করোনার ভয়াবহতার মধ্যে লকডাউন শিথিল করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভুল পথে হাঁটছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী লকডাউন শিথিল করে মানুষের আক্রান্ত সংখ্যা বৃদ্ধি এবং মৃত্যুর মিছিলকে দীর্ঘায়িত করছেন।
Advertisement
মঙ্গলবার রূপগঞ্জে তারাবো পৌর বিএনপির সভাপতি আলহাজ্ব নাসিরুদ্দিনের উদ্যোগে বরপা এলাকায় ত্রাণ বিতরনের সময় তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, আজকে দেশে ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে লকডাউন শিথিল করছেন। আমি মনে করি প্রধানমন্ত্রী আপনি ভুল পথে হাঁটছেন। লকডাউন শিথিল করায় জার্মান-ইংল্যান্ডের মতো দেশের করোনা বৃদ্ধি পেয়েছে। সরকার হঠাৎ লকডাউন শিথিলের কথা বলছেন। এখন প্রতিদিন আক্রান্ত এবং মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রতিদিন রাস্তাঘাট, নদীর ধারে, হাট-বাজারে মানুষ মরে পড়ে থাকে। এই সরকারের মানুষের প্রতি মায়া-মহব্বত নেই। থাকবে কেনো ওনার তো ভোট দরকার পড়ে না। রাত্রিবেলা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ভোট করে দেয়।
তিনি বলেন, গোটা পার্লামেন্টে প্রধানমন্ত্রীর অনুগত লোকেরা বসে আছেন। উনি যেটা বলেন সেটাতেই সবাই হাতে তালি দেন। এই পার্লামেন্টে জনগণের সমর্থন নেই। যে পার্লামেন্টে জনগণের সমর্থন থাকে না সেই সরকার ফ্যাসিজম এবং স্বৈরাচার দিয়ে দেশ চালাবে। সেখানে দেশের মানুষ মরলো কি বাঁচলো তাতে তাদের ভ্রুক্ষেপ নেই। লকডাউন শিথিল করলে হাজার হাজার মানুষ মারা যাবে এটা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কখনো মাথার মধ্যে নেন না, নিতেও চান না। এরকম একটা পরিস্থিতির মধ্যে দিনাতিপাত করতে হচ্ছে দেশের মানুষকে।
Advertisement
রিজভী বলেন, সরকারি ত্রাণ জনগণ পায় না। আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান-মেম্বার ও দলীয় নেতাকর্মীরা আত্মসাৎ করছেন, চুরি করছে জনগণের টাকায় কেনা ত্রাণ। জনগণকে বাঁচাতে হলে, তাদের নিরাপত্তা দিতে হলে যারা দিন আনে দিন খায় অসহায় গরিব মানুষদের বাড়ি বাড়ি ত্রাণ পৌঁছে দিতে হবে। এটা সরকারের দায়িত্ব। সরকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে এই কাজটি করতে পারত। সরকার তা না করে লকডাউন শিথিল করে দিচ্ছে। মানুষকে বাঁচানো নিয়ে এই সরকারের কিছুই করার নেই। তারা শুধু মানুষকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। স্বাস্থ্যকর্মী, ডাক্তার, নার্সরা মারা যাচ্ছেন। তাদের কোনো নিরাপত্তা নেই। তারা বাড়ি ভাড়া পর্যন্ত পাচ্ছেন না। যে বাড়িতে থাকেন তার মালিক তাদের চলে যেতে বলেন। সরকারের উচিত ছিল ডাক্তারদের পাঁচতারকা হোটেলে রেখে কাজ করনো। কিন্তু সরকার সেটা করছে না।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, আমরা সরকারি ত্রাণ দিতে আসিনি। কঠিন দুর্যোগেও সরকার তাদের বৈশিষ্ট্য থেকে ন্যূনতম সরে আসেনি। তারা কোনো কিছুই সামাল দিতে পারেনি। গতকাল ২৪ ঘণ্টায় এক হাজারের অধিক লোক করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। প্রতিদিন আক্রান্ত সংখ্যা এবং মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সরকার আগাম প্রস্তুতি নিলে এরকম পরিস্থিতির সৃষ্টি হত না। জানুয়ারি মাসে যখন চীনে করোনা মহামারি দেখা দিলো তখন বাংলাদেশের যে ব্যবস্থা নেয়া দরকার ছিল তার সরকার নেয়নি। তারা তাদের একটি অনুষ্ঠান নিয়ে ব্যস্ত ছিল। সরকার যদি লকডাউন করে ব্যবস্থা নিয়ে গরিব মানুষকে সহায়তা দিয়ে ঘরে বন্দী করে রাখতো তাহলে আজকের এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হত না। সরকার করোনা মোকাবিলায় সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে।
কেএইচ/এমএফ/জেআইএম
Advertisement