মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাটে ঈদ উৎসবের মতো মানুষের ঢল নেমেছে। তবে বাড়ি ফিরতে নয়, এ ঢল কর্মস্থলে ফেরার। লকডাউন উপেক্ষা করে পরিবার-পরিজন নিয়ে ঢাকার দিকে ছুটছে মানুষ। করোনাভাইরাসের কারণে সব কিছু বন্ধ থাকায় পরিবার নিয়ে তারা গ্রামের বাড়িতে ছুটে গিয়েছিলেন। সরকার গার্মেন্টসসের পর ঢাকার মার্কেটগুলো খুলে দেয়ার ঘোষণা দেয়ার নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ আবার ঢাকায় ফিরতে শুরু করেছেন।
Advertisement
শুক্রবার (৮ মে) ভোর থেকে শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ী নৌ রুটের ফেরিতে শত শত লোক পার হয়ে শিমুলিয়া ঘাটে এসেছে। টানা ১২ তম দিনেও থামেনি ঢাকামুখী দক্ষিণবঙ্গের মানুষের ঢল।
জানা গেছে, কাঁঠালবাড়ী ঘাট থেকে শত শত লোক ফেরিতে শিমুলিয়া ঘাটে আসছে। সামান্য কয়েকটি গাড়ির সঙ্গে মানুষ পরিবার-পরিজন নিয়ে গাদাগাদি করে ফেরিতে দাঁড়িয়ে পার হচ্ছে প্রমত্তা পদ্মা নদী। এমনকি ফেরির দোতালায় ওঠার সিঁড়িতেও দাঁড়িয়ে আসছে মানুষ। শিমুলিয়া ঘাটের পন্টুনে ফেরি থামার সঙ্গে সঙ্গে কার আগে কে নামবে এ নিয়ে শুরু হয় প্রতিযোগিতা। একজনের ওপর দিয়ে আরেকজন চলতে শুরু করেন। যেন বাস ছেড়ে যাচ্ছে তাদের রেখে। অথচ বাসস্ট্যান্ডে বাস থাকলেও কোনোটিই চলছে না সরকারি নিষেধাজ্ঞার কারণে।
বাস না পেয়ে যাত্রীরা গত কিছুদিনের মতো নসিমন, করিমন, অটোরিকশা, সিএনজি, থ্রি হুইলার, টেম্পু, অফলাইনের উবার, পাঠাও ও সহস্রাধিক মোটরসাইকেলে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুরে যাচ্ছে ভেঙে ভেঙে। এতে পরিবার-পরিজন নিয়ে তাদের যেমন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে যেমনি ভাড়াও গুণতে হচ্ছে কয়েকগুণ বেশি। শুধু শিমুলিয়া থেকে ঢাকাই নয়, এর পূর্বে দক্ষিণবঙ্গের ভোলা, পটুয়াখালীসহ ২১ জেলার লোক এভাবে ভেঙে ভেঙে লোকাল পরিবহনে করে কাঁঠালবাড়ী ঘাট এসে পৌঁছাচ্ছে। তারপর ফেরি পার হয়ে শিমুলিয়া ঘাটে।
Advertisement
মাওয়া নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক কবির হোসেন বলেন, মনে হচ্ছে লোকজন দীর্ঘদিন এক জায়গায় আটকা থেকে অধৈর্য্য হয়ে পড়েছে। মরণব্যধি করোনাকে তারা এখন ভয় পাচ্ছে না। কর্মস্থলে ফিরতে সকলেই এখন মরিয়া হয়ে উঠেছে। তা ছাড়া লোকজনের হাতে টাকা-পয়সা কমে যাওয়ায় তারা এখন হয়তো কাজে যোগ দিতে চায়। তাই ঝুঁকি নিয়েই প্রতিদিন এ নৌ রুট দিয়ে শত শত লোক ঢাকাসহ আশপাশের জেলাগুলোতে ফিরছে। আজ সকাল থেকেও মানুষের ঢল নামে। ফেরিগুলোতে যেন তিল ধারণের জায়গা নেই।
মাওয়া ট্রাফিক জোনের টিআই হিলাল উদ্দিন বলেন, আজও ঈদের উৎসবের ন্যায় ঢাকামুখী মানুষের ঢল ছিল। করোনা বলে কিছু আছে- এমনটি যেন তাদের মনেই নেই। তারা একে অন্যের সঙ্গে গায়ে গা লাগিয়ে পরিবহনে উঠতে প্রতিযোগিতায় মত্ত। ঢাকামুখী লোকজনের এতই চাপ যে আমরা গাড়িগুলোকে পাকিং ইয়ার্ড ও রাস্তার বাইরে পাশের নৌ পুলিশের অফিসের মাঠে পাঠিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছি।
তিনি বলেন, সকাল থেকে এ রুটে ১০টি ফেরি চলাচল করছে। প্রতিটি ফেরিতে মানুষ আর মানুষ।
আরএআর/এমএস
Advertisement