দেশজুড়ে

কুড়িগ্রামে করোনার মাঝে ঘরে ঘরে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল

কুড়িগ্রামে করোনার সাথে মাত্রাতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল নিয়ে বিপাকে পড়েছেন গ্রাহকরা। কর্তৃপক্ষ বলছে, মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে ঘরে বসেই এসব বিল করা হয়েছে। পরবর্তীতে সমন্বয় করার আশ্বাস দিয়েছেন তারা। সরেজমিনে দেখা যায়, কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের ডাংরারহাট বাজারের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী রবিউল ইসলাম। কয়েক বছর ধরে বাজারে মোবাইল সার্ভিসের ব্যবসা করছেন। মার্চ মাসে এই দোকানে বিদ্যুতের মিটার রিডিং ছিল ৮০ ইউনিট। চার্জসহ বিল পরিশোধ করেন ৮৮৪ টাকা। এবার করোনার কারণে লকডাউন থাকায় ভালো করে ব্যবসা করতে না পারলেও বিদ্যুৎ বিল নিয়ে পড়েছেন দুশ্চিন্তায়।

Advertisement

এই দোকানে এপ্রিল মাসে মিটারে ২১১৫ ইউনিটে ২৩ হাজার ৯৩১ টাকা চার্জসহ ২৫ হাজার ২৩ টাকা বিদ্যুৎ বিল এসেছে। অথচ মিটার রিডিং বর্তমানে রয়েছে ৬৭৪ ইউনিট।

বাজারের পাশের বাসিন্দা বুলবুলি আক্তার বাড়িতে একটি লাইট, একটি ছোট ফ্যান চালিয়ে মার্চ মাসে ৩০০ টাকা বিল দিলেও এপ্রিল মাসে তার বিল এসেছে ৩ হাজার টাকা। অথচ মোবাইলে এসএমএসে তার মিটার বিল এসেছে ৪০০ টাকা। এমন হাজারো অভিযোগ রাজারহাট উপজেলার পল্লী বিদ্যুৎ সুবিধাভোগী শত শত গ্রাহকের।

করোনার অজুহাতে পল্লীবিদ্যুৎ কর্মকর্তাদের অফিসে বসেই বিল করায় বিদ্যুতের অতিরিক্ত বিল আসায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন গ্রাহকরা। বিল পরিশোধের শেষ তারিখ পার করে বিলের কাগজ দেয়ায় নিয়মিতভাবে জরিমানা দেয়ার অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা। দারিদ্রপীড়িত জেলার মানুষের বিদ্যুৎবিল এখন গলার কাঁটা হিসেবে দেখা দিয়েছে।

Advertisement

মিটার রিডিং না দেখে মনগড়া বিল তৈরি করায় রিডারদের গাফিলতির কারণে গ্রাহকদের বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে।

বরিউল ইসলাম বলেন, ‘আমি এই ছোট ব্যবসা করেই সংসার চালাই। এপ্রিল মাসের ২৫ হাজার টাকা বিদ্যুৎবিল আসায় হতাশ হয়ে পড়েছি। বিল সংশোধন করতে গেলেও চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়। করোনার কারণে ব্যবসা বন্ধ অন্যদিকে বিদ্যুৎ বিল এতো আসায় এখন দুশ্চিন্তায় আছি। কীভাবে বিল শোধ করবো কোনো উপায় দেখছি না।’

মজিবর, শমসের আলী, আকবর আলীসহ অনেক গ্রাহক বলেন, নদীভাঙন ডাংরারহাট এলাকায় অভাবি এসব মানুষকে করোনার কারণে জীবন-জীবিকা নির্বাহে হিমশিম খেতে হচ্ছে। একবেলা খাবার জুটলেও পরের বেলা কি খাবে এমন চিন্তায় দিন কাটছে। সেখানে বিদ্যুৎ বিভাগের এমন উদাসীনতার কারণে হাজার হাজার টাকা জরিমানা গুণতে হবে গ্রাহকদের। বিদ্যুৎ বিভাগের এমন কর্মকাণ্ডে অনেক গ্রাহকই সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার মনস্থির করেছেন।

এ বিষয়ে কুড়িগ্রাম-লালমনিরহাট পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপক সাইফুল আলম গরমিলের কথা স্বীকার করে বলেন, এটা হেড অফিস এবং মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে হয়েছে। চলতি মাসের মিটার রিডিং এনে সমন্বয় করা হবে বলে জানান।

Advertisement

নাজমুল/এমএএস/পিআর