বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের বোলার জাহানারা আলম। করোনাভাইরাসের প্রকোপের কারণে ঘরেই এক প্রকার বন্দী জীবন কাটাচ্ছেন তিনি। এ সময়টা কিভাবে কাটাচ্ছেন, অনুভূতি কি এবং ফিটনসে কিভাবে ধরে রেখেছেন- এসব নিয়ে তিনি মুখোমুখি হলেন জনপ্রিয় ক্রিকেট ওয়েবসাইট ক্রিকইনফোর।
Advertisement
সেখানেই তিনি জানালেন, এবার সুযোগ পেয়েছেন পুরো রমজানের মাসের প্রতিটি রোজা রাখার। রোজা রেখেই কাটছে রমজানের এই সময়টা। একই সঙ্গে নামাজ পড়ে এবং কোরআন তেলাওয়াতও করছেন তিনি নিয়মিত।
জাহানারা আলমের কাছে প্রথমেই প্রশ্ন ছিল, এই সীমাবদ্ধ সময়টা কি আপনার জন্য খুব কঠিন হয়ে পড়েছে? জবাবে জাহানারা আলম বলেন, ‘লকডাউন শুরুর দিকে খুব বাজে সময় গেছে আমার। পুরো সময়টা ঘরে বসে থাকা ছিল আমার জন্য খুবই কঠিন। তবে ধীরে ধীরে খুব স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে শুরু করেছি। গত বছর রজমানের পুরোটা সময় খেলা থাকার কারণে আমি রোজা রাখতে পারিনি। এবার লকডাউনে বাসায় থাকার কারণে নিয়মিতই রোজা রাখছি। নামাজ পড়ছি এবং কোরআন তেলাওয়াত করছি। এসব কাজের কারণে নেতিবাচক সময় আর আমার সামনে আসতেছে না।’
নিজেকে কিভাবে ফিট রাখছেন? জানতে চাইলে জাহানারা বলেন, ‘রমজান শুরুর আগে আমি প্রতি দু’দিন অন্তর এ নিয়ে কাজ করেছি। তবে আমার বাড়িতে জিম করার কোনো সরঞ্জাম নেই। এ কারণে ফিটনেস ধরে রাখার জন্য কাজ করা খুব কঠিন। তবুও আমি সিঁড়ি বেয়ে ওঠা-নামা করা, বাড়িতে কিছু কাজ করা- এসব করার চেষ্টা করেছি। রোজা শুরুর পর ফিটনেস ধরে রাখার কাজ করছি তিনদিন অন্তর অন্তর। তবে সময় কমিয়ে দিয়েছি। কারণ, রোজা রেখে যেন পানিশূন্য না হয়ে পড়ি।’
Advertisement
লকডাউন না হলে এই সময়ে কোথায় খেলা ছিল আপনাদের? জানতে চাইলে জাহানারা আলম বলেন, ‘নারী জাতীয় লিগ শুরু হওয়ার কথা ছিল ২৬ মার্চ থেকে। আমি ছিলাম সিলেট বিভাগের অধিনায়ক। এ জন্য অন্তত দুই সপ্তাহের ট্রেনিং ক্যাম্পে থাকারও পরিকল্পনা ছিল। আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম ঢাকায় থাকবো। এরপর খুলনা এবং সিলেট যাওবো। কিন্তু এরই মধ্যে শুরু হয়ে গেলো মহামারি। অস্ট্রেলিয়া থেকে ৮ জুন দেশে ফিরে আসার পর ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনে চলে যাই। আমি ভাবলাম, আমার পরিবারকে সুরক্ষা দেয়ার জন্য এটাই যুক্তিযুক্ত। কোয়ারেন্টাইন শেষে আমি আমার পরিবারের কাছে গণপরিবহনে করে খুলনা যাওয়ার ঝুঁকি নিলাম না।
আমি চিন্তাও করতে পারছি না, লকডাউনের পর আমি আমার পরিবারের সঙ্গে খুব বেশি সময় দিতে পারবো কি না। কারণ, আমাদের সামনে প্রচুর ক্রিকেট রয়েছে। নারী এনসিএল, ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ মাঠে গড়ানোর কথা। জুলাইতে শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা বিশ্বকাপ বাছাই পর্ব। আমরা কোয়ালিফাই করলে আগামী বছর ফেব্রুয়ারিতে যাবো নিউজিল্যান্ডে। এছাড়া শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে সিরিজও ছিল। যদিও সময়টা জানা নেই আমার।’
প্রসঙ্গতঃ করোনার কারণে অঘোষিত লকডাউন শুরুর পর জাহানারা আলম তার প্রতিবেশি অসহায় দুস্থ মানুষদের মাঝে খাদ্য-সামগ্রীও বিতরণ করেছিলেন।
আইএইচএস/
Advertisement