করোনাভাইরাস মহামারির তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড গোটা বিশ্ব। ইতোমধ্যেই প্রায় তিন লাখ মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে ভয়ঙ্কর এই ভাইরাস, আক্রান্ত হয়েছেন ৪২ লাখেরও বেশি। শুধু প্রাণহানিই নয়, করোনার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে বিশ্ব অর্থনীতিতেও। উন্নত দেশগুলো এই সংকট কোনওভাবে কাটিয়ে উঠতে পারলেও বড় সহায়তা ছাড়া দরিদ্র দেশগুলোর জন্য এই বন্ধুর পথ অতিক্রম একপ্রকার অসম্ভব। এ কারণে নিম্নআয়ের দেশগুলোর ঋণের বোঝা মওকুফ করতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ও বিশ্বব্যাংকের কাছে লিখিত অনুরোধ জানিয়েছেন বিশ্বের তিন শতাধিক আইনপ্রণেতা।
Advertisement
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স ও মিনেসোটার ডেমোক্রেট নেতা ইলহাম ওমরের নেতৃত্বে এ চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন ব্রিটেনের লেবার পার্টির সাবেক নেতা জেরেমি করবিন, আর্জেন্টাইন আইনপ্রণেতা কার্লোস মেনেমসহ ছয়টি মহাদেশের দুই ডজন দেশের নেতারা।
বার্নি স্যান্ডার্স বলেছেন, এমন সংকটকালে দরিদ্র দেশগুলোর প্রত্যেকটি পয়সা ‘অস্থিতিশীল ঋণ’ পরিশোধের চেয়ে তাদের লোকজনের সেবায় খরচ করা বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি বলেন, ‘বিশ্বব্যাংক, আইএমএফসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক আর্থিক সংস্থা অকল্পনীয় দারিদ্র্য ও ক্ষুধা বৃদ্ধি এবং লাখ লাখ মানুষের মৃত্যুর হুমকি তৈরি করা রোগ প্রতিরোধে অন্তত দরিদ্র দেশগুলোর ঋণ মওকুফ করতে পারে।
Advertisement
করোনা মহামারির কারণে গত মাসে বিশ্বের দরিদ্রতম ২৫টি দেশের ঋণের কিস্তি ছয় মাসের জন্য মওকুফ করার ঘোষণা দিয়েছে আইএমএফ। বিশ্বনেতারা এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানালেও বলেছেন, পরিস্থিতি মোকাবিলায় আরও পদক্ষেপ জরুরি।
বিশ্বব্যাংক বলছে, তারাও দরিদ্র দেশগুলোর সহায়তা বৃদ্ধির চেষ্টা করছে। তবে ঋণ মওকুফ করলে ক্রেডিট রেটিংয়ের ক্ষতি হতে পারে এবং সদস্য দেশগুলোকে কম খরচে তহবিল সহায়তার সক্ষমতাও কমে যেতে পারে বলে সতর্ক করেছে সংস্থাটি।
দাতাগোষ্ঠীর উদ্দেশে লেখা চিঠিতে বিশ্বনেতারা বলেছেন, দরিদ্র দেশগুলোর ঋণ সরাসরি মওকুফ করা দরকার, গত এপ্রিলে জি-২০ভুক্ত দেশগুলোর সিদ্ধান্ত মোতাবেক শুধু স্থগিত করলে খুব একটা সুফল মিলবে না।
তাদের মতে, ঋণ মওকুফ না করলে দরিদ্র দেশগুলো করোনাভাইরাস মোকাবিলায় সর্বাধিক গুরুত্ব দিতে পারবে না। এর ফলশ্রুতিতে বৈশ্বিক সরবরাহ ব্যবস্থায় বাধা ও অর্থনৈতিক সংকট চলতেই থাকবে।
Advertisement
এসময় আইএমএফ প্রধান ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা ও বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ডেভিড মালপাসকে নতুন এসডিএফ (স্পেশাল ড্রয়িং রাইটস, আইএমএফের মুদ্রা) হিসেবে কয়েক ট্রিলিয়ন ডলার ছাপানোর বিষয়ে সমর্থন জানানোরও অনুরোধ জানান বিভিন্ন দেশের আইনপ্রণেতারা।
সূত্র: রয়টার্স
কেএএ/জেআইএম