটজাত পণ্য রফতানি করে বাংলাদেশ ৭৯ কোটি ১৩ লাখ ডলার আয় করেছে। যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ১৪ শতাংশ বেশি। আর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৭ শতাংশ বেশি। আর এর মধ্য দিয়ে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের রফতানি বাণিজ্যে চামড়াকে ছাড়িয়ে দ্বিতীয় স্থান দখল করে নিল পাট খাত।

রোববার (১৭ মে) বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধকল্পে সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটিকালীন বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় এবং এর অধীন দফতর/সংস্থাসমূহের কার্যক্রম পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় এসব কথা জানানো হয়। বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

সভায় বস্ত্র ও পাট সচিব লোকমান হোসেন মিয়া সভাপতিত্ব করেন। সভায় মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আবুল কালাম আজদ, আবু বকরসহ এ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন দফতর/সংস্থার প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন।

Advertisement

সভায় জানানো হয়, সরকার মানসম্মত পাটের উৎপাদন বৃদ্ধি ও পাটবীজ উৎপাদনে স্বয়ম্ভরতা অর্জনের লক্ষ্যে পাট অধিদফতরের আওতায় ‘উন্নত প্রযুক্তি নির্ভর পাট ও পাটবীজ উৎপাদন এবং সম্প্রসারণ’ শীর্ষক প্রকল্পটি জুলাই ২০১৮ থেকে মার্চ ২০২৩ মেয়াদে বাস্তবায়ন করছে। প্রকল্পটি দেশের ৪৬টি জেলার ২৩০টি উপজেলায় বাস্তবায়িত হচ্ছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে পাটচাষের উন্নত কলাকৌশল সম্পর্কে চাষীদেন প্রশিক্ষিত করা এবং সর্বিকভাবে গুণগত মানসম্মত পাট ও পাটবীজ উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য কৃষকদের ৩৯০ মেট্রিক টন পাট বীজ বিনামূল্যে বিতরণসহ সবধরণের সহায়তা অব্যহত রয়েছে।

গত ২৬ এপ্রিল থেকে এ পর্যন্ত বিজেএমসি’র মিলগুলোতে ১ হাজার ৫৭৪ মেট্রিক টন পাটপণ্য উৎপাদিত হয়েছে। যার মূল্য প্রায় ২৭ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। আর ২৬ মার্চের পর থেকে এ পর্যন্ত দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে সর্বমোট ১৯০ কোটি টাকার পাটপণ্য বিক্রির আদেশ জারি করা হয়েছে।

বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ইশতেহারে তৈরি পোশাক ও বস্ত্রশিল্প খাতকে আরও শক্তিশালী, নিরাপদ ও প্রতিযোগিতা সক্ষম করে গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়েছে। সরকারের এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য দেশের তৈরি পোশাক ও বস্ত্র শিল্পের ‘পোষক কর্তৃপক্ষ’ হিসেবে বস্ত্র অধিদফতর তথা বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় কাজ করছে। করোনাকালীন সময়ে বস্ত্র অধিদফতর ২৯৬টি যন্ত্রপাতি/যন্ত্রাংশ ছাড়করণের সুপারিশ, চারটি আইপি জারির সুপারিশ নিষ্পত্তি করা হয়েছে।

করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) পরিস্থিতির কারণে তাঁতিদের সম্ভাব্য ক্ষতির মূল্যায়ণ এবং এই ক্ষতি উত্তরণে কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে। তাঁতিদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে চলতি মূলধন সরবরাহ এবং তাঁতের আধুনিকায়ন প্রকল্পের আওতায় তাঁতিদের শতকরা ৫ ভাগ সুদে ঋণ প্রদানের লক্ষ্যে ৩০০ ক্ষতিগ্রস্থ তাঁতিদের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত প্রান্তিক তাঁতিদের ত্রাণ বা আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।

Advertisement

এছাড়াও, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের অওতাধীন দফতর/সংস্থার মাধ্যমে বাস্তবায়িত প্রকল্পসমূহ সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নের জন্য প্রকল্পসমূহকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তিনটি ভাগে ভাগ করে বাস্তবায়ন কার্যক্রম চলমান রাখার জন্য অর্থ বরাদ্দ নিশ্চিত করা হয়েছে।

বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী মন্ত্রণালয়ের কর্মকাণ্ড সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য দিকনির্দেশনা প্রদান করছেন বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

এমইউএইচ/এমএফ/এমকেএইচ