করোনাভাইরাস সংক্রমণের সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে রাজধানী ঢাকা। ঢাকায় প্রাণঘাতী এ ভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বারবার বলছেন, আপনার সুরক্ষা আপনার হাতে।
Advertisement
তারা স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মেনে চলা ও জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘরে অবস্থান করার নিয়মিত পরামর্শ দিলেও রাজধানীর বিভিন্ন পাড়া-মহল্লার অলিগলি থেকে শুরু করে রাজপথে দিনের বেলায় প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে অসংখ্য মানুষ রাস্তায় নেমে আসছে। চলাচল করছে বিপুলসংখ্যক যানবাহন। কোথাও কোথাও মানুষের চেয়ে রাস্তাঘাটে যানবাহন বেশি দেখা যাচ্ছে। এ নিয়ে শঙ্কিত স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
দিনের বেলা নির্দেশনা না মানা হলেও রাতের চিত্র একেবারেই বিপরীত। স্বাস্থ্য অধিদফতরের সংক্রামক ব্যাধি আইনের আলোকে রাত ৮টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত অত্যাবশ্যক প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের হওয়ার ব্যাপারে যে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে, তা পুরোপুরি পালন করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (১৪ মে) রাতে রাজধানীর আজিমপুর, নিউমার্কেট, সায়েন্স ল্যাবরেটরি, ধানমন্ডি, হাতিরপুল ও শাহবাগ এলাকা পরিদর্শনকালে দেখা যায়, দিনের তুলনায় রাতে রাস্তাঘাটে মানুষ ও যানবাহন চলাচল একেবারেই সীমিত। চারদিকে সুনসান নীরবতা। হঠাৎ দ্রুতগামী ট্রাক নীরবতা ভেঙে ছুটে আসছে। অসহায় ভাসমান কিছু মানুষ ছাড়া রাস্তাঘাটে তেমন কেউ নেই। মার্কেট এলাকাগুলোতে নিরাপত্তারক্ষী ছাড়া কাউকে চোখে পড়েনি।
Advertisement
অ্যালিফ্যান্ট রোডে বন্ধ থাকা একটি জুতার মার্কেটের গেটে নিউমার্কেট থানা পুলিশের একটি নোটিশ ঝুলছে। তাতে লেখা রয়েছে- ‘জীবন না প্রয়োজন-কোনটি বড়? সিদ্ধান্ত আপনার। নিজে বাঁচুন ,অপরজনকে বাঁচতে দিন। ঘরে থাকুন, করোনামুক্ত থাকুন।’
হাতিরপুল কাঁচাবাজারে সুনসান নীরবতা। একটি দোকানের সামনে লাইট জ্বলছে। সেখানে অল্প বয়সের একটি গরু বেঁধে রাখতে দেখা যায়। হয়তো আগামীকাল জবাই করে বিক্রি করার জন্য এটি রাখা হয়েছে। ঢাকা কলেজের সামনে একটি মার্কেটে বড় কার্গো থেকে মালামাল নামানো হচ্ছে।
১০ দিন পরেই ঈদ। অন্যান্য বছরে এই সময়ে মার্কেটগুলোতে হাজার হাজার নারী-পুরুষ শিশুদের পদচারণায় মুখরিত থাকে। রমজানের ঈদ উপলক্ষে সবাই সাধ্যমতো কেনাকাটা করে। দোকানির দম ফেলার ফুরসত থাকে না। মধ্যরাত পর্যন্ত বেচাকেনা চলে।
কিন্তু এবার করোনাভাইরাস থমকে দিয়েছে সব আনন্দ। সরকারিভাবে সীমিতভাবে ঈদ উপলক্ষে মার্কেট খোলার অনুমতি দেয়া হলেও রাজধানীর অধিকাংশ মার্কেট করোনাভাইরাস আতঙ্কে বন্ধ রাখছে। ঈদ সামনে রেখে ব্যবসায়ীরা কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছেন। এখন মার্কেট বন্ধ থাকায় তারা চোখেমুখে অন্ধকার দেখছেন। গুঞ্জন রয়েছে অনেক মালিক ঈদ উপলক্ষে দোকান খুললে বেতন-বোনাস দিতে হবে এ কারণে খুলছেন না। ঈদের পর পরিস্থিতি বুঝে দোকান খুলবেন বলে জানিয়েছেন তারা।
Advertisement
এমইউ/এমএসএইচ/এমকেএইচ