বৈশ্বিক মহামারি করোনায় যখন পুরো বিশ্ব স্থবির ঠিক তখনই শুরু হতে যাচ্ছে মুসলিম উম্মাহর রমজানে বিশেষ ইবাদত ইতেকাফ। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মসজিদগুলোতে পাঞ্জেগানা, জুমআ, তারাবিহ ও ইতেকাফে রয়েছে স্থগিতাদেশ। ধর্ম মন্ত্রণালয় শর্ত সাপেক্ষে বাংলাদেশের মসজিদগুলো সাধারণ মুসল্লিদের নামাজের জন্য উন্মুক্ত রাখার স্থগিতাদেশ উঠিয়ে নিয়েছে।
Advertisement
করোনার প্রাদুর্ভাবের মধ্য দিয়েই বৃহস্পতিবার (১৪ মে) ২০ রমজান ১৪৪১ হিজরি সন্ধ্যা থেকেই শুরু হবে রমজানের অনন্য ইবাদত ইতেকাফ। ইতেকাফকারীরা লাইলাতুল কদর তালাশে ইতেকাফ পালনে বৃহস্পতিবার ইফতারের আগেই মসজিদে অবস্থান নেবে।
রমজানে ইতেকাফ পালনের মূল উদ্দেশ্য হলো রহমত বরকত মাগফেরাত ও নাজাত লাভ করা। আল্লাহর চূড়ান্ত নৈকট্য অর্জনের অন্যতম মাধ্যম লাইলাতুল কদর অন্বেষণ করা। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি প্রতি বছর রমজানে ইতেকাফ করতেন।
কেননা আল্লাহ তাআলার নৈকট্য অর্জনে নিরবচ্ছিন্ন ইবাদাত বন্দেগিতে সময় কাটানো ও ইতেকাফ পালনের মাধ্যমেই লাইলাতুল ক্বদর প্রাপ্তির একমাত্র সুবর্ণ সুযোগ আসে। ইতেকাফ হচ্ছে নিজের নফসকে আল্লাহ তাআলার ইবাদতে আবদ্ধ করা ও তাঁর সঙ্গে বন্ধুত্ব করা। আর দুনিয়ার সব কিছু থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে আল্লাহর জিকির-আজকারের মাধ্যমে নিজের অন্তরকে দুনিয়াবী কাজ-কর্ম থেকে বিরত রাখা জরুরি।
Advertisement
রমজানের শেষ ১০ দিন ইতেকাফ করতে হয়। তাই ইতেকাফের রয়েছে কিছু প্রস্তুতি। ইতেকাফে বসলে রোজাদার কোনো ধরনের কথা-বার্তা, লেন-দেন, ব্যবসা-বানিজ্য, চাকরি-বাকরি কোনো কিছুতেই অংশগ্রহণ করতে পারে না। ইতেকাফের বিধি-নিষেধ সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা বলেন-وَلاَ تُبَاشِرُوهُنَّ وَأَنتُمْ عَاكِفُونَ فِي الْمَسَاجِدِ'তোমরা মসজিদে ইতিকাফ অবস্থায় তাদের সাথে (তোমাদের স্ত্রীদের) সাথে সঙ্গম করো না।' (সুরা বাকারা : আয়াত ১২৭)
>> ই’তিকাফে বসার আগে আবশ্যক করণীয়- পরিবারের ঈদের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা।- ফিতরা আদায়ের ব্যবস্থা করা।- পরিবারের ব্যয়ভার বহনের ব্যবস্থা করা।- মসজিদে ইফতার ও সাহরি পৌছানোর ব্যবস্থা করা।- দুনিয়াবি জরুরি সম্ভাব্য কাজের সমাধানের ব্যবস্থা করা।- পারিবারিক যাবতীয় প্রয়োজনীয় বিষয়াদির ব্যবস্থা করে যাওয়া।
পরিশেষে…ইতেকাফে বসার জন্য মসজিদে প্রবেশের আগেই প্রয়োজনীয় পারিবারিক সব সমস্যার সমাধানে সার্বিক ইন্তেজাম সম্পন্ন করা মুমিন মুসলমান রোজাদারের জন্য অত্যন্ত জরুরি।
উল্লেখ্য, এবার যারা ইতেকাফে বসবেন, তাদের নিজেদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও নিরাপত্তার বিষয়টির প্রতি যথাযথ গুরুত্বারোপ করাও জরুরি। বিশেষ করে বয়স্ক ও প্রবীণদের ইতেকাফে অংশগ্রহণ না করাই হবে উত্তম। ইতিমধ্যে মসজিদের মাইকেও এ ঘোষণা দেয়া হয়েছে।
Advertisement
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে নিরাপত্তা ও সুস্বাস্থ্যের সঙ্গে ইতেকাফে পালনের তাওফিক দান করুন। ইতেকাফের লক্ষ্য উদ্দেশ্য হাসিলের তাওফিক দান করুন। মহামারি করোনা থেকে হেফাজত করুন। আমিন।
এমএমএস/এমকেএইচ