সৌদি আরব থেকে ক্ষেপণাস্ত্র বিধ্বংসী সিস্টেম প্যাট্রিয়টসহ অন্যান্য সামরিক সরঞ্জাম সরিয়ে নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। গোপন সূত্রের বরাতে মার্কিন সংবাদমাধ্যম দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার অন্তত চারটি প্যাট্রিয়ট সার্ফেস-টু-এয়ার মিসাইল ব্যাটারি সৌদির তেল স্থাপনা থেকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। এগুলোর সঙ্গে দায়িত্বরত কয়েক ডজন সেনা কর্মকর্তাকেও অন্য জায়গায় মোতায়েন করা হবে।
Advertisement
ইতোমধ্যেই মার্কিন যুদ্ধবিমানের দু’টি স্কোয়াড্রন আরব ছেড়েছে। উপসাগরীয় অঞ্চলে মার্কিন নৌবাহিনীর উপস্থিতিও সীমিত করার পরিকল্পনা রয়েছেন পেন্টাগনের। তেহরান যুক্তরাষ্ট্রের জন্য আপাতত তাৎক্ষণিক হুমকি নয় বলে মনে করায় এমন সিদ্ধান্ত নিচ্ছে মার্কিন কর্তৃপক্ষ।
এ বিষয়ে সৌদি কর্তৃপক্ষ এখনও কোনও মন্তব্য করেনি। আর সৌদির তেল স্থাপনায় হামলার অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করেছে ইরান।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক মার্কিন কর্মকর্তারা বলেছেন, গত জানুয়ারিতে ইরানি কমান্ডার জেনারেল কাসেম সোলেমানিকে ড্রোন হামলায় হত্যার পাশাপাশি সাম্প্রতিক করোনাভাইরাস মহামারি ইরানকে অনেকটাই দুর্বল করে দিয়েছে এবং এ অঞ্চলে তেহরানের প্রতিপত্তিও কমে গেছে ব্যাপকভাবে। এ কারণে সামরিক সরঞ্জামগুলো অন্য গুরুত্বপূর্ণ কাজে মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে পেন্টাগন। বিশেষ করে এশিয়ায় চীনা সামরিক বাহিনীর প্রভাব বৃদ্ধি ঠেকানোকেই গুরুত্ব দিচ্ছেন তারা।
Advertisement
গত কয়েক সপ্তাহে দীর্ঘদিনের মিত্র যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরবের মধ্যে উষ্ণ সম্পর্ক অনেকটাই শীতল হয়ে এসেছে। করোনা মহামারিতে চাহিদা কমে যাওয়ায় তেলের উৎপাদন কমানো নিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে সৌদির মূল্যযুদ্ধের কারণে সাম্প্রতিক সময়ে তেলের দামে ভয়াবহ দরপতন ঘটেছে। এর প্রভাবে অনেক মার্কিন তেল কোম্পানিই দেউলিয়া হওয়ার পথে, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পসহ গোটা মার্কিন প্রশাসনই রয়েছে ব্যাপক চাপের মুখে।
গত সপ্তাহে রয়টার্সের এক প্রতিবেদনের তথ্যমতে, গত এপ্রিলে ট্রাম্প সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে বলেছেন, তেল রপ্তানিকারক দেশগুলো (ওপেক) উৎপাদন না কমালে আরব থেকে সেনা প্রত্যাহারের বিষয়ে আইন প্রণয়ন করা থেকে সংসদ সদস্যদের ঠেকানোর ক্ষমতা থাকবে না তার।
গত সেপ্টেম্বরে সৌদি আরবের একাধিক তেল স্থাপনায় ড্রোন হামলার পর সেখানকার নিরাপত্তায় বেশকিছু সামরিক সরঞ্জাম মোতায়েন করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। সেই সময় মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী মার্ক এসপার সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেছিলেন, ইরান সরকার মধ্যপ্রাচ্যকে অস্থিতিশীল করতে এবং আন্তর্জাতিক অর্থনীতির ক্ষতি করার চেষ্টা করছে। এটি প্রতিরোধেই সৌদির তেল স্থাপনাগুলোর সুরক্ষায় সেনা সহায়তা দিচ্ছেন তারা।
সূত্র: আল জাজিরা
Advertisement
কেএএ/এমএস