বাসদ (মার্কসবাদী) ঢাকা নগর শাখার উদ্যোগে রোববার (১০ মে) করোনা মহামারিতে সকল নাগরিকের খাদ্য, চিকিৎসা, শিক্ষা ও ইউটিলিটি বিলের দায়িত্ব রাষ্ট্রকে নেয়ার দাবিতে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি পেশ করা হয়েছে। স্মারকলিপিতে তাদের ঘোষিত ৭ দফা দাবি বাস্তবায়নের কথা বলা হয়।
Advertisement
এর আগে ঢাকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন পার্টির ঢাকা নগর শাখার ইনচার্জ নাঈমা খালেদ মনিকা, সদস্য মাসুদ রানা, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সালমান সিদ্দিকী, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট ঢাকা নগর শাখার সভাপতি রাফিকুজ্জামান ফরিদ। সমাবেশ শেষে পার্টির ঢাকা নগর শাখার ইনচার্জ নাঈমা খালেদ মনিকার নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল জেলা প্রশাসককে স্মারকলিপি দেন।
সমাবেশে নাঈমা খালেদ মনিকা বলেন, মরণঘাতী করোনা ভাইরাস নিয়ে গোটা বিশ্ব আতঙ্কিত। সরকারি তথ্য মতে দেশে এই মুহূর্তে ১৩ হাজারেরও বেশি কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগী আছে, দেশের সবকটি জেলায় সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে এবং আইইডিসিআরের পূর্বাভাস যে, মে মাসের শেষদিকে এই সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়াবে। আমরা এ আশংকায়, গত ২২ এপ্রিল স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদফতর ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি দিয়েছিলাম। আমরা এ মহামারিতে সরকারের দৃষ্টিতে আনতে চেয়েছিলাম, স্বাস্থ্য ও খাদ্য নিরাপত্তায় সরকারের ভূমিকাই মুখ্য। কারণ, ব্যক্তিগত পর্যায়ে এটি প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়।
৭ দফা দাবিসমূহ
Advertisement
১. সকল নাগরিকের জন্য রেশনের ব্যবস্থা করুন। টিসিবির ভ্রাম্যমাণ বিক্রয়কেন্দ্রের সংখ্যা বাড়ান। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করা চলবে না।
২. নাগরিক সংকট বিবেচনা করে বাড়িভাড়া কমানোর জন্য রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রজ্ঞাপন দিন ও কার্যকর করুন। পানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের বিল মওকুফ করুন।
৩. অসংগঠিত শ্রমিক, নিম্ন-আয়ের মানুষ ও মহামারির কারণে তিগ্রস্ত মানুষের তালিকা করে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য এবং নগদ অর্থ প্রদান করতে হবে।
৪. গার্মেন্টস শ্রমিক, অন্যান্য প্রাতিষ্ঠানিক কর্মক্ষেত্রের শ্রমিক এবং পরিবহন শ্রমিকদের সবেতনে ছুটি, সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য বিশেষ ভাতা নিশ্চিত করুন। লে-অফ, শ্রমিক ছাঁটাই চলবে না। বেতন-ভাতা না দিলে মালিকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিন। রাষ্ট্রীয় প্রয়োজনে উৎপাদনে নিয়োজিত শ্রমিকদের পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যগত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করুন।
Advertisement
৫. ডাক্তার, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীসহ চিকিৎসা সেবায় যুক্ত সকলের পিপিই, ঝুঁকি ভাতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন। ঢাকার আক্রান্ত এলাকাগুলো বাছাই করে কন্টাক্ট ট্রেসিংয়ের মাধ্যমে ব্যাপক হারে নমুনা পরীক্ষা করুন। করোনা রোগীদের জন্য হাসপাতাল ও বেডের সংখ্যা বৃদ্ধি করুন।
৬. সরকারি ও বেসরকারি সকল স্কুল, কলেজ, মেডিকেল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বেতন-ফি মওকুফ করুন। বেসরকারি স্কুল-কলেজ-মেডিকেল কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন ও উৎসব ভাতা প্রদান করুন। দুর্যোগ চলাকালীন সময়ে ছাত্রদের কাছ থেকে মেস ভাড়া নেয়া চলবে না।
৭. সংক্রমণ ঠেকাতে মার্কেট, শপিংমল সীমিত আকারে খোলা ও প্রার্থনা কেন্দ্রগুলো সচল করার সিদ্ধান্ত বাতিল করুন। কোনো নাগরিককে ডিজিটাল আইনের মাধ্যমে সরকারের আক্রমণের শিকার করা যাবে না।
এফএইচএস/এমএআর/এমএস