অর্থনীতি

ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য চাওয়া হয়েছে ১১০০ কোটি টাকা

করোনা পরিস্থিতিতে এসএমই খাতের জন্য ঘোষিত প্যাকেজে ব্যাংকিং ব্যবস্থার আওতাবহির্ভূত অতিক্ষুদ্র ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের ঋণ সহায়তার জন্য সিড মানি হিসাবে এক হাজার ১০০ কোটি টাকা চেয়েছে শিল্প মন্ত্রণালয়। সিড মানি দিয়ে অতিক্ষুদ্র ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য এসএমই ফাউন্ডেশন ৫০০ কোটি টাকা এবং বিসিক ৬০০ কোটি টাকার ঋণ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করবে। বুধবার শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

Advertisement

কোভিড-১৯ এর প্রাদুর্ভাবের কারণে অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের উদ্যোক্তাগণের অপেক্ষাকৃত বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে শিল্প মন্ত্রণালয় এ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। শিল্প মন্ত্রণালয় ৩০ এপ্রিল এ সংক্রান্ত একটি পত্র অর্থ মন্ত্রণালয় বরাবর প্রেরণ করেছে।

সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, “প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ৫ এপ্রিল এসএমই খাতের জন্য ২০ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে এ খাতের প্রণোদনা প্যাকেজের অর্থ বিতরণের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক ১৩ এপ্রিল একটি পরিপত্র জারি করে। পরিপত্র অনুযায়ী বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহ ব্যাংক-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে ঋণ কার্যক্রম পরিচালনা করবে এবং ঋণ গ্রহণের ক্ষেত্রে ইতোপূর্বে ঋণগ্রহীতারা বিশেষ সুবিধা পাবেন।

এসএমই খাতের জন্য প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়নে সহযোগিতা প্রদান, করোনা পরিস্থিতিতে এসএমই খাতের সামগ্রিক বিষয় পর্যবেক্ষণ, করোনাপরবর্তী সময়ে অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র, কুটির ও মাঝারি শিল্প খাতের শিল্পউদ্যোক্তা, শ্রমিক ও সাপ্লাই চেইনের সঙ্গে জড়িতদের মূলধারায় ফিরিয়ে আনা এবং এ খাতসংশ্লিষ্টরা কীভাবে ঘুরে দাঁড়াতে পারে সে লক্ষ্যে কাজ করার জন্য ‘এসএমই খাত উজ্জীবন সংক্রান্ত কমিটি’ গঠন করা হয়। ১৬ এপ্রিল গঠিত শিল্প মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে ১১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটিকে এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ ও সুপারিশমালা তৈরির দায়িত্ব প্রদান করা হয়। এসএমই খাত উজ্জীবন সংক্রান্ত কমিটিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ ব্যাংক, বিসিক, এসএমই ফাউন্ডেশনসহ এসএমই খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ট্রেডবডিসমূহ, যেমন- বাংলাদেশ ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্প মালিক সমিতি (বিইআইওএ), জাতীয় ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প সমিতি, বাংলাদেশ (নাসিব) ও এফবিসিসিআইয়ের প্রতিনিধিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

Advertisement

২২ এপ্রিল ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত ‘এসএমই খাত উজ্জীবন সংক্রান্ত কমিটি’র প্রথম সভায় জানানো হয়, বর্তমানে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প খাতে প্রায় ১৫ শতাংশ উদ্যোক্তা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ব্যবসা করছেন। অবশিষ্ট ৮৫ শতাংশ উদ্যোক্তা আনুষ্ঠানিক ঋণ কার্যক্রমে জড়িত নন এবং তারা ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনায় আনুষ্ঠানিক হিসাব সংরক্ষণে অভ্যস্ত নন। সভায় আরও জানানো হয়, করোনার প্রাদুর্ভাবের সংকটকালে বেঁচে থাকার জন্য বাস্তবিকপক্ষে অতিক্ষুদ্র ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা এবং তাদের সঙ্গে সম্পৃক্তদের বেশি সহযোগিতা প্রয়োজন। সভায় এসব অতিক্ষুদ্র ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তার জন্য অতিজরুরি ভিত্তিতে সিড মানি সংগ্রহ করে এসএমই ফাউন্ডেশন ও বিসিকের উদ্যোগে বিশেষ ঋণ কর্মসূচি পরিচালনার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। গৃহীত সিদ্ধান্তের আলোকে বিশেষ ঋণ কর্মসূচি বাস্তবায়নে এসএমই ফাউন্ডেশন ও বিসিকের অনুকূলে মোট এক হাজার ১০০ কোটি টাকা সিড মানি হিসেবে বরাদ্দ প্রদানের অনুরোধ জানানো হলো।”

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর ২০১৯ সালের জরিপ অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে ৪৬ হাজার ২৯১টি উৎপাদন ইউনিটের মধ্যে ৮৭ শতাংশই ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প। দেশের উৎপাদন খাতের ৩৩ শতাংশ উৎপাদনই হয়ে থাকে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প এবং এ শিল্পের সঙ্গে ১৩ লাখ ৯১ হাজার শ্রমিক ও কর্মকর্তা-কর্মচারী জড়িত রয়েছেন।

এমইউএইচ/এমএআর/এমএস

Advertisement