প্রবাস

অবশেষে ঠাঁই হলো সৌদিতে ৩ মাস ফুটপাতে পড়ে থাকা বাংলাদেশির

অন্যান্য প্রবাসী বাংলাদেশির মতো তসলিমেরও ছিল অনেক স্বপ্ন, ছিল বুকভরা আশা। ছিল পরিবারকে সুখের রাখার পরিকল্পনা। তবে নিয়তির সব পরিকল্পনা যেন সৌদি আরবের মরুর ধুলাবালির সাথে মিশে যায় তার। শুধু একটি দেহ পড়ে আছে, যে দেহেতে নেই কোনো স্বপ্ন, নেই কোনো পরিকল্পনা। এখন কেবল একটিই চাওয়া কোনোভাবে দেশে ফিরে যাওয়া।

Advertisement

বলছিলাম নওগাঁ জেলার সৌদি আরব প্রবাসী তসলিম উদ্দিনের কথা। যে তসলিম উদ্দিন তিন বছর আগে এসেছিলেন সৌদি আরবে। কোথায় কোন কোম্পানিতে কাজ করতেন কিছুই বলতে পারছেন না তিনি এখন। বর্তমানে ইকামার একটি কপি ছাড়া আর কিছুই নেই তার কাছে।

শরীরে অনেক জখমের চিহ্ন নিয়ে তিন মাস ধরে সৌদি আরবের রিয়াদে খানসা লিলা নামক স্থানে ফুটপাতে পড়েছিলেন এই তসলিম। সেই ফুটপাত ধরে অনেকের যাওয়া-আসা থাকলেও কেউ তাকে থাকার জায়গাটা পর্যন্ত করে দিতে পারেনি! তবে অনেকে তার সমস্যার কথা জিজ্ঞেস করলেও সঠিকভাবে কিছুই বলতে পারেন না।

এক পর্যায়ে সৌদি আরবের জাগো নিউজের প্রতিনিধি আব্দুল হালিম নিহনের কাছে তসলিমের ফুটপাতে পড়ে থাকার একটি ছবি দিয়ে অন্য এক বাংলাদেশি এসএমএস করেন। খবর পেয়ে পরদিন তসলিমের কাছে ছুটে যান তিনি।

Advertisement

আব্দুল হালিম তার কাছে গিয়ে বিস্তারিত জানতে চান, বিস্তারিত বলতে না পারলেও তসলিম তার শরীরের ক্ষতস্থান দেখিয়ে কান্না করতে করতে বললেন, তিন মাস আগে মেডিকেল থেকে তাকে এখানে নামিয়ে দেয়া হয়।

মেডিকেলে কেন গেছেন? কী হয়েছিল? কিছুই মনে নেই তসলিমের। তবে তার দেশের বাড়ি নওগাঁ জেলায় সেটা বলতে পারছেন এবং কেঁদে কেঁদে দেশে ফিরতে চান সেটা বারবার জানান দিচ্ছেন।

পরে তসলিমকে সান্ত্বনা দিয়ে নিজের কাছে ঠাঁই দেন আব্দুল হালিম নিহন। তাকে একটি থাকার জায়গা ঠিক করে তার দেখাশোনার দায়িত্ব তিনি নেন, দেশে না যাওয়া পর্যন্ত।

পরবর্তীতে বিষয়টি রিয়াদে বাংলাদেশ দূতাবাসকে অবগত করা হলে দূতাবাস তসলিমকে দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করবে বলে আশ্বাস দেয়। এদিকে অনেক প্রবাসী তসলিমের পাশে দাঁড়ানো আশ্বাস দিয়েছেন।

Advertisement

বিএ/জেআইএম