যশোরের বেনাপোল থেকে উদ্ধার হওয়া ফটোসাংবাদিক ও দৈনিক পক্ষকালের সম্পাদক শফিকুল ইসলাম কাজলকে বেনাপোল পোর্ট থানা থেকে যশোরের উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। রোববার (৩ মে) দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে তাকে পোর্ট থানা পুলিশ হ্যান্ডকাপ পরিয়ে বিশেষ নিরাপত্তা দিয়ে নিয়ে যায়।
Advertisement
এর আগে ফটোসাংবাদিক কাজলকে পোর্ট থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুন খান ও নাভারন সার্কেলের এএসপি জুয়েল ইমরান জিজ্ঞাসাবাদ করেন। স্থানীয় কোনো সংবাদকর্মীকে এ ব্যাপারে কোনো বক্তব্য প্রদান করতে অপরাগতা প্রকাশ করেন তারা।
বিজিবির করা অবৈধ পারাপারের মামলায় তাকে যশোরে পাঠানো হয়েছে।
তবে পুলিশের একটি সূত্রে জানা গেছে, তাকে বেনাপোল থেকে যশোর ডিবি অফিসে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জিজ্ঞাসাবাদ করবেন। তারপর মাগুরা-১ আসনের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান শিখরের শেরেবাংলা নগর থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা মামলায় ঢাকায় পাঠানো হবে না-কি আদালতে পাঠানো হবে এটা এখনও নিশ্চিত করতে পারেনি ওই সূত্রটি।
Advertisement
শনিবার রাতে বেনাপোল সীমান্তের সাদিপুরের একটি মাঠের মধ্য থেকে সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলকে উদ্ধার করে যশোর ৪৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের রঘুনাথপুর বিজিবি ক্যাম্পের টহল দল। অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে মামলা দিয়ে তাকে গভীর রাতে বেনাপোল পোর্ট থানায় হস্তান্তর করে বিজিবি।
রঘুনাথপুর বিজিবি ক্যাম্পের কমান্ডার হাবিলদার আশেক আলী বলেন, রাতে বিজিবির টহল দলের সদস্যরা তাকে সাদিপুর সীমান্তের একটি মাঠের মধ্য থেকে উদ্ধার করে। অবৈধভাবে ভারত থেকে আসার সময় তাকে আটক দেখানো হয়। পরে তাকে বেনাপোল পোর্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়।
বেনাপোল পোর্ট থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুন খান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, রাত সাড়ে ৩টার দিকে ফটোসাংবাদিক শফিকুল কাজলকে সীমান্ত দিয়ে অবৈধ পারাপারের অভিযোগে বিজিবি একটি মামলা দিয়ে বেনাপোল পোর্ট থানায় হস্তান্তর করে। তাকে যশোরের উদ্দেশ্যে পাঠানো হয়েছে।
যুব মহিলা লীগ নেত্রী (বহিষ্কৃত) শামীমা নূর পাপিয়ার ওয়েস্টিন হোটেলকেন্দ্রিক কারবারে জড়িতদের নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনের কারণে মানবজমিনের প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীর বিরুদ্ধে যে মামলা হয়েছে তাতে আসামির তালিকায় শফিকুল ইসলাম কাজলের নামও রয়েছে। মাগুরা-১ আসনের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান শিখর গত ৯ মার্চ শেরেবাংলা নগর থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ওই মামলাটি করেন।
Advertisement
সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজল গত ১০ মার্চ সন্ধ্যায় দৈনিক পক্ষকাল অফিস থেকে বের হন। এরপর থেকে তার কোনো সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিল না। ফলে পরদিন ১১ মার্চ চকবাজার থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন তার স্ত্রী জুলিয়া ফেরদৌসী নয়ন। পরে ১৮ মার্চ রাতে কাজলকে অপহরণ করা হয়েছে অভিযোগ এনে চকবাজার থানায় মামলা করেন তার ছেলে মনোরম পলক।
তবে নিখোঁজের ঠিক ৩০তম দিনে (৯ এপ্রিল) ফটোসাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলের ফোন নম্বরটি বেনাপোলেই চালু হয়েছিল। তখন কাজল নিখোঁজের বিষয়টির তদন্ত কর্মকর্তা চকবাজার থানার এসআই মুন্সী আবদুল লোকমান বলেছিলেন, নিখোঁজ সাংবাদিক কাজলের ফোন নম্বরটি চালু হয়েছিল। লোকেশন দেখিয়েছে বেনাপোল। তবে করোনা পরিস্থিতির কারণে ও নম্বরটি চালু থাকার সময় কম হওয়ায় বেনাপোলে কোনো অভিযান চালানো সম্ভব হয়নি।
জামাল হোসেন/আরএআর/জেআইএম