ধর্ম

ফাতেমা রানীর তীর্থোৎসব শুরু ২৯ অক্টোবর

ক্যাথলিক খ্রীষ্টানদের বৃহত্তর ময়মনসিংহে একমাত্র তীর্থকেন্দ্র শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার বারোমারী সাধু লিওর ধর্মপল্লীতে প্রতিবছরের ন্যায় এবারও দুই দিনব্যাপী ‘ফাতেমা রানীর তীর্থোৎসব’ অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৯ ও ৩০ অক্টোবর। খ্রীষ্টভক্তদের এ তীর্থোৎসবকে ঘিরে পাহাড়ি জনপদে এখন নানা আয়োজন আর ব্যস্ততায় উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে।তীর্থস্থানে মা-মারিয়ার ৪৫ ফুট উঁচু নতুন মূর্তির ভাস্কর্য স্থাপন করা হয়েছে। সম্প্রতি বারোমারী ধর্মপল্লী মিলনায়তনে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, প্রশাসন, পুলিশ, সাংবাদিক ও সকল ধর্মের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে আয়োজক কমিটি এক বিশেষ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় তীর্থোৎসবের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়।এ বিষয়ে বারোমারী ধর্মপল্লীর সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ জেংচাম বলেন, প্রতিবছর পৃথক মূল সুরের ওপর ভিত্তি করে এবারও তীর্থোৎসবের মূলসুর ঠিক করা হয়েছে- ‘শান্তি, মিলন ও ভালবাসার উৎস ফাতেমা রাণী মা-মারীয়া’।তিনি আরো বলেন, দিন দিন এই তীর্থ স্থানে তীর্থযাত্রীর সংখ্যা বেড়েই চলছে। এ বছর প্রায় ৫০ হাজার খ্রীষ্টভক্ত তীর্থযাত্রায় অংশগ্রহণ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। এবার প্রায় ৭-৮টি দেশ থেকে তীর্থযাত্রীরা আসার কথা রয়েছে। এ উপলক্ষে নিরাপত্তা প্রদানে র‌্যাবের পাশাপাশি পুলিশ, বিজিবি, আনসার-ভিডিপি, গ্রামপুলিশ ও নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক দল সার্বক্ষণিক নিরাপত্তায় নিয়েজিত থাকবেন।তীর্থ উদযাপন কমিটি সূত্রে জানা গেছে, আগামী ২৯ অক্টোবর বৃহস্পতিবার বিকেল তিনটায় পাপ স্বীকার এবং খ্রীষ্টযাগের (বিশেষ প্রার্থনা) মধ্যদিয়ে শুরু হবে দুই দিনব্যাপী ফাতেমা রানীর তীর্থোৎসব। ৩০ অক্টোবর শুক্রবার সকালে জীবন্ত ক্রুশের পথ ও মহা খ্রীষ্টযাগের মধ্যদিয়ে তীর্থোৎসবের সমাপ্তি হবে। সমাজ কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট প্রমোদ মানকিন তীর্থোৎসবের সমাপনীতে উপস্থিত থাকবেন বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা।তীর্থোৎসব উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক পালপুরোহিত রেভারেন্ট ফাদার মনিন্দ্র এম চিরান জানান, ময়মনসিংহ ধর্মপ্রদেশের খ্রীষ্ট ধর্মাবলম্বীগণ ‘মা মারিয়ার’ প্রতি অশেষ ভক্তি ও শ্রদ্ধা প্রদর্শনের জন্য ১৯৯৮ সালে শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার বারোমারী সাধু লিওর ধর্মপল্লীতে পর্তুগালের ফাতেমা নগরের আদলে ও অনুকরণে ‘ফাতেমা রাণীর তীর্থস্থান’ স্থাপন করা হয়। সেই থেকে প্রতিবছর ভিন্ন ভিন্ন মূল সুরের ওপর ভিত্তি করে অক্টোবর মাসের শেষ বৃহস্পতি ও শুক্রবার দুই দিনব্যাপী তীর্থ উৎসব পালিত হয়ে আসছে।নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফসিহুর রহমান বলেন, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শারদীয় দুর্গোৎসবের পরপরই বারোমারী ধর্মপল্লীতে অনুষ্ঠিত হবে খ্রীষ্ট সম্প্রদায়ের দুই দিনব্যাপী তীর্থোৎসব। এ তীর্থোৎসবে অনেক বিদেশিরাও আসবেন। এ জন্য পুরো এলাকায় বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি র‌্যাব, বিজিবি, দমকল বাহিনী, আনসার, ভিডিপি, গ্রাম পুলিশ, সাদা পোষাকে আইন-শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরাও সার্বক্ষণিক নিরাপত্তায় নিয়েজিত থাকবেন।হাকিম বাবুল/আরএস

Advertisement