দেশজুড়ে

‘কাজ দেও নইলে খাবার দেও’

‘করোনাভাইরাসে সবে খোলা, হামার গাড়ি বন্ধ কেন, কী খেয়ে বাঁচি? এদোন (এমন) করি কয়দিন আর চলি। কাজ দেও, নইলে খাবার দেও।’ এভাবে কথাগুলো বলছিলেন লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে সড়ক অবরোধ করতে আসা বাস শ্রমিক মুকুল মিয়া।

Advertisement

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে গণপরিবহন বন্ধ রেখেছে সরকার। এতে কর্মহীন হয়ে পড়েন এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হাজারো শ্রমিক। এ ঘটনায় লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলায় খাদ্যের দাবিতে ঘণ্টাব্যাপী মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল করেন মোটর বাস শ্রমিকরা।

রোববার (১০ মে) দুপুরে অসহায়, দুস্থ কর্মহীন শত শত পরিবহন শ্রমিক খাদ্য ও কাজের দাবিতে লালমনিরহাট-বুড়িমারী মহাসড়কের তুষভাণ্ডারে রওশন ফিলিং স্টেশন এলাকায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন।

জানা গেছে, করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে গণপরিবহন বন্ধ ঘোষণা করায় দীর্ঘদিন ধরে কর্মহীন হয়ে বাড়িতে অবস্থান করছেন সংশ্লিষ্ট শ্রমিকরা। কর্মহীন শ্রমিকদের সঞ্চিত অর্থ শেষ হওয়ায় তারা ত্রাণের জন্য গত এক মাস আগে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে শ্রমিকদের তালিকা দিয়ে ত্রাণ দাবি করেন। গত এক মাস ধরে আজ-কাল বলে বিলম্ব করছে প্রশাসন। ফলে অনাহারে অর্ধাহারে থাকা শ্রমিকরা বাড়ি থেকে বের হয়ে মহাসড়ক অবরোধ করে খাদ্যের দাবিতে বিক্ষোভ করেন। এক পর্যায়ে প্রচণ্ড রোদের মধ্যে মহাসড়কে শুয়ে পড়েন শ্রমিকরা। এ সময় উভয় পাশে ট্রাকসহ শতাধিক যানবাহন আটকা পড়ে।

Advertisement

কালীগঞ্জ উপজেলার মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন মুকুল বলেন, ‘দেড় দুই মাস ধরে ঘরে বসে বসে সঞ্চিত অর্থ শেষ করে ঋণ করেও পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছি। ইউএনও ত্রাণ দিতে চেয়ে শ্রমিকদের তালিকা নিয়েছেন। কিন্তু সেই তালিকা নেয়ার একমাস অতিবাহিত হলেও ত্রাণের কোনো খবর নেই। তাই বাধ্য হয়ে সবাই মিলে রাস্তায় নেমে আসছি।’

কালীগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজ্জাত হোসেন বলেন, ‘শ্রমিকদের সড়ক অবরোধের কথা শুনে ঘটনাস্থলে গিয়ে সড়ক অবরোধ তুলে দেয়া হয়েছে। বর্তমানে যানচলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।’

কালীগঞ্জের ইউএনও রবিউল হাসান বলেন, ‘শ্রমিকদের তালিকা নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদে পাঠানো হয়েছে। সেখানে যাচাই-বাছাই করে ত্রাণ দেয়ার কথা। ত্রাণ আমার দেয়ার সুযোগ নেই, ইউনিয়ন পরিষদই ত্রাণ বিতরণ করবেন।’ ত্রাণের দাবিতে মহাসড়কে শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভের বিষয়টি তার জানা নেই।

এফআর/এমএস

Advertisement