শেয়ারবাজারে বহু আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দেয়া অধ্যাপক ড. এম খায়রুল হোসেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান পদ থেকে বিদায় নিয়েছেন।
Advertisement
টানা ৯ বছর দায়িত্ব পালনের পর বৃহস্পতিবার (১৪ মে) তিনি বিদায় নেন। তবে সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটি চলায় নিয়ন্ত্রক সংস্থা থেকে তাকে আনুষ্ঠানিক বিদায় সংবর্ধনা দেয়া হয়নি।
২০১০ সালে শেয়ারবাজারের ধসের কারণ অনুসন্ধানে খন্দকার ইব্রাহিম খালেদের নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত কমিটির সুপারিশে বিএসইসিকে নতুন করে ঢেলে সাজায় সরকার। সে সময় ২০১১ সালের ২৩ আগস্ট বিএসইসিতে চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স বিভাগে অধ্যাপক খায়রুল হোসেন।
প্রথমবার তিন বছরের জন্য খায়রুল হোসেনকে নিয়োগ দেয়া হয়। যা শেষ হওয়ার আগেই পুনঃনিয়োগ পান তিনি। তবে এ ক্ষেত্রে তিনি চার বছরের জন্য নিয়োগ পান। দ্বিতীয় দফায় তার চার বছরের জন্য নিয়োগ পাওয়ার কারণ ছিল ওই নিয়োগের আগেই কমিশনের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের মেয়াদ তিন বছর থেকে বৃদ্ধি করে চার বছর করা হয়।
Advertisement
দ্বিতীয় দফায় ২০১৪ সালের ১০ এপ্রিল চার বছরের চুক্তিতে বিএসইসির চেয়ারম্যান করা হয় খায়রুল হোসেনকে। তবে তিনি বিএসইসিতে যোগদান করেন ওই বছরের ১৫ মে। সে হিসাবে দুই দফায় বিএসইসির চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পাওয়া খায়রুল হোসেনর সাত বছর পূর্ণ হয় ২০১৮ সালের ১৪ মে।
তবে বিএসইসির চেয়ারম্যান হিসেবে খায়রুল হোসেনের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই আইন লঙ্ঘন করে তাকে আরও দুই বছরের জন্য বিএসইসির চেয়ারম্যান করা হয়। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন আইন, ১৯৯৩ সালের ৫ এর ৬ উপধারা অনুযায়ী, বিএসইসির চেয়ারম্যান ও কমিশনাররা শুধুমাত্র একটি মাত্র মেয়াদের জন্য পুনঃনিয়োগের যোগ্য হইবেন।
খায়রুল হোসেনের এ পুনঃনিয়োগ নিয়ে বেশ সমালোচনা হয়। এছাড়া একের পর এক দুর্বল কোম্পানির প্রথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) অনুমোদন দিয়েও ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন খায়রুল হোসেন। তার পদত্যাগের দাবিতে মতিঝিলের রাস্তায় নেমে দিনের পর দিন বিক্ষোভ ও মানববন্ধও করেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা।
বিনিয়োগকারীদের বিক্ষোভ ও শেয়ারবাজারের মন্দা অবস্থায় এক পর্যায়ে খায়রুল হোসেন পদত্যাগ করেছেন এমন গুঞ্জনও ছড়িয়ে পড়ে। তবে সব আলোচনা-সমালোচনা দূরে ঠেলে বিএসইসির চেয়ারম্যান পদে থেকে সরে যান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এ অধ্যাপক। অবশ্য চুক্তিভিত্তিক মেয়াদ শেষ হওয়ায় আজ তিনি বিএসইসি থেকে বিদায় নিয়েছেন। এর মাধ্যমে বিএসইসিতে খায়রুল হোসেনের অধ্যায় শেষ হলো। বিএসইসির চেয়ারম্যান পদ থেকে বিদায় নেয়া খায়রুল হোসেন এখন তার আগের কর্মস্থলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে যাবেন।
Advertisement
এদিকে দীর্ঘ ৯ বছরের কর্মস্থল ছেড়ে গেলেও খায়রুল হোসেনকে আজ আনু্ষ্ঠানিক কোনো বিদায় সংবর্ধনা দেয়া হয়নি।
এ বিষয়ে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সাইফুর রহমান বলেন, এ পরিস্থিতিতে বিদায় সংবর্ধনা দেয়া সম্ভব নয়। সামাজিক দূরত্ব মেনে সবকিছু করতে হচ্ছে। পরবর্তীতে বিদায় সংবর্ধনা দেয়া হবে কি না, নতুন কমিশন এসে সেই সিদ্ধান্ত নিবেন।
এমএএস/এএইচ/পিআর