প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সমস্যা আসবেই, আর তা মোকাবিলা করে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। আমরা প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করি। আমরা মনুষ্যসৃষ্ট সেই অগ্নিসন্ত্রাস থেকে শুরু করে নানা ধরনের দুর্যোগ মোকাবিলা করেছি। কাজেই এই করোনাভাইরাস দুর্যোগও আমরা ইনশাআল্লাহ কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হবো। এটা আমরা বিশ্বাস করি।
Advertisement
সোমবার রংপুর বিভাগের পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, নীলফামারী, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, রংপুর এবং গাইবান্ধা জেলার সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের সূচনা বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের একটাই দুঃখ জাতির পিতার যে আকাঙ্ক্ষা ছিল বাংলাদেশকে ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত আমরা করে গড়ে তুলবো। ইতোমধ্যে দারিদ্র্যমুক্ত আমরা করেছিলাম। আরও সুষ্ঠু পরিবেশ থাকলে এই ২০২১ সালের মধ্যে আমরা দারিদ্র্য আরও কমাতে পারতাম। কিন্তু বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের কারণে সেটা স্থবির হয়ে গেছে। আমি আশাবাদী আমাদের যে অগ্রযাত্রা, সবাই মিলে কাজ করলে সেটা অব্যাহত রাখতে পারবো।
তিনি বলেন, কৃষি আমাদের দেশের সব থেকে বড় সম্পদ। এখন যেহেতু সারাবিশ্বে অর্থনৈতিক স্থবিরতা এসে গেছে, সেখানে একটা দুর্ভিক্ষ দেখা দিতে পারে। এই দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য, নিজের দেশকে যেমন আমরা রক্ষা করবো, পাশাপাশি অন্যান্য দেশ, ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি দেশ আমাদের কাছে সহযোগিতা চেয়েছে। আমরা খাদ্য পাঠিয়েছি, সহযোগিতা পাঠিয়েছি এবং আরও হয়তো আমাদের পাঠাতে হবে। সেই জন্য আমাদের এক ইঞ্চি জমিও যেন পড়ে না থাকে।
Advertisement
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আমাদের একটা জিনিস দিয়ে গেছেন, যে আমাদের জমি অত্যন্ত উর্বর। জাতির পিতা মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের পর, অনেকে তাকে জিজ্ঞাসা করেছিল স্থবির অবস্থা তিনি কীভাবে কাটাবেন। তিনি বলেছিলেন আমার মাটি অত্যন্ত উর্বর। আমার মাটি আছে, আমার মানুষ আছে। আমরা এই মাটি আর মানুষ নিয়েই দেশকে গড়তে পারবো। আমিও জাতির পিতার সেই আদর্শে বিশ্বাস করি। আমি আপনাদের অনুরোধ করবো- এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে। আর এখন যেমন ধান কাটলাম, কাটার সাথে সাথে সেই মাঠে যেখানে রোপা, আউশ… বা তার বাইরে কী লাগানো যায়।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ইতোমধ্যে আমি কৃষিমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি, এই যে মাঠ খালি থাকবে, সেখানে কী লাগানো যেতে পারে, কোন ফসল উৎপাদন হতে পারে সহজে। তরিতরকারি, মাশরুম থেকে শুরু করে কী হতে পারে, সেটা দেখে সেই জায়গার মাটি টেস্ট করে সে জিনিসগুলোর যেন উৎপাদন বাড়ে। অর্থাৎ যা কিছুই হোক উৎপাদন হোক কিছু। মানুষের ঘরে একটু খাবার থাকুক বা বাইরে সাহায্য-সেবা যেন আমরা দিতে পারি। সেটার ব্যবস্থা যেন আমরা করতে পারি।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমরা একটি লক্ষ্য নিয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলাম। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে অর্থনীতি থমকে দাঁড়িয়েছে। আমি জানি এটার প্রভাব পড়বে আগামীতেও। আন্তর্জাতিক সংস্থা এই পরিস্থিতিকে মহামারি ঘোষণা দিয়েছে। বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে আমরা যখন এগিয়ে যাচ্ছিলাম জাতি এর সুফল পেতে শুরু করেছিল হঠাৎ করে আঘাত আসলো। এটা শুধু বাংলাদেশে নয় সারাবিশ্বে যেহেতু এটা এসেছে স্বাভাবিকভাবেই এই অবস্থা মোকাবিলা করার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।
তিনি দেশবাসীকে ঈদের আগাম শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, পবিত্র রমজান মাসে এবার একটু ভিন্নভাবে পালন হচ্ছে। কেন এভাবে পালিত হচ্ছে তা আপনারা সবাই জানেন। করোনাভাইরাস আমাদের মাঝে মহাবিপর্যয় হিসেবে এসেছে।
Advertisement
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পবিত্র রমজান মাসে আপনারা আমার শহীদ বাবা-মা ও পরিবারের সদস্যদের জন্য দোয়া করবেন। এছাড়া আমি দেশবাসীকে আগাম শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।
এমএএস/বিএ/জেআইএম