দেশজুড়ে

পজিটিভ সামাদের সংস্পর্শে আসা সবার ফলাফল নেগেটিভ!

টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার জশিহাটী গ্রামের আব্দুস সামাদ (৭০) এর করোনা শনাক্তের ফলাফল নিয়ে ধূম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। প্রথমে নমুনা পরীক্ষার ফলাফল পজিটিভ এলেও দুবারের ফলাফল নেগেটিভ। তবে এরই মধ্যে তার সংস্পর্শে থাকা পরিবারের অন্যান্য সাত সদস্যের নমুনা পরীক্ষা করায় উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।

Advertisement

পরিবারের অন্য সদস্যদেরও পরীক্ষার ফলাফলও আসে নেগেটিভ। আসলে কি বৃদ্ধ সামাদ করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন, নাকি তার রিপোর্টটি ভুল? এ নিয়ে টাঙ্গাইলের সাধারণ মানুষের মাঝে বইছে আলোচনা আর সমালোচনার ঝড়। তেমনি প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে এর পরীক্ষা পদ্ধতি।

চিকিৎসা বিভ্রাটের শিকার সামাদের ছেলে ছানোয়ার হোসেন বলেন, গত ২৭ এপ্রিল আব্দুস সামাদকে ব্রেইনস্ট্রোকজনিত সমস্যায় টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দুদিন এখানে চিকিৎসা শেষে ২৯ এপ্রিল তাকে ঢাকার নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। সেখানে তার ব্রেইনস্ট্রোকের চিকিৎসা ব্যতীত করোনার নমুনা পরীক্ষা করা হয় এবং তার দেহে করোনা শনাক্ত হয়।

এ কারণে পরদিন তাকে ওই হাসপাতালের ব্যবস্থাপনায় কুর্মিটোলা হাসপাতালের করোনা ইউনিটে রেফার্ড করা হয়। সেখানে চিকিৎসার ৭ দিন পর গত ৯ মে পুনরায় তার নমুনা পরীক্ষায় পাঠানো হয়। ১১ মে তার পরীক্ষার ফলাফল নেগেটিভ আসে। পরে (১১ মে) সন্ধ্যায় তার বাবা আব্দুস সামাদকে করোনা নেগেটিভ ওয়ার্ডে স্থানান্তর করা হয়। অপরদিকে করোনা পজিটিভের সংবাদ পেয়ে গত ৯ মে আব্দুস সামাদের পরিবারসহ স্বজনদের সাতজনের নমুনা সংগ্রহ করে বাসাইল উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।

Advertisement

১১ মে তাদেরও নমুনা সংগ্রহের ফলাফল নেগেটিভ আসে। বর্তমানে তার বাবা আব্দুস সামাদ কুর্মিটোলা হাসপাতালে ভর্তি।

বিষয়টি নিশ্চিত করে বাসাইল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ফিরোজুর রহমান বলেন, আব্দুস সামাদ মূলত ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ আর হার্টের রোগী। ইতোপূর্বে তিনি স্ট্রোক করেছিলেন। বিছানা থেকে উঠতে পারতেন না। এমন সমস্যায় গত ২৭ এপ্রিল তাকে ভর্তি করা হয় টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে। সেখানে দু’দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর তাকে পাঠানো হয় ঢাকার নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে।

এরপর এ হাসপাতালে করা করোনার নমুনা পরীক্ষায় তার দেহে করোনা শনাক্ত হয়। এ কারণে তাকে আবার ভর্তি করা হয় কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে। দ্বিতীয় বারের নমুনা পরীক্ষায় সেখানে করোনা নেগেটিভ এসেছে। এছাড়া সেখানে তার সংস্পর্শে আসা ডাক্তার, নার্সদেরও নমুনা পরীক্ষা করা হয়। তাদের ফলাফল নেগেটিভ আসে। অথচ করোনা সংক্রমণ বলছে ভিন্ন কথা। সখীপুরের লাঙ্গুলিয়া গ্রামের রিপন করোনা পজিটিভ হওয়ার পর তার পরিবারের পাঁচজনের ফলাফলই হয়েছে পজিটিভ। এছাড়াও নাগরপুরে একই মোটরবাইক ব্যবহার করায় আরোহীরা করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। অথচ আব্দুস সামাদের সংস্পর্শে আসা সবার ফলাফল নেগেটিভ। তিনি কি আসলেই করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন?

সত্যতা নিশ্চিত করে টাঙ্গাইল সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার করোনা সংক্রান্ত ফোকাল পারসন ডা. আজিজুল হক বলেন, তার ভর্তি ও করোনা নমুনা পরীক্ষার ফলাফলের বিষয়টি আমরা অবগত থাকলেও তিনি ঢাকার নিউরোসায়েন্স হাসপাতালের তালিকায় ছিলেন করোনা পজিটিভ আর পুনরায় ভর্তিরত কুর্মিটোলা হাসপাতালের নমুনা পরীক্ষার ফলাফলে নেগেটিভ রোগী। এ কারণে টাঙ্গাইল স্বাস্থ্য বিভাগের তালিকায় তিনি অর্ন্তভুক্ত নন।

Advertisement

আরিফ উর রহমান টগর/এমএএস/পিআর