আন্তর্জাতিক

করোনার ১৪টি ভ্যাকসিন শনাক্ত করেছে হোয়াইট হাউস

করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন তৈরিতে হোয়াইট হাউসের একদল বিজ্ঞানী অপারেশন ওয়ার্প স্পিড নামের একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছেন। এই প্রকল্পের আওতায় হোয়াইট হাউসের বিজ্ঞানীরা করোনার ভ্যাকসিন তৈরিতে কাজ করছেন। মার্কিন এই বিজ্ঞানীরা বলেছেন, তারা করোনাভাইরাসের সম্ভাব্য ১৪টি ভ্যাকসিন শনাক্ত করে কাজ এগিয়ে নিচ্ছেন।

Advertisement

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের সারা মুরের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অপারেশন ওয়ার্প স্পিড নামটি বিজ্ঞানীরা পছন্দ করেছেন। একটি ভ্যাকসিন তৈরির কাজ ঘিরে সৃষ্ট সব ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে কাজ এগিয়ে নেবেন বিজ্ঞানীরা।

তিনি বলেছেন, ভ্যাকসিনের দ্রুত উৎপাদন, বণ্টন এবং অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে কারা আগে পাবেন; সেসব সমাধানের জন্য তারা (বিজ্ঞানীরা) ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছেন।

রোববার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ফক্স নিউজকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, আমরা অত্যন্ত আত্মবিশ্বাসী- চলতি বছরের শেষের দিকেই ভ্যাকসিন পাবো।

Advertisement

অন্যদিকে, দেশটির শীর্ষ সংক্রামক ব্যাধি বিশেষজ্ঞ ডা. অ্যান্থনি ফউসি এনবিসি নিউজকে বলেছেন, আগামী বছরের শুরুর দিকে একটি ভ্যাকসিন পাওয়ার সম্ভাবনা আছে।

তিনি বলেন, উৎপাদন শুরু করার আগে পর্যন্ত আপনি নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারবেন না। ঝুঁকি নিয়েই এর উৎপাদন শুরু করতে হবে। ধরে নিতে হবে যে, এই ভ্যাকসিন কাজ করবে। তারপর উৎপাদন বাড়াতে হবে। আশা করছি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ভ্যাকসিন পাওয়া যাবে।

ফওসি বলেন, আমরা দ্রুত সামনের দিকে অগ্রসর হতে চাই। কিন্তু ভ্যাকসিনটি যে নিরাপদ এবং কার্যকরী হবে সেটিও নিশ্চিত করতে চাই। আমি মনে করি, এটি করা সম্ভব হবে।

রোববার হোয়াইট হাউসের করোনা মোকাবিলায় গঠিত কমিটির সমন্বয়ক ডা. দেবোরাহ বার্ক্স বলেছেন, কাগজে কলমে জানুয়ারির আগে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন পাওয়া সম্ভব নয়। তবে এজন্য সঠিকভাবে সব কার্যক্রম সম্পন্ন হওয়া দরকার।

Advertisement

আগামী বছর শুরুর আগে করোনার একটি ভ্যাকসিন পাওয়া কতটা বাস্তবসম্মত- এমন প্রশ্ন করা হলে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজকে তিনি বলেন, ভ্যাকসিন তৈরিতে কমপক্ষে ১২ থেকে ১৮ মাস সময়ের দরকার।

গত মার্চে যুক্তরাষ্ট্রের সিয়াটলে প্রথমবারের মতো মানবদেহে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিনের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করা হয়। এই ভ্যাকসিনের পরীক্ষামূলক প্রয়োগের ফল এখনও আসেনি।

ভ্যাকসিনটির কার্যকারিতা প্রমাণিত হলে দেশটির ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা অনুমোদন দিতে পারে। কিন্তু আদৌ এই ভ্যাকসিন করোনাভাইরাসকে প্রতিরোধ করতে পারবে কিনা; সেটি জানতে চূড়ান্ত ফল না আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হচ্ছে।

প্রাণঘাতী করোনায় আক্রান্ত হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ৬৮ হাজার ৬০২ জন; যা বিশ্বে একক কোনো দেশে সর্বোচ্চ। এছাড়া দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১১ লাখ ৮৮ হাজার ৪২১ এবং সুস্থ হয়েছেন ১ লাখ ৭৮ হাজার ৫৯৪ জন।

গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের উহানে চার হাজারের বেশি মানুষের প্রাণ কেড়ে বিশ্বের দুই শতাধিক দেশে ছড়িয়ে পড়া এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৫ লাখ ৬৭ হাজারের বেশি মানুষ। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে মারা গেছেন ২ লাখ ৪৮ হাজার ৩১৩ জন।

দেশে দেশে তাণ্ডব চালানো এই ভাইরাসের কোনো ভ্যাকসিন কিংবা ওষুধ এখন পর্যন্ত আবিষ্কার করতে পারেননি বিজ্ঞানীরা। তবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শতাধিক ভ্যাকসিন এবং ওষুধ তৈরির প্রকল্প চলমান রয়েছে। ইতোমধ্যে ছয়টি ভ্যাকসিন মানবদেহে পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করা হয়েছে।

এসআইএস/জেআইএম