রূপগঞ্জের তারাব পৌরসভার ক্ষতবিক্ষত সড়ক দিয়ে এখন যেন হাঁটাও দায়। বিছানো ইট ভেঙে খানখান। এখন মাটিও সরে যাচ্ছে। ফলে চলাচলে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন এলাকার প্রায় ৫০ হাজার মানুষ। এই করুণ হাল পৌরসভার তারাব বিশ্বরোড থেকে মোড়গাকুল বাগপাড়া মসজিদ পর্যন্ত।সরেজমিনে দেখা গেছে, কাঁদা মাটি আর সুড়কির গড়াগড়ি। এ সড়কে হেঁটে চলতে গেলেও সাবধানতা অবলম্বন করতে হয়। হাঁটতে গেলে ইটের খোয়ার সঙ্গে লেগে হোঁচট খেয়ে পড়েন অনেকে। সড়কের কোথাও কোথাও এত বড় গর্ত যে চলতে গিয়ে অনেক সময় যানবাহনও উল্টে যায়। এছাড়া কিছু অংশ ডুবে আছে পানিতে। সড়কের কোথাও কোথাও কচুরি পানাও গাজিয়েছে। প্রায় এক কিলোমিটার দীর্ঘ এ সড়কের বিভিন্ন স্থানে সৃষ্টি হয়েছে ছোট-বড় গর্ত। যানবাহন চলাচলের সময় সড়কের গর্তে জমা কাঁদা-পানি ছিটকে পড়ে নষ্ট হচ্ছে পথচারীদের পোশাক। সড়কের কমিশনার অফিসের মোড়, দীঘিবরাব আবু সাঈদ মার্কেট, বাগপাড়া মাদ্রাসা এলাকায় খানাখন্দ বেশি। কিছু স্থানে হেড়িংবনের ইট উঠে কাঁদা মাটি হয়ে গেছে আবার কোথাও পিচঢালাই উঠে ইটও নেই। চলাচলে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন স্থানীয় লোকজন।স্থানীয় হাজী এখলাস উদ্দিন ভুইয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. সহিদুল্ললাহ জাগো নিউজকে বলেন, সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত ছিল। এ সড়কে হাঁটতে যেমন কষ্টের শেষ নেই, তেমনি রিকশা বা অটোরিকশায় চড়লেও কষ্ট পেতে হয়। ঝাঁকুনির ভয়ে নারীরা গাড়িতে করে চলাচল করতে চান না। অনেক গর্ভবতীর গর্ভপাত হয়েছে বলেও জানান স্থানীয় এক চিকিৎসক গোলজার হোসেন। রাস্তায় চলতে গিয়ে স্থানীয় এক শিল্প প্রতিষ্ঠানের হিসাবরক্ষক জুয়েল আহম্মেদকে মেরুদণ্ডে ব্যাথা পেয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে।সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক মনির হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, সড়কের এক কিলোমিটার অংশ বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। অনেক সময় বড়-বড় গর্তে বৃষ্টির পানি জমে থাকলে তা বোঝা যায় না। অটো কিংবা রিকশা উল্টে যায় রাস্তায়। তারাব পৌরসভার মেয়র শফিকুল ইসলাম চৌধুরী জাগো নিউজকে বলেন, সড়কটির সংস্কার কাজ অচিরেই হবে। এলজিইডির রূপগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী নাসির আহম্মেদ জাগো নিউজকে বলেন, ভারি বৃষ্টি ও বন্যার পানিতে ডুবে সড়কটির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে তিন দফা বন্যায় উপজেলার সব গ্রামীণ সড়ক কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত এসব সড়কের একটি তালিকা তৈরি করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলোতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সংস্কার কাজ শুরু করা হবে।মুড়াপাড়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র নুরে আলম জাগো নিউজকে বলেন, ভাঙা সড়কের কারণে রিকশা ও অটোরিকশায় বাড়তি ভাড়া দিতে হয়। নাঈম ভুইয়া টেক্সটাইলের আবু লতিফ ক্ষোভ প্রকাশ করে জাগো নিউজকে বলেন, রাস্তা দিন দিন খারাপ হচ্ছে। কিন্তু কর্তৃপক্ষ কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। স্থানীয় লোকজন জানান, এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন তারাব শিল্পাঞ্চলের অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ যাতায়াত করেন। ভাঙা সড়কের কারণে তাদের প্রতিনিয়ত দুর্ভোগ পোহাতে হয়। ১০ মিনিটের পথ যেতে সময় লাগছে আধা ঘণ্টা। আর এ সুযোগে দ্বিগুণ ভাড়া আদায় করেন সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও রিকশাচালকরা।মীর আব্দুল আলীম/এমজেড/এমএস
Advertisement