জাতীয়

প্রযুক্তির উৎকর্ষতায় বাড়ছে পরকীয়া : ডা. মুহিত কামাল

সম্প্রতি উচ্চবিত্ত থেকে শুরু করে নিম্নবিত্ত পর্যন্ত সকল শ্রেণির পরিবারের নারী-পুরুষরা জড়িয়ে পড়ছে পরকীয়ার সম্পর্কে। পরকীয়ার কারণে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েন বাড়ছে, ভাঙছে ঘর-সংসার। তাদের মধ্যে হত্যা ও আত্মহত্যার প্রবণতাও তৈরি হচ্ছে। নারীদের তুলনায় পুরুষরা অধিকমাত্রায় পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ছে। এ কারণে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলার ঘটনা ঘটছে প্রতিনিয়ত। পরকীয়ার প্রভাব হিসেবে এগুলোকেই দায়ী করেছেন জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক প্রখ্যাত মনোচিকিৎসক ডা. এম মোহিত কামাল।এদিকে, গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডক্টরস কোয়ার্টারে পরকীয়ার ঘটনা ধরা পড়ে। ঢামেকে চাকরিরত দুই চিকিৎসককে আপত্তিকর অবস্থায় আটক করা হয়। শাহবাগ থানা পুলিশের ভাষ্যমতে, নারী চিকিৎসকের স্বামীও একজন চিকিৎসক। ঘটনার সময় তিনি চিকিৎসা প্রশিক্ষণ কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে বিদেশে অবস্থান করছিলেন। মহিলা চিকিৎসকের বাসা থেকে পুরুষ চিকিৎসককে উদ্ধারের সময় মহিলা চিকিৎসকের শ্বশুরবাড়ির লোকজনও সেখানে উপস্থিত ছিলেন বলে জানা যায়। এদিকে, অন্যান্য পেশার লোকজনের পরকীয়ার ঘটনা প্রকাশ্যে এলেও চিকিৎসকদের পরকীয়ার ঘটনায় বিব্রত ঢামেক হাসপাতালসহ দেশের চিকিৎসক সমাজ।প্রখ্যাাত মনোচিকিৎসক ডা. এম মোহিত কামালের কাছে পরকীয়ার সার্বিক অবস্থা ও নেপথ্যে কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি জাগো নিউজকে বলেন, দেশে পরকীয়া বাড়ছে। ধনী-গরিব নির্বিশেষে সব স্তরের মানুষের মধ্যে পরকীয়ার প্রবণতা বাড়ছে। হাসপাতালে ও ব্যক্তিগত চেম্বারে পরকীয়ার ফলে নারী ও পুরুষ মানসিক রোগে আক্রান্ত হয়ে আসছেন বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, জৈবিক (যৌন) চাহিদা মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি। ব্যক্তিত্ব, নৈতিকতা ও মূল্যবোধের মাধ্যমে জৈবিক চাহিদা নিয়ন্ত্রণ করতে শেখায়। যারা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না তারা বিপর্যয়ের দিকে এগিয়ে যায়।  বর্তমান উন্নততর প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতার কারণে মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেটের খুব সহজেই নারী পুরুষ কাছাকাছি চলে আসছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা নিরবে ও নিভৃতে আলাপ করতে পারছে। ঘনিষ্ট সংলাপের মাধ্যমে এক পর্যায়ে যৌনতা প্রসঙ্গ চলে আসছে। শব্দ তরঙ্গ মস্তিস্কে গিয়ে বায়োলজিক্যাল চাহিদা প্রবলভাবে জেগে উঠছে। দেহে হরমোনের  নিঃসরণ ঘটে। মানুষ তখন ভুলে যায় সে বিয়ে করেছে ও ছেলেমেয়ে আছে। ডা. এম মোহিত কামাল জানান, ব্যক্তিত্বের নিয়ন্ত্রণহীণতার পাশাপাশি অপ্রাপ্তি, অপূর্ণতা, হতাশা, ব্যক্তিগত ও যৌনসম্পর্কের দূরত্ব , ফাটলের ফলে পারস্পরিক সম্পর্ককে দূরে ঠেলে দেয়। ফলে তৃতীয় একজন সহজে মস্তিস্কে স্থান করে নেয়।এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণের জন্য প্রথমেই নিজের ঘাটতি আবিষ্কার করা বুদ্ধিমানের কাজ। সঙ্গীকে দোষ দিয়ে নয়, নিজেকে সংশোধন করতে পারলে পরকীয়ার ঘটনা ঘটবে না। এক্ষেত্রে ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলা তথা নৈতিকতার পরিচর্যার বিকল্প নেই বলে জানান তিনি। এমইউ/এসকেডি/আরআইপি

Advertisement