হাসপাতালের সহকারী সুপার হিসেবে কাজ করেন বীরভূমের মেয়ে অমৃতা কর্মকার। বীরভূমের সিউড়ি জেলা হাসপাতালের সহকারী সুপার। তাই হাসপাতালের নানা কাজে তাকে জড়িত থাকতে হয়। করোনাভাইরাসের ভয়ের সঙ্গেই সামনের সারিতে থেকে লড়ছেন তিনি।
Advertisement
বাসায় স্বামী-শিশুসন্তানও রয়েছে তার। সকাল ১০টায় বেরিয়ে ফেরেন রাত ৮টায়। সমস্ত পোশাক বদলে গোসল করে তবেই ছেলের কাছে যান। হাসপাতাল থেকে মা ফিরলেই কোলে উঠতে চায় সেই শিশুসন্তান। কিন্তু প্রাণ কাঁদলেও সঙ্গে সঙ্গে ছেলেকে ছুঁতে পারেন না।
এরই মধ্যে দেড় বছরের ছেলেকে রেখেই টানা ১০ দিন হোটেলে কোয়ারেন্টাইনে ছিলেন। গতকাল রোববার অবশ্য বাড়িতেই থাকার সুযোগ পেয়েছিলেন অমৃতা। সারাদিনই কাটিয়েছেন ছেলের সঙ্গে।
বললেন, টানা ২১ দিন পর এই দিনটা ছুটি পেয়েছি বলে ভালো লাগছে। এই লড়াইয়ে জয় আসবেই। শুধু একটু ধৈর্য ধরতে হবে। আমি তো একা নই, সবাই মিলে আমরা লড়াই করছি।
Advertisement
অমৃতা সিউড়িরই মেয়ে, হাসপাতাল ব্যবস্থাপনায় ডিগ্রিধারী অমৃতা গত বছরের ১৮ আগস্ট থেকে জেলা হাসপাতালের সহকারী সুপার পদে যোগ দেন। করোনা সংক্রমণ বাড়তে থাকলে কাজের চাপ বাড়ে। এখন আইসোলেশন ওয়ার্ড তদারকি করছেন অমৃতা। সম্ভাব্য করোনা রোগীদের রাখা হচ্ছে সেখানে।
বিদেশ থেকে বা সংক্রমণ ছড়িয়েছে, তেমন কোনো রাজ্য থেকে জেলায় ফিরে জ্বর, সর্দি-কাশির মতো উপসর্গের রোগী সামলাতে জেলা হাসপাতালে ফিভার ওয়ার্ড তৈরি হয়। প্রাথমিকভাবে সেই ওয়ার্ডের দায়িত্ব ছিল তার কাঁধেই।
অমৃতার কথায়, বাইরে থেকে কে সংক্রমণ নিয়ে আসছেন বলা শক্ত। নার্স-ডাক্তারদের সঙ্গে পরিদর্শনে প্রতিদিনই ওই ওয়ার্ডে যেতে হবে জেনে নিজেকে পরিবার থেকে দূরে রাখার সিদ্ধান্ত নিই।
১০ দিন ধরে শহরের একটি হোটেলে হাসপাতালের বাকিদের সঙ্গে কোয়ারেন্টাইনে ছিলেন তিনি। তার কথায়, ওই ক’টা দিন কীভাবে কেটেছে, বলে বোঝাতে পারব না। ফোনে শুনতাম, ছেলে খুব কান্নাকাটি করেছে। ইচ্ছে হতো, চলে যাই।
Advertisement
বিএ/জেআইএম