ইতালির সবচেয়ে বেশি করোনাভাইরাস সংক্রমিত এলাকা মিলানো লম্বারদিয়া। সেখানে প্রায় এক লাখের মতো বাংলাদেশি বসবাস করে। এরই মধ্যে করোনার ছোবলে দেশটিতে ৮ প্রবাসী বাংলাদেশি মারা গেছেন।
Advertisement
এদিকে সরকার গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা বাংলাদেশিদের প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে আর্থিক সহায়তা দিতে প্রতিটি দূতাবাসে অর্থ বরাদ্দ দেয়। এরই ধারাবাহিকতায় মিলান কনস্যুলেট অফিসে প্রবাসী যারা আর্থিক টানাপোড়েনের মধ্যে রয়েছে তাদের জন্য ১০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
কিন্তু ওই বরাদ্দ পেতে অবশ্যই প্রবাসীকে করোনায় আক্রান্ত রোগী হতে হবে। কনস্যুলেট অফিসের এ রকম বিজ্ঞপ্তিতে প্রবাসীদের মাঝে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। উত্তর ইতালিতে অবস্থানরত করোনা সমস্যায় বাংলাদেশিদের এমন শর্তজুড়ে বিজ্ঞপ্তি দেয় কনস্যুলেট জেনারেল মিলান অফিস।
সূত্রে জানা গেছে, এই সহায়তা পেতে যেসব শর্ত ও তথ্য রয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে রয়েছে করোনায় আক্রান্ত হতে হবে। ফলে প্রবাসীরা এ ধরনের শর্তকে তামাশা হিসেবে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। প্রবাসীদের প্রশ্ন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে বাসায় বা হাসপাতালে থেকে চিকিৎসা নিতে হয়।
Advertisement
সেক্ষেত্রে কিভাবে আবেদন করবে একজন করোনা রোগী। তাছাড়া আরেকটি শর্তে বৈধ অভিবাসীদের তথ্য প্রদানের কথা বলা হয়েছে। প্রবাসীদের প্রশ্ন হলো অবৈধ অসহায় অভিবাসীরা কিভাবে সহায়তা পাবে আবেদনের ক্ষেত্রে সে কথা উল্লেখ নেই বিজ্ঞপ্তিতে।
এখন পর্যন্ত প্রাণঘাতী এ ভাইরাসে ইতালিতে ৮ বাংলাদেশি মারা গেছে। এর মধ্যে ৭ জনই ইতালির উত্তরে। মৃতরা কনস্যুলেট জেনারেলের মিলানের আওতাধীন। ১০ লাখ টাকার মধ্যে মারা যাওয়া পরিবার কত পাবে এরপর অন্যদেরকে কত করে দেওয়া হবে এমন প্রশ্ন এখন প্রবাসীদের মাঝে ঘুরপাক খাচ্ছে। ইতালিতে ১ জন বাংলাদেশির বসবাসের জন্য ব্যয়ভার কমপক্ষে মাসিক ৩০ হাজার টাকা।
এ ব্যাপারে ক্ষুব্ধ প্রবাসীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। মিলান লোম্বারদিয়া আওয়ামী লীগ প্রচার সম্পাদক মামুন হাওলাদার লেখেন ‘এটাকে ব্রেকিং নিউজ না বলে পারলাম না। মিলান কনস্যুলেট জেনারেলের সাহায্য সহযোগিতা পেতে হলে অবশ্যই আপনাকে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হতে হবে’।
শেখ রিয়াজুল ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘ওরাই তো বড়ো কাঙ্গাল তাই মানুষকে দেবে কিভাবে। তাই কত অজুহাত দেখাবে। ওদের টাকা মিলান বাংলাদেশিদের দরকার নাই ওরাই খাইয়া মরুক’।
Advertisement
সাইদুর রহমান বলেন, ‘যারা কনস্যুলেটে কর্মরত আছেন। তাদের পরিবারে কেউ করোনায় আকান্ত হলে তাদের কাজে ব্যবহার করুক। কারণ সরকারি টাকা মারলে কোনো সমস্যা হবে না’।
ফজলুল হক বলেন, ‘ওনাদের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী বরাবর লিখতে হবে, আর কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে’।
এ ব্যাপারে জানতে মিলান কনস্যুলেট অফিস জেনারেল ইকবাল হোসেনকে একাধিকবার ফোন করেও পাওয়া যায়নি।
এমআরএম/এমকেএইচ