ধর্ম

দাজ্জালের ফেতনা থেকে বাঁচতে জুমআর দিনের আমল

কুরআনুল কারিমের বর্ণনায় দাজ্জালের আবির্ভাবের কথা রয়েছে। দাজ্জালের ফেতনা তথা আক্রমণ হবে ভয়াবহ। তবে কোন সময় এ দাজ্জাল আসবে সে সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট কোনো সময় কারো জানা না নেই। আর তা থেকে বাঁচতে আল্লাহর সাহায্যের বিকল্প নেই।

Advertisement

জুমআর দিনের একটি আমলেই দাজ্জালর ফেতনা থেকে মুক্তি পাবে মুমিন। জুমআর দিনের বিশেষ আমল হলো সুরা কাহফ তেলাওয়াত করা। এর তেলাওয়াতে বান্দার ওপর সাকিনাহ বা প্রশান্তি নাজিল হয়। আর এ সুরার তেলাওয়াতে দাজ্জালের ফেতনা থেকেও মুক্তি পাওয়া যায়।

দাজ্জালের ফেতনা থেকে মুক্তির ব্যাপারে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাদিসে ঘোষণা করেন-- হজরত আবু দারদা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি সুরা কাহফের প্রথম দশটি আয়াত মুখস্ত করে রাখবে, তাকে দাজ্জালের ফেতনা থেকে রক্ষা করা হবে। (মুসলিম, তিরমিজি, আবু দাউদ, নাসাঈ, মুসনাদে আহমদ, ইবনে হিব্বান)

- মুসনাদে আহমদে এসেছে, ‘যে ব্যক্তি সুরা কাহফের প্রথম দশটি আয়াত মুখস্ত করবে, তাকে দাজ্জালের ফেতনা থেকে রক্ষা করা হবে। অবশ্য তিরমিজিতে তিন আয়াতের কথা উল্লেখ রয়েছে।

Advertisement

জুমআর দিন সুরা কাহফের তেলাওয়াতের ফজিলতে শুধু দাজ্জালের ফেতনা থেকেই মুক্তি নয়, বরং রয়েছে গোনাহ মাফ ও প্রশান্তি লাভেরও ঘোষণা। হাদিসে এসেছে-

- শুধু দাজ্জালের ফেতনাই নয়, যে ব্যক্তি সুরা কাহফের প্রথম এবং শেষ অংশ তেলাওয়াত করবে; তার জন্য তা মাথা থেকে পা পর্যন্ত নূর হবে। আর যে ব্যক্তি সম্পূর্ণ সুরাটি তেলাওয়াত করবে সে জমিন থেকে আসমান পর্যন্ত নূর লাভ করবে। (মুসনাদে আহমদ)

- হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মুগাফফাল রাদিয়াল্লাহু আনহুর বর্ণনায় এসেছে, ‘যে ঘরে কোনো রাতে এ সুরা তেলাওয়াত করা হয়; সে রাতে ঐ ঘরে শয়তান প্রবেশ করতে পারে না।' (সুবাহানাল্লাহ!)

- হজরত উবাইদ ইবনে হুজায়ের রাদিয়াল্লাহু আনহু (একবার) সুরা কাহফ তেলাওয়াত করছিলেন। তাঁর ঘরে একটি চতুষ্পদ জন্তু ছিল। সে ছুটাছুটি করতে লাগলো। তিনি লক্ষ্য করলেন, আকাশে এক খণ্ড মেঘ তাঁর ঘরের উপর ছায়া বিস্তার করে রয়েছে। এ সাহাবি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর খেদমতে উপস্থিত হয়ে এ ঘটনা বর্ণনা করলেন। বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, এটি হলো সাকিনাহ, যা আল্লাহ তাআলা কুরআন তেলাওয়াতের কারণে নাজিল করেছেন। (বুখারি, মুসলিম ও মুসনাদে আহমদ)

Advertisement

সুতরাং জুমআর দিনের বিশেষ আমল সুরা কাহফ তেলাওয়াতের মাধ্যমে হাদিসে ঘোষিত দাজ্জালের ফেতনাসহ যাবতীয় নেয়ামত লাভ করা মুমিন মুসলমানের একান্ত কর্তব্য। রমজানের দ্বিতীয় দশকের ক্ষমা লাভ এবং মহামারি করোনা থেকে মুক্তি লাভে মহান আল্লাহর সাকিনাহ বা প্রশান্তি অর্জন করা প্রত্যেক মমিন মুসলমানের জন্যই আবশ্যক।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে জুমআর দিনে সুরা কাহফ তেলাওয়াত করার তাওফিক দান করুন। দাজ্জালের ফেতনা থেকে মুক্ত থাকার তাওফিক দান করুন। আল্লাহর সাকিনাহ তথা প্রশান্তি লাভের মাধ্যমে মহামারি করোনা থেকে মুক্তির তাওফিক দিন। গোনাহ থেকে মুক্তি দিন। আমিন।

এমএমএস/এমএস