রোজায় যতই স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেয়া হোক না কেন, কিছু মুখরোচক খাবার খাওয়া হয়ে যায়-ই। কাঁটায় কাঁটায় নিয়ম মেনে আর কে-ই বা খেতে পারে! তাই রোজায় পেটের সমস্যা হওয়াটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। পেটে সমস্যা বিভিন্ন ধরণের হয়ে থাকে। পেটের ফোলাভাব, পেট ফাঁপা, গ্যাসের সমস্যা-খুবই পরিচিত। আসলে আমাদের পাকস্থলী একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ পর্যন্ত খাবার হজম করতে পারে। তার থেকে বেশি হয়ে গেলেই পেটে গ্যাসের সমস্যা হয়।
Advertisement
তলপেটে চরম অস্থিরতা অনুভব হলে এবং একইসঙ্গে আপনার পেট যদি স্বাভাবিক আকারের থেকে অনেকটা ফুলে যায়, তাহলেই বুঝবেন পেট ফাঁপার সমস্যা হয়েছে। পাকস্থলিতে অতিরিক্ত গ্যাস জমলে পেট ফাঁপার সমস্যা হতে পারে। এছাড়াও যেসব কারণে পেট ফেঁপে যেতে পারে-
* প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে খাবার না খাওয়া।* অতিরিক্ত হারে ধূমপান করা।* কর্মক্ষেত্রে অতিরিক্ত স্ট্রেস।* অলস জীবনযাপন।* খাওয়ার সময় বারবার পানি পান করা।* রাতের খাবার খাওয়া হয়ে গেলেই শুয়ে পড়া।* অতিরিক্ত বাঁধাকপি বা শাক জাতীয় খাবার খাওয়া।
এই খাবারগুলো পেট ফাঁপা দূর করতে সাহায্য করবে:
Advertisement
আদা: পেটের যেকোনো সমস্যার প্রাকৃতিক চিকিৎসা হলো আদা। পেট ফাঁপার সমস্যা দূর করার জন্য একেবারে আদর্শ এটি। আদায় থাকা অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদন হজমে সাহায্য করে এবং পেটে গ্যাস জমতে দেয় না। তাই শুকনো আদা বা আদা দিয়ে চা বানিয়ে খেতে পারেন পেট ফোলা থাকাকালীন। ধীরে ধীরে পেটে জমা গ্যাস বেরিয়ে যাবে।
শসা: শসা পেট ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে। এতে রয়েছে ফ্লাভানয়েড এবং অ্যান্টি ফ্লেমেটরি উপাদান যা পেটে গ্যাস তৈরি হওয়ার হাত থেকে আটকায়। তাই খাবার সময় পাতে শসা রাখুন সালাদ হিসেবে। হজম হওয়ার সাথে সাথে এটি হেলথের জন্য খুব ভালো।
পেঁপে: পেঁপে পেট ফাঁপার সমস্যা দূর করতে বিশেষভাবে কার্যকর। এর মধ্যে থাকা পাপায়া নামক এনজাইম হজমশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। একইসঙ্গে আপনার যদি প্রতিদিন পেঁপে খাওয়ার অভ্যাস থাকে, তাহলে গ্যাসের সমস্যা আপনার ধারে-কাছে ঘেঁষবে না।
দই: দই খাবার হজম করাতে বিশেষভাবে সাহায্যকারী। তাই দই খেলেও পেট ফাঁপার সমস্যা দূর হয়। তবে অনেকের দই সহ্য হয় না। গ্যাস হয়। তাই যাদের দই খাওয়া নিয়ে সমস্যা আছে তারা এটি এড়িয়ে যান। বাকিরা কিন্তু খেতে পারেন। তবে অবশ্যই টকদই।
Advertisement
কলা: কলায় রয়েছে স্যলুবল ফাইবার, যা কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যাকে দূরে রাখে এবং পাকস্থলি থেকে সোডিয়াম বের করে দিতে সাহায্য করে। যার ফলে গ্যাসের সমস্যা হয় গায়েব। প্রতিদিন একটা করে কলা খাওয়া স্বাস্থ্যের সাথে সাথে পেটের জন্য খুব ভালো।
টমেটো: টমেটো হলো ভরপুর পটাশিয়ামের উৎস। এটি শরীরে সোডিয়ামের মাত্রার ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। যার ফলে পেটে পানি জমা এবং পেট ফাঁপার সমস্যাও দূরে থাকে।
চিপস, আচার, পকোড়ার মতো লবণ-সমৃদ্ধ খাবার এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন। যাদের দুধ বা ল্যাক্টোজ জাতীয় খাবার সহ্য হয় না, তারা দুধ বা দুগ্ধজাত সবরকম খাবারই এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন। তা না হলে কিন্তু পেট ফাঁপার প্রকোপ বাড়বে। খাওয়ার জন্য হাতে সময় রাখুন। তাড়াহুড়ো করে পানি দিয়ে গিলে খাবার খাবেন না, এতে খাবার হজম হয় না। ভালো করে চিবিয়ে খান।
এইচএন/পিআর