রাশিয়ায় করোনার সংক্রমণ আশঙ্কাজনক হারে বাড়তে শুরু করেছে। নতুন রোগী শনাক্তের দিক দিয়ে দেশটি প্রায় প্রতিদিনই তার আগের দিনের রেকর্ড ছাপিয়ে যাচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে নতুন করে আরও ৯ হাজার ৬২৩ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে। একদিনে যা সর্বোচ্চ। গতকালও একদিনে ৭ হাজার ৯৩৩ শনাক্ত নিয়ে সর্বোচ্চ আক্রান্তের রেকর্ড ছিল।
Advertisement
করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে রুশ করোনাভাইরাস মোকাবিলা সদর দফতর থেকে এই তথ্য জানিয়ে বলা হচ্ছে, নতুন শনাক্ত রোগী নিয়ে দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমিত কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ২৪ হাজার ৫৪ জন। গতকাল যা ছিল ১ লাখ ১৪ হাজার ৪৩১।
সরকারি কর্তৃপক্ষ বলছে, গতকাল শুক্রবারের চেয়ে আজ শনিবার আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে ২০ শতাংশ। আশঙ্কা করা হচ্ছে, দেশটির হাসপাতালগুলো রোগীতে পূর্ণ হয়ে যাওয়ার পথে। যদি এভাবে কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা বাড়তেই থাকে তাহলে হয়তো হাসপাতালে অনেক রোগী চিকিৎসা পাবেন না।
রাশিয়ায় করোনার সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ দেশটির রাজধানী অঞ্চল মস্কো। এখন পর্যস্ত শুধু মস্কোতে ৬২ হাজার ৬০ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছে; যা দেশটির মোট করোনা আক্রান্ত রোগীর অর্ধেকেরও বেশি। করোনার বিস্তার রোধে লকডাউনের মতো পদক্ষেপ গ্রহণ করা সত্ত্বেও রাশিয়ায় সংক্রমণ আশঙ্কাজনক ও অতি দ্রতু বাড়ছে।
Advertisement
এদিকে আজ দেশটির মন্ত্রিসভার আরও দুজন সদস্যের দেহে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত করা হয়েছে। এর আগে গত বৃহস্পতিবার রুশ প্রধানমন্ত্রী মিখাইল মিশুস্তিন মহামারি করোনায় আক্রান্ত হন। প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে এক ভিডিও কনফারেন্সে আলোচনা চলাকালীন তিনি নিজে তার করোনায় আক্রান্ত হওয়ার খবর জানান।
এরপর উপপ্রধানমন্ত্রীকে অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে বলা হচ্ছে, প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বর্তমানে মস্কোর বাইরের একটি বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দেশ পরিচালনার কাজ করে যাচ্ছেন। সরকারের উচ্চ পর্যায়ে আরও অনেকের আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
চীনের পর করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের নতুন কেন্দ্র হয় ইউরোপ। এখন পর্যন্ত সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত মহাদেশের তালিকায় সবার উপরের নামটি ইউরোপের। কিন্তু প্রথমদিকে রাশিয়ায় সেভাবে করোনার সংক্রমণ পরিলক্ষিত হয়নি। কিন্তু গত কিছুদিনের মধ্যেই দেশটিতে কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে ১ হাজার ২২২ জন মারা গেছেন।
করোনাভাইরাস মোকাবিলা নিয়ে গঠিত দেশটির বিশেষ বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে, কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত প্রায় সোয়া লাখ মানুষের মধ্যে চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়েছেন ১৫ হাজারের কিছু বেশি। এছাড়া আক্রান্তদের মধ্যে চিকিৎসাধীন ২ হাজার ৩০০ রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক।
Advertisement
এসএ