শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করে পোশাক কারখানা পরিচালনা করা যাবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
Advertisement
রোববার (৩ মে) স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে করোনা পরিস্থিতিতে শিল্প ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান সীমিত আকারে চালু রাখা সংক্রান্ত বিষয়াদি নিয়ে বৈঠক শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের বৈঠকের মূল বিষয় ছিল পোশাক শিল্প কারখানা কীভাবে আমাদের দেয়া স্বাস্থ্যবিধি পালন করবে। এ বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এরমধ্যে মূল ফোকাস, যেটা আমরা উনাদের বলেছি, ফ্যাক্টরি চালাবেন সেখানে যেন তারা কিছু নিয়মনীতি মেনে চলেন। স্বাস্থ্যসেবাটা যাতে আমাদের শ্রমিকরা পায়। তারা যেখানে কাজ করবেন সেখানে মিনিমাম যাতে একটা স্পেস মেইনটেইন করে কাজ করেন। তাদের পরিবহনটা যাতে সঠিক হয়। পরিবহনের মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়।’
তিনি বলেন, ‘তাদের (শ্রমিক) থাকার জায়গা, খাওয়ার জায়গা- এগুলোর বিষয়ে যেন তারা গুরুত্ব দেন। একইসঙ্গে তাদের কোয়ারেন্টাইন সেন্টার করার তাগিদ দেয়া হয়েছে। শ্রমিকরা আক্রান্ত হলে যাতে কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে রাখেন, সেই ব্যবস্থা যেন তারা করেন।’
Advertisement
ফ্যাক্টরিতে ঢোকার সময় শ্রমিকদের স্যানিটাইজেশনটা ভালোমতো করতে হবে জানিয়ে জাহিদ মালেক বলেন, ‘করোনার তিনটি হটস্পট ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর- এ তিনটি স্থানকে ভালোভাবে দেখার জন্য আমরা পুলিশ প্রশাসনকে বলেছি। এখান থেকে কেউ যাতে বাইরে না যায় ও ভেতরে না ঢোকে। সেই বিষয়ে বেশি নজরদারি করার জন্য বলেছি।’
পোশাক কারখানা অধ্যুষিত ওই তিন এলাকায় মালিকদের করোনা পরীক্ষার সুযোগ তৈরি করার জন্য বলা হয়েছে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘টেস্টের প্রয়োজন হলে তারা যাতে বেশি করে টেস্ট করতে পারেন। এ বিষয়টি তারা প্রতিপালন করবেন।’
‘সবচেয়ে বড় যে সিদ্ধান্তটা হয়েছে সেটা হলো, শিল্প বিশেষ করে গার্মেন্টসের শ্রমিকদের স্বাস্থ্যের দিকটা মনিটর করার জন্য একটি কমিটি করা। ফোকাল পয়েন্ট তৈরি করা। বিভিন্ন সাব-কমিটি করা।’
তিনি বলেন, ‘প্রতিটি ফ্যাক্টরি লেভেলেও যাতে করে একটা মেডিকেল টিম থাকে। তারা আমাদের নির্দেশনা পালনের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত হবে। যারা পর্যায়ক্রমে ন্যাশনাল কমিটির কাছে রিপোর্ট করবে প্রতিনিয়ত।’
Advertisement
মন্ত্রী বলেন, ‘কোথাও যদি খুব বেশি আক্রান্ত হয়, আমরা ওই পর্যায়ে যাব যখন ফ্যাক্টরি শাটডাউন করে দেব কিছুদিনের জন্য।’
শ্রমিকদের পরিবহন একটি বড় সংকট, এ বিষয়ে কোনো উদ্যোগ নেয়া হবে কিনা- জানতে চাইলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের উদ্যোগের কিছু নাই। মালিকরা এ বিষয়ে উদ্যোগ নেবেন। তাদের আমরা পরামর্শ দিয়েছি, আনা-নেয়া, থাকা-খাওয়া সব বিষয়ে তারা যেন আরও সতর্ক হন। সংক্রমণ যদি বেড়ে যায় তাহলে আমরা কোথাও জায়গা দিতে পারব না।’
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব আসাদুল ইসলাম বলেন, ‘ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর সংক্রমণের জন্য হটস্পট, সেখানে সংক্রমণ বেশি হয়েছে। কীভাবে আমরা এ স্থানগুলোকে আলাদা করে রাখতে পারি, স্বাস্থ্য নির্দেশিকা যাতে সবাই মেনে চলতে পারে। একইভাবে যদি তারা (শ্রমিক) সংক্রমিত হয় তবে তাদের কীভাবে আইসোলেট করে থাকতে হবে। তারা আইসোলেশন সেন্টার করবেন তাদের জন্য হাসপাতাল নির্ধারণ করবেন। এবং টেস্ট ফ্যাসিলিটি কীভাবে বাড়ানো যায় সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।’
সচিব বলেন, ‘বিজিএমইএ, বিকেএমইএসহ সবাই আন্তরিক, তাদের স্বার্থেই সংক্রমণ মিনিমাইজ করতে হবে। সংক্রমণমুক্ত রাখতে হবে তাদের ফ্যাক্টরির স্বার্থেই। সেই চেষ্টাই তারা আরও বাড়তি ব্যবস্থা নেবেন।’
আসাদুল ইসলাম বলেন, ‘এ জন্য তারা (মালিকরা) থার্মাল স্ক্যানারের ব্যবস্থা করবেন, তাপমাত্রা মাপার ব্যবস্থা করবে। বিভিন্ন সময় আমরা যে নির্দেশনা দিয়েছে সেগুলো তারা পালন করবেন।’
সভায় পুলিশ মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিজিএমইএ, বিকেএমইএ প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
আরএমএম/এসএইচএস/বিএ/জেআইএম/এমএস