করোনাভাইরাস বিস্তারের ভয়াবহতা রোধে ঈদুল ফিতর পর্যন্ত শপিংমল ও দোকান না খোলার বিষয়ে ঐকমত্য ঘোষণা করেছেন কক্সবাজারের ব্যবসায়ীরা।
Advertisement
শনিবার (৯ মে) কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি ও কক্সবাজার মার্কেট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের যৌথ বৈঠকে সর্বসম্মতিক্রমে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। পাশাপাশি বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি কক্সবাজার শাখা এবং টেকনাফ, উখিয়া, চকরিয়া, ঈদগাঁওসহ অন্যান্য উপশহরগুলোতে থাকা ব্যবসায়ী সমিতিও বৈঠক করে একই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে
জেলা শহরের আবু সেন্টারে কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় মার্কেট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও পূর্ব বাজারঘাটার সৈকত টাওয়ারের সত্ত্বাধিকারী মাহবুবুর রহমানের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন চেম্বার সভাপতি আবু মোরশেদ চৌধুরী খোকা, ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক নুরুল করিম, সরওয়ার রোমন, পারভেজ চৌধুরী, লোকমান মাস্টার প্রমুখ।
মাহবুবুর রহমান বলেন, সভার সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে কেউ নিজ আগ্রহে কক্সবাজারে মার্কেট, শপিংমল, দোকান খোলা রাখতে চাইলে সম্পূর্ণ নিজ দায়িত্বে সামাজিক ও শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে, সরকারি বিধিমালা মেনে খুলবেন। কক্সবাজার মার্কেট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন এ বিষয়ে কোনো দায়-দায়িত্ব নেবে না।
Advertisement
এদিকে, বিকেলে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি কক্সবাজার জেলা শাখার জরুরি সভায় একই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। শহরের বিভিন্ন মার্কেটের দোকানদার, ব্যবসায়ীদের নিয়ে বড়বাজার নূর মোহাম্মদ কমপ্লেক্সে গ্রাউন্ডে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির কক্সবাজার জেলা শাখার সভাপতি রফিক মাহমুদ বলেন, আমরা অনেকেই সরকারি সিদ্ধান্ত মানছি না। নিজেদের জীবনের চেয়ে অর্থকে প্রাধান্য দিচ্ছি। যে কারণে আমরা ঝুঁকির দিকে যাচ্ছি। আমাদের কোনো কর্মচারী প্রণোদনা পায়নি। অনেক ব্যবসায়ী কষ্টে রয়েছেন। এরপরও নিজেদের স্বার্থে রোববার (১০ মে) থেকে অন্তত আর কয়েকটা দিন দোকান বন্ধ রাখতে ব্যবসায়ীদের অনুরোধ জানাই।
এ বিষয়ে সমিতির সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম মুকুল জানান, করোনার ভয়াবহতা রোধে সকল ধরনের দোকানপাট বন্ধ রাখতে একমত হয়েছেন কক্সবাজারের ব্যবসায়ীরা। দোকান ভাড়া মওকুফের ব্যাপারে মার্কেট মালিকদের সাথে আলাপের ফলাফলের ওপর নির্ভর করছে মার্কেট খোলা বা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত। মার্কেট মালিকদের কাছে লিখিত আবেদনের ফলাফলের ওপর পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে ঐকমত্য পোষণ করেছেন তারা।
তিনি বলেন, শহরে ২০ হাজারের অধিক ব্যবসায়ী রয়েছেন। তারা এখনো কোনো ধরনের সাহায্য সহযোগিতা পাননি।
Advertisement
শ্রমিক-কর্মচারীদের মানবিক দিক বিবেচনায় ত্রাণ সহায়তা দিয়ে তাদের পাশে থাকতে জেলা প্রশাসন, পৌর মেয়রসহ সংশ্লিষ্টদের সুদৃষ্টি কামনা করেন তিনি।
সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক নাছির উদ্দীন সুমনের সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন সংগঠনের কার্যকরী সভাপতি নজরুল ইসলাম, সিনিয়র সহ-সভাপতি মিজানুর রহমান, সহ-সভাপতি মোহাম্মদ আলম সওদাগর, মাহমুদুল হক, সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ মোহাম্মদ ফরহাদ, ব্যবসায়ী নেতা হাবিবুর রহমান, জাহেদুল ইসলাম, জিল্লুর রহমান কাজল, অলি আহমদ জিয়া, মুহাম্মদ ফরিদ, কামাল উদ্দিন, তৌহিদুল ইসলাম, মোবারক হোসেন, আবদুল মান্নান, জহিরুল ইসলাম, মহি উদ্দিন ভুট্টো, সাদ্দাম হোসেন, মোহাম্মদ ওসমান, মোহাম্মদ হাসনাত, আবু আহমদ প্রমুখ।
অপরদিকে, উখিয়ার কোর্টবাজার দোকান মালিক সমবায় সমিতির সভাপতি আবু ছিদ্দিক সওদাগর জানান, করোনা থেকে এলাকাবাসীকে নিরাপদ রাখতে সব ধরনের দোকান-পাট ঈদ পর্যন্ত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
একই কথা জানান টেকনাফ বাস স্টেশন বণিক সমিতির সভাপতি এহতেশামুল হক। তেমনিভাবে চকরিয়া, পেকুয়া, মহেশখালী, রামু, ঈদগাঁও এবং কুতুবদিয়ার মার্কেটগুলোও সেখানকার ব্যবসায়ী সমিতি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে জানিয়েছে সূত্র।
সায়ীদ আলমগীর/এইচএ/জেআইএম