মেয়াদ শেষে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার পদ থেকে বিদায় নিলেও এখনও পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থার ওয়েবসাইটে কমিশনার হিসেবে রয়ে গেছেন অধ্যাপক হেলাল উদ্দিন নিজামী।
Advertisement
দীর্ঘ ৯ বছর বিএসইসির কমিশনারের দায়িত্ব পালন করা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক হেলাল উদ্দিন নিজামীর চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের মেয়াদ শেষ হয় গত ৩ মে। এরপর দু’দিন কেটে গেলেও বিএসইসির ওয়েবসাইটে কমিশনার হিসেবে নিজামীর নাম রয়ে গেছে।
অথচ এর আগে গত ১৮ এপ্রিল বিএসইসির কমিশনারের পদ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের অধ্যাপক স্বপন কুমার বালা বিদায় নিলে ওই দিনই বিএসইসির ওয়েবসাইট থেকে তার নাম বাদ দেয়া হয়।
ওয়েবসাইটে কমিশনার হিসেবে নিজামীর নাম থাকার বিষয়ে বিএসইসির এক কর্মকর্তা বলেন, হেলাল উদ্দিন নিজামী খুবই প্রভাবশালী। যে কারণে আইনে সুযোগ না থাকার পরও ২০১৮ সালে কমিশনার হিসেবে মেয়াদ বাড়ানো হয়। এখন গুঞ্জন রয়েছে তিনি বিএসইসির চেয়ারম্যান হিসেবে ফিরে আসবেন।
Advertisement
ওয়েবসাইটে নিজামীর নাম থাকার পেছনে এটি কারণ কি-না? এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, এটা কারণ কি-না তা বলতে পারবো না। তবে এর আগে স্বপন কুমার বালা বিদায় নেয়ার পরপরই তার নাম ওয়েবসাইট থেকে বাদ দিয়ে দেয়া হয়। তখনও সরকারের সাধারণ ছুটি ছিল, এখনও সাধারণ ছুটি চলছে। তাছাড়া সাধারণ ছুটির মধ্যে কমিশন সভাও হয়েছে এবং কমিশন সভার সিদ্ধান্ত ওয়েবসাইটে আপলোড করা হয়েছে। এখন আপনারাই বুঝে নেন কেন হেলাল উদ্দিনী নিজামীর নাম ওয়েবসাইটে রয়েছে।
কমিশনার হিসেবে বিএসইসির ওয়েবসাইটে হেলাল উদ্দিন নিজামীর নাম থাকার কারণ জানতে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটির নির্বাহী পরিচলক ও মুখপাত্র মো. সাইফুর রহমানের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
২০১০ সালে মহাধসের পর তদন্ত কমিটির সুপারিশে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি পুনর্গঠন করে সরকার। এরই অংশ হিসেবে ২০১১ সালে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটির দায়িত্ব পান অধ্যাপক হেলাল উদ্দিন নিজামী। দীর্ঘ ৯ বছর দায়িত্ব পালনের পর সম্প্রতি তার মেয়াদ শেষ হয়েছে। নিয়োগ পাওয়ার পর তার মেয়াদ দুই দফা বাড়ানো হয়।
অথচ বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন আইন, ১৯৯৩ সালের ৫ এর ৬ উপধারায় বলা আছে, বিএসইসির চেয়ারম্যান ও কমিশনাররা শুধুমাত্র একটি মেয়াদের জন্য পুনর্নিয়োগের যোগ্য হবেন।
Advertisement
এদিকে শেয়ারবাজারে টানা দরপতনের প্রেক্ষিতে গত দুই বছর ধরে দফায় দফায় বিনিয়োগকারীরা মতিঝিলের রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছেন। এসব বিক্ষোভ ও মানববন্ধন থেকে দরপতনের জন্য বিএসইসির চেয়ারম্যান খায়রুল হোসেন ও কমিশনার হেলাল উদ্দিন নিজামীকে দায়ী করে তাদের পদত্যাগ দাবি করেন বিনিয়োগকারীরা। সেই সঙ্গে পুরো কমিশন পুনর্গঠনের দাবিও জানান তারা। তবে সব পেছনে ফেলে টানা ৯ বছর বিএসইসির দায়িত্ব পালন করে হেলাল উদ্দিন নিজামী।
এদিকে বিএসইসির কমিশনার পদ থেকে বিদায় নিলেও হেলাল উদ্দিন নিজামী নিয়ন্ত্রক সংস্থাটির চেয়ারম্যান হিসেবে ফিরে আসতে পারেন বলে গুঞ্জন রয়েছে। তবে শেয়ারবাজারের স্টেকহোল্ডারদের বড় অংশই নিজামীর বিপক্ষে রয়েছেন। বিভিন্ন প্রোগ্রামে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) কঠোর সমালোচনা করায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এই অধ্যাপক প্রভাবশালী স্টেকহোল্ডারদের চক্ষুশূলে পরিণত হয়েছেন।
এমএএস/এনএফ/পিআর