মহামারি হিসেবে দেখা দেয়া করোনায় আক্রান্ত হয়েও এক ওয়াক্ত নামাজও বাদ দেননি এক যোদ্ধা। আল্লাহর উপর ভরসা রেখে সব কিছু স্বাভাবিকভাবে মেনে নিয়েছেন। হারাননি মনোবল। বরং ভয়কে জয় করার চেষ্টা করে ধিরে ধিরে সুস্থ হয়ে উঠছেন তিনি। আর এ জীবনযুদ্ধে জয়ী হয়ে ছেলে-মেয়ের সঙ্গে আবার দেখার অপেক্ষায় আছেন তিনি। তিনি দৈনিক প্রতিদিনের সংবাদের সিনিয়র রিপোর্টার গাজী শাহনেওয়াজ।
Advertisement
গত মাসের শেষ দিকে তিনি করোনায় আক্রান্ত হন। কিন্তু এ পরীক্ষার জন্যও তাকে অনেক হয়রান হতে হয়েছে। করোনা উপসর্গ নিয়ে কয়েকদিন আইইডিসিআরে ফোন দিলেও প্রথমে সাহায্যের জন্য কেউ এগিয়ে আসেননি। পরে সাংবাদিকরা চাপ দিলে তার নমুনা পরীক্ষা করা হয়। নমুনা সংগ্রহের তিনদিন পর ২৮ এপ্রিল রাতে আইইডিসিআরের পরিচালক ডা. মীরজাদা ফ্লোরার নম্বর থেকে রোগীকে এসএমএস করে করোনা পজিটিভের কথা জানানো হয়।
এরপর থেকে তিনি রাজধানীর মিরপুরের বাসাতেই রয়েছেন। করোনা উপসর্গ দেখা দেয়ার পর থেকেই সে ছোট দুই ছেলে মেয়ে ও স্ত্রী থেকে আলাদা থাকছেন।
সংসদ, নির্বাচন কমিশন ও সচিবালয়সহ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিটে কর্মরত গাজী শাহনেওয়াজ জাগো নিউজ বলেন, ‘দেশে সরকারি ছুটি ঘোষণার পর বাসা থেকেই কাজ করছিলাম। এরপর মাত্র তিনদিন বাজারে গেছি। মাস্ক, গ্লাভস, জুতা পরে গেছিলাম। বাসায় এসে সঙ্গে সঙ্গে গোসল করেছি। এর কয়েক দিন পর শরীরে জ্বর অনুভব করি। ছিল মাথা ব্যথাও। কিন্তু থার্মোমিটারে তাপমাত্রা বেশি দেখাচ্ছিল না। অথচ ভেতরটা আমার পুড়ে যাচ্ছিল। এর মধ্যেই হঠাৎ ওয়াশরুমে মাথা ঘুরে পড়ে যাই।’
Advertisement
শাহনেওয়াজ বলেন, ‘এরপর কতবার আইইডিসিআরে ফোন দিয়ে নমুনা সংগ্রহের জন্য বলি। কিন্তু কেউ আসে না। পরে সাংবাদিকদের চাপে আসতে বাধ্য হয়। আর ফলাফল দেয় আরও তিনদিন পর।’
করোনা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘এটা নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। আতঙ্কিত হলে মৃত্যু যন্ত্রণার মত হবে। কোনো সমাধান হবে না। করোনা নিয়ে ভয় পেলে মৃত্যুর আগে মারা যাবেন। এই কঠিন পরিস্থিতির মধ্যেও নামাজ ছাড়িনি।’
এ বিষয়ে তার স্ত্রী বলেন, ‘সে আক্রান্ত হওয়ার পর প্রচুর পরিমাণ ডাবের পানি, মালটা, স্যুপসহ নানা ধরনের পুষ্টিকর খাবার দিয়েছি। আস্তে আস্তে তিনি সুস্থ হয়ে উঠছেন।’
এইচএস/এএইচ/পিআর
Advertisement