করোনা রোগীদের চিকিৎসায় নিজেদের অক্সিজেন সরবরাহ শুরু করেছ আবুল খায়ের গ্রুপ। মঙ্গলবার (১২ মে) চট্টগ্রামের ফৌজদারহাটে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিসেস (বিআইটিআইডি) হাসপাতালে আনুষ্ঠানিকভাবে অক্সিজেন সিলিন্ডার সরবরাহের মাধ্যমে এ কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়।
Advertisement
এ সময় আবুল খায়ের গ্রুপের কর্মকর্তারা জানান, প্রথমে দুইশ সিলিন্ডার দেয়ার কথা থাকলেও আরও একশ বাড়িয়ে তিনশ করা হয়েছে। বিদেশ থেকে আমদানিকৃত এসব সিলিন্ডারের প্রতিটিতে এক দশমিক চার কিউবিক মিটার অক্সিজেন রয়েছে।
উল্লেখ্য, করোনা আক্রান্ত রোগীদের বাঁচাতে এগিয়ে এসেছে দেশের বৃহৎ শিল্প প্রতিষ্ঠান আবুল খায়ের গ্রুপ। প্রতিষ্ঠানটি করোনায় আক্রান্তদের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে অতি প্রয়োজনীয় অক্সিজেন সরবরাহের উদ্যোগ নেয়। এ জন্য গত ২ মে আবুল খায়ের গ্রুপের সঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদফতরের একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়। স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ এবং আবুল খায়ের গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শহীদ উল্লাহ চৌধুরী সমঝোতা স্বারকে স্বাক্ষর করেন। ওই সমঝোতা অনুযায়ী দুইশ সিলিন্ডার অক্সিজেন সররাহের কথা থাকলেও পরিস্থিতি বিবেচনায় আবুল খায়ের গ্রুপ আরও একশ বাড়িয়ে তা তিনশতে উন্নীত করে।
জানা গেছে, করোনায় আক্রান্তদের মধ্যে সংকটাপন্ন অবস্থায় অনেক রোগীর জীবন রক্ষায় প্রয়োজন হয় অক্সিজেন। সেই চিন্তা থেকে করোনা চিকিৎসায় নিজস্ব অক্সিজেন উৎপাদন ব্যবস্থা উন্মুক্ত করে আবুল খায়ের গ্রুপ। দেশের এ ক্রান্তিকালে আবুল খায়ের গ্রুপ নিজেরাই সব করোনা হাসপাতালে সরবরাহের জন্য বিশেষায়িত তিনশ অক্সিজেন সিলিন্ডার ক্রয় করে।
Advertisement
একটি সিলিন্ডারের অক্সিজেন শেষ হলে পুনরায় রিফিল করে দেয়া হবে। এজন্য একটি বিশেষ টিম গঠন করেছে প্রতিষ্ঠানটি। এছাড়া দেশে করোনা চিকিৎসায় যেসব হাসপাতাল নির্ধারণ করা হয়েছে, সেসব হাসপাতালের নিজস্ব বিশেষায়িত অক্সিজেন সিলিন্ডার রয়েছে, তারাও নিজেরা এসে ফ্রি অক্সিজেন রিফিল বা ভর্তি করে নিতে পারবে।
আবুল খায়ের গ্রুপের সিনিয়র ম্যানেজার (অ্যাডমিনিস্ট্রেশন) ইমরুল কাদের ভূইয়া জানান, শুধুমাত্র হাসপাতালে অক্সিজেন সরবরাহের লক্ষ্যে আলাদাভাবে বেশ কিছু যন্ত্রপাতি ক্রয় করে ইতিমধ্যে প্ল্যান্ট স্থাপন করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, দেশে করোনা হাসপাতালে যত অক্সিজেন প্রয়োজন হবে, তার সবটাই আবুল খায়ের গ্রুপের প্রতিষ্ঠান একেএস প্ল্যান্ট থেকে সরবরাহ করা হবে।
তিনি জানান, দেশে বাণিজ্যিকভাবে অক্সিজেন উৎপাদন করা সব থেকে বড় প্রতিষ্ঠানটিতে দৈনিক উৎপাদন সক্ষমতা ১২০ টন। আর চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে অবস্থিত আবুল খায়েল গ্রুপের একেএস প্ল্যান্টে রয়েছে ২৬০ টন অক্সিজেন উৎপাদনের সক্ষমতা, যা বাংলাদেশে বৃহত্তম। প্রতিষ্ঠানটি এ অক্সিজেন ব্যবহার করে শুধুমাত্র নিজেদের একেএস ব্র্যান্ডের স্টিল উৎপাদনে। এ প্ল্যান্টের অক্সিজেন বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন করে না একেএস।
Advertisement
আবুল খায়ের গ্রুপের ওই শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, দেশের এ সংকটকালে মানুষের জন্য কিছু করতে পারায় তারাও আনন্দিত।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবির, আবুল খায়ের গ্রুপের সিইও মোহাম্মদ আবদুল্লাহ, বিআইটিআইডিয়ের পরিচালক ডা. এম এ হাসান চৌধুরী, আবুল খায়ের গ্রুপের এজিএম (অক্সিজেন প্রোডাকশন) মোহাম্মদ সামশুদ্দোহা উপস্থিত ছিলেন।
আবু আজাদ/এএইচ/এমএস