করোনাভাইরাস ও রোজার প্রভাবে গত এক মাসে ১৫টি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১০টির। সরকারি প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
Advertisement
গত এক মাসে দাম বাড়ার তালিকায় রয়েছে- আটা, ময়দা, বোতলজাত সয়াবিন তেল, মসুর ডাল, শুকনা মরিচ, হলুদ, জিরা, দারুচিনি, এলাচ, ধনে, ইলিশ মাছ, গরুর মাংস, মুরগি, ডিপ্লোমা গুঁড়া দুধ এবং ডিম। অপরদিকে দাম কমার তালিকায় রয়েছে- চাল, লুজ সয়াবিন তেল, পাম অয়েল, মুগ ডাল, ছোলা, পেঁয়াজ, রসুন, আদা, চিনি এবং খেজুর।
রাজধানীর শাহজাহানপুর, মালিবাগ বাজার, কারওয়ান বাজার, বাদামতলী বাজার, সূত্রাপুর বাজার, শ্যাম বাজার, কচুক্ষেত বাজার, মৌলভীবাজার, মহাখালী বাজার, উত্তরা আজমপুর বাজার, রহমতগঞ্জ বাজার, রামপুরা এবং মিরপুর-১ নম্বর বাজারের পণ্যের দামের তথ্য নিয়ে এই প্রতিবেদন তৈরি করেছে টিসিবি।
টিসিবির তথ্য অনুযায়ী, এক মাসে নাজির, মিনিকেট, পাইজাম, লতা, স্বর্ণসহ সব ধরনের চিকন, মাঝারি ও মোটা চালের দাম কমেছে। এর মধ্যে চিকন চাল নাজির ও মিনিকেটের দাম কমেছে ৬ দশমিক ২৫ শতাংশ। মাঝারি মানের পাইজাম ও লতা চালের দাম কমেছে ১২ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ। আর গরিবের মোটা চালের দাম কমেছে ৮ দশমিক ৭০ শতাংশ।
Advertisement
সব ধরনের চালের দাম কমলেও গত এক মাসে বেড়েছে আটা ও ময়দার দাম। প্যাকেট আটার দাম বেড়েছে ২ দশমিক ৬৭ শতাংশ। তবে খোলা আটার দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। আর প্যাকেট ময়দার দাম ২ দশমিক ১৫ শতাংশ এবং খোলা ময়দার দাম ৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ বেড়েছে।
ভোজ্য তেলের দামের বিষয়ে টিসিবি জানিয়েছ, এক লিটারের বোতলের সয়াবিন তেলের দাম মাসের ব্যবধানে বাড়লেও লুজ সয়াবিন তেল এবং সব ধরনের পাম অয়েলের দাম কমেছে। সয়াবিন তেলের এক লিটারের বোতলের দাম বেড়েছে ২ দশমিক ৩৮ শতাংশ। বিপরীতে লুজ সয়াবিন তেলের দাম কমেছে ৪ দশমিক ২৬ শতাংশ। আর লুজ পাম অয়েলের ৮ দশমিক ৭৮ শতাংশ এবং সুপার পাম অয়েলের ৫ দশমিক ৭৩ শতাংশ দাম কমেছে।
ভোজ্য তেলের মতো ডালের দামেও মিশ্র প্রবণতা রয়েছে। মসুর ডালের দাম বাড়লেও গত এক মাসে কমেছে ছোলা ও মুগ ডালের দাম। বড় দানার মসুর ডালের দাম ১৬ দশমিক ১৩ শতাংশ এবং মাঝারি দানা ২৩ দশমিক ৫৩ শতাংশ বেড়েছে। তবে অপরিবর্তিত রয়েছে ছোট দানার মসুর ডালের দাম। অপরদিকে মুগ ডালের ১৮ দশমিক ৫২ শতাংশ এবং ছোলার ৯ দশমিক ৬৮ শতাংশ দাম কমেছে।
মসলার দামের বিষয়ে টিসিবি জানিয়েছে, গত এক মাসে মসলা জাতীয় ৬টি পণ্যের দাম বেড়েছে বিপরীতে দাম কমেছে ৩টির। দাম কমা এই তিন পণ্যের মধ্যে রয়েছে পেঁয়াজ, রসুন ও আদা।
Advertisement
এর মধ্যে দেশি পেঁয়াজের ২২ দশমিক ৭৩ শতাংশ ও আমদানি করা পেঁয়াজের ১৫ শতাংশ দাম কমেছে। দেশি রসুনের দাম কমেছে ৪ দশমিক ৩৫ শতাংশ এবং আমদানি করা রসুনের ৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ। আর দেশি আদার ২৪ দশমিক ৪৪ শতাংশ এবং আমদানি করা আদার ৪৮ দশমিক ১৫ শতাংশ দাম কমেছে।
অপরদিকে দাম বাড়া মসলার মধ্যে দেশি শুকনা মরিচের ২২ দশমিক ২২ শতাংশ, আমদানি করা শুকনা মরিচের ১৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ, আমদানি করা হলুদের ১০ দশমিক ৫৩ শতাংশ, জিরার ৩৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ, দারুচিনির ৩ দশমিক ৫৩ শতাংশ, এলাচের ৪ শতাংশ এবং ধনের ৩ দশমিক ৮৫ শতাংশ দাম বেড়েছে।
টিসিবির তথ্য অনুযায়ী, গত এক মাসে বেড়েছে মুরগি ও গরুর মাংসের দাম। সেই সঙ্গে বেড়েছে ইলিশ মাছের দাম। এর মধ্যে গরুর মাংসের দাম বেড়েছে ২ দশমিক ৬১ শতাংশ। আর দেশি মুরগির ২৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ এবং ব্রয়লারের ৬৮ দশমিক ৪২ শতাংশ দাম বেড়েছে। এছাড়া ইলিশ মাছের দাম বেড়েছে ২৯ দশমিক ৪১ শতাংশ। তবে খাসির মাংস ও রুই মাছের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
বাকি পণ্যের মধ্যে চিনির ৭ দশমিক ৪১ শতাংশ এবং খেজুরের ৫ দশমিক ৪৫ শতাংশ দাম কমেছে। অপরদিকে ফার্মের ডিমের দাম বেড়েছে ১০ দশমিক ২০ শতাংশ। এছাড়া সব ধরনের গুঁড়া দুধের দাম অপরিবর্তিত থাকলেও ডিল্পোমা (নিউজিল্যান্ড) গুঁড়া দুধের দাম বেড়েছে দশমিক ৮৩ শতাংশ।
এমএএস/এফআর/এমএস