জাতীয়

ঈদের ছুটিতে বন্ধ থাকবে দূরপাল্লার বাস

আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতরের ছুটিতে আন্তঃজেলা পরিবহন বা দূরপাল্লার বাস বন্ধ থাকবে। সোমবার (৪ মে) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে ‘করোনাভাইরাস জনিত রোগ কোভিড-১৯’ এর বিস্তার রোধকল্পে শর্তসাপেক্ষে সাধারণ ছুটি/চলাচলে নিষেধাজ্ঞা বর্ধিতকরণ’ আদেশে এ কথা জানানো হয়েছে। নির্দেশনাগুলো প্রধানমন্ত্রী অনুমোদন করেছেন বলে আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে।

Advertisement

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ২৪ বা ২৫ মে দেশে মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে। দূরপাল্লার বাস বন্ধ থাকায় এবার যে যে এলাকায় অবস্থান করছেন সেখানেই ঈদ উদযাপন করতে হবে।

আদেশে বলা হয়, সরকার সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় আগামী ৫ মে’র পর শর্তসাপেক্ষে ছুটি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আগামী ৭ মে থেকে ১৪ মে পর্যন্ত সাধারণ ছুটি/চলাচলে নিষেধাজ্ঞা/সীমিত করা যেতে পারে। ৬ মে’র বুদ্ধ পূর্ণিমার ছুটি ৮ ও ৯ মে এবং ১৫ ও ১৬ মে’র সাপ্তাহিক ছুটিও এরসঙ্গে যুক্ত হবে।

এতে বলা হয়, ‘সব মন্ত্রণালয় বিভাগ তাদের নিয়ন্ত্রণাধীন অফিসসমূহ প্রয়োজনানুসারে খোলা রাখবে সেই সঙ্গে তাদের অধিক্ষেত্রের কার্যাবলি পরিচালনার জন্য সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা জারি করবে।’

Advertisement

আদেশে আরও বলা হয়, ঈদুল ফিতরের সরকারি ছুটিতে কেউ কর্মস্থল ত্যাগ করতে পারবে না ওই সময় আন্তঃজেলা পরিবহন বন্ধ থাকবে।

অন্যান্য নির্দেশনা

>>সাধারণ ছুটি/চলাচলে নিষেধাজ্ঞাকালে এক জেলা থেকে অন্য জেলায় এবং এক উপজেলা থেকে অন্য উপজেলায় জনসাধারণের চলাচল কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত থাকবে। জেলা প্রশাসন বা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এই নিয়ন্ত্রণ সতর্কভাবে বাস্তবায়ন করবে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধকল্পে জনগণকে অবশ্যই ঘরে অবস্থান করতে হবে। রাত ৮টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত অতীব জরুরি প্রয়োজন ছাড়া (প্রয়োজনীয় ক্রয়-বিক্রয়, ওষুধ ক্রয়, চিকিৎসাসেবা, মৃতদেহ দাফন/সৎকার ইত্যাদি) কোনোভাবেই বাড়ির বাইরে আসা যাবে না।

>>এই ছুটি চলাচল/নিষেধাজ্ঞাকালীন জনগণ ও সব কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের জারিকৃত নির্দেশমালা কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে।

Advertisement

>>রমজান এবং ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে সীমিত পরিসরে ব্যবসা বাণিজ্য চালু রাখার স্বার্থে দোকানপাট খোলা রাখা যাবে। তবে ক্রয়-বিক্রয়কালে পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন করতে হবে। বড় বড় শপিং মলের প্রবেশ মুখে হাত ধোয়ার ব্যবস্থাসহ স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রাখতে হবে। শপিংমলে আগত যানবাহন অবশ্যই জীবাণুমুক্ত করার ব্যবস্থা রাখতে হবে। দোকানপাট এবং শপিং মলগুলো অবশ্যিকভাবে বিকেল ৫টার মধ্যে বন্ধ করতে হবে।

>>সাধারণ ছুটি/নিষেধাজ্ঞাকালীন জরুরি পরিসেবা যেমন- বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস ও অন্যান্য জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, বন্দরসমূহের (স্থলবন্দর, নদীবন্দর ও সমুদ্রবন্দর) কার্যক্রম টেলিফোন ও ইন্টারনেট, ডাক সেবা এবং এ সংশ্লিষ্ট সেবা কাজে নিয়োজিত যানবাহন ও কর্মীরা এ ছুটির বাইরে থাকবেন।

>>সড়ক ও নৌপথে সকল প্রকার পণ্য পরিবহনের কাজে নিয়োজিত যানবাহন (ট্রাক, লরি, কার্গো ভেসেল প্রভৃতি) চলাচল অব্যাহত থাকবে।

>>কৃষিপণ্য, সার, কীটনাশক, খাদ্য, শিল্পপণ্য, রাষ্ট্রীয় প্রকল্পের মালামাল, কাঁচাবাজার, খাবার, ওষুধের দোকান, হাসপাতাল ও জরুরি সেবা এবং এসবের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মীদের ক্ষেত্রে এ ছুটি প্রযোজ্য হবে না।

>>চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত চিকিৎসক ও কর্মী এবং ওষুধসহ চিকিৎসা সরঞ্জামাদি বহনকারী যানবাহন ও কর্মী, গণমাধ্যম (ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়া) এবং ক্যাবল টিভি নেটওয়ার্কে নিয়োজিত কর্মীরা সাধারণ/চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আওতাবহির্ভূত থাকবেন।

>>ওষুধশিল্প, উৎপাদন ও রফতানিমুখী শিল্পসহ সকল কারখানা কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের নিরাপত্তা এবং স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করে চালু রাখতে পারবে। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের প্রণীত ‘বিভিন্ন শিল্প কারখানায় স্বাস্থ্য বিধি নিশ্চতকরণে নির্দেশনা প্রতিপালন’ নিশ্চিত করতে হবে।

>>পরিস্থিতি বিবেচনা করে পরবর্তী সময়ে শিল্প-কারখানা, কৃষি এবং উৎপাদন ও সরবরাহ ব্যবস্থার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রগুলো পর্যায়ক্রমে উন্মুক্ত করা হবে।

>>ছুটিকালীন কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখা যাবে না।

>>রমজান, ঈদ এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের সুবিধা বিবেচনায় ব্যাংকিং ব্যবস্থা চালু রাখার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেবে।

আরএমএম/এইচএ/এমকেএইচ