রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে পাওয়া যাচ্ছে পাকা আম। নির্ধারিত সময়ের বেশ আগেই বাজারে আসা এই পাকা আমের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকা পর্যন্ত। এমন চড়া দামে বিক্রি হলেও প্রকৃত পাকা আমের কোনো স্বাদ নেই এ আমে। এমনকি বেশিরভাগ আমের আঁটিও শক্ত হয়নি। রাসায়নিক দিয়ে পাকানো এ আম অতিরিক্ত মুনাফার আশায় একশ্রেণির ব্যবসায়ী বাজারজাত করছেন।
Advertisement
ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সাতক্ষীরা অঞ্চল থেকে এসব আম ঢাকায় আসছে। রাজধানীর পাইকারি ফলের আড়ত বাদামতলীর কিছু ব্যবসায়ীর পাশাপাশি কারওয়ান বাজার ও যাত্রাবাড়ীর কিছু পাইকারি ব্যবসায়ী এই আম খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করছেন।
তারা বলছেন, আগাম আমের ওপর সবারই বাড়তি এক ধরনের আগ্রহ আছে। তাছাড়া রোজার ভেতর বিভিন্ন ফলের চাহিদা বেশি থাকে। নতুন এ পাকা আমের চাহিদাও বেশ। এ কারণে প্রাকৃতিক নিয়মে পাকার আগেই কিছু ব্যবসায়ী রাসায়নিক দিয়ে পাকানো এ আম বাজারে নিয়ে এসেছেন।
এদিকে বাদামতলীর ফল আমদানিকারকরা জানিয়েছেন, এখন বাজারে যে পাকা আম পাওয়া যাচ্ছে, তার কোনোটাই আমদানি করা নয়। অতিরিক্ত মুনাফার লোভে দেশের কিছু ব্যবসায়ী রাসায়নিক দিয়ে পাকিয়ে এই আম বাজারজাত করছেন।
Advertisement
রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, রাসায়নিক দিয়ে পাকানো হলেও এসব আম দেখতে প্রকৃত পাকা আমের মতোই। গাছ পাকা আমের মতোই গায়ের রঙ হলদে অথবা হলদে সবুজ। অঞ্চল ভেদে এই আমের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২৫০ টাকা পর্যন্ত।
পুরান ঢাকার বিভিন্ন বাজারে এই পাকা আমের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকা। এ বিষয়ে আদনান রহমান জানান, গোবিন্দভোগ বলে ব্যবসায়ীরা ২৫০ টাকা কেজি পাকা আম বিক্রি করছেন। এ আম দেখতে সবুজ ও হলদে বর্ণের। তবে যারা আম কিনছেন তরা জানিয়েছেন পাকা দেখতে হলেও এই আম তেমন মিষ্টি না।
রামপুরা ও খিলগাঁও অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা রাসায়নিক দিয়ে পাকানো এই আম বিক্রি করছেন ১৮০ থেকে ২০০ টাকা কজি। এ বিষয়ে খিলগাঁওয়ের ব্যবসায়ী জিন্নাহ বলেন, এটা সাতক্ষীরা অঞ্চলের আগাম আম। প্রতিবছরই এই আম বাজারে একটু আগে আসে। তবে এই আমের স্বাদ একটু কম। কিন্তু আগাম আসার কারণে বাজারে আমের যথেষ্ট চাহিদা আছে। তাই দাম একটু বাড়তি। আমরা বিক্রি করছি ২০০ টাকা কজি। পাইকারিতে আমাদের কেনা পড়েছে ১৫০ টাকার ওপরে।
রামপুরায় সবজির সঙ্গে ভ্যানে করে পাকা আম বিক্রি করা কামাল বলেন, কারওয়ানবাজার থেকে পাঁচ কেজি আম কিনে এনেছি। ১৮০ টাকা করে দুই দিনে তিন কেজি বিক্রি করেছি। আসলে এই আম যারা কিনছেন শখের বসে কিনছেন। প্রকৃত পাকা আমের কোনো স্বাদ এই আমে নেই। আমি একটা বাসায় নিয়েছিলাম। এ আমের আটিও শক্ত হয়নি।
Advertisement
বাদামতলীর সাথী ফ্রেস ফ্রুটস লিমিটেডের মালিক সিরাজুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, বাজারে যে পাকা আম পাওয়া যাচ্ছে তা আমদানি করা না। সাতক্ষীরা অঞ্চল থেকে এনে এক শ্রেণীর ব্যবসী এই আম বিক্রি করছেন।
তিনি বলেন, এর একটাও পরিপক্ক হয়নি। কিছু কিছু অসৎ ব্যবসায়ী কেমিক্যাল দিয়ে পাকিয়ে এই আম বিক্রি করছেন। দেখা যায় এই আমের আটিও শক্ত হয়নি। অতিরিক্ত মুনাফার লোভে এক শ্রেণীর ব্যবসায়ী এই আমি বিক্রি করছে। এসব আম আমরা বিক্র করি না।
এমএএস/এমএফ/পিআর