সাহিত্য

মিলু শামসের দুটি কবিতা

হোমো সেপিয়েন্স

Advertisement

আজকাল সিনেমা দেখতে বসলেকাহিনী অতিক্রম করে চোখ যায়সেলুলয়েডের বাইরে-গোছানো গল্পের আড়ালেসেট, লাইট, শ্যুটিংস্পট ইত্যাদিতে।পোলানস্কির ‘পিয়ানিস্ট’ এরইহুদি বাদকের দমবন্ধকর লুকিয়ে থাকা,বাইরে নাৎসি বাহিনীর কামান, বোমারঝোড়ো গর্জন,মুড়ি মুড়কির মতো মানুষ মারা;হলিউডের ক্ল্যাসিক মেলোড্রামা‘সাউন্ড অব মিউজিক’ এরক্যাপ্টেন ভন ট্র্যাপ ও মারিয়া অগাস্টারদুর্দান্ত রোমান্টিক গানপ্রেম ও ঘনিষ্ঠতার আড়ালে উঁকি দেয়অপূর্ব লোকেশন ও সেটআবছা রাতের আবহ ফুটিয়ে তোলার দক্ষ কারিকুরি।স্পিলবার্গ কিংবা সত্যজিৎ, মৃণালের বেলায়ওএকই ব্যাপার-অভিনয়ের আড়াল সরিয়েগলা বাড়ায় বস্তুজগৎ।

ঘোরতর সংকট-মিকেল্যাঞ্জেলোর ভেভিড সরে গিয়েবেরিয়ে পড়লে পুরুষের নগ্নদেহ,মেরি ম্যাকডেলিনের কোলেযিশুর নিথর শরীর হয়ে গেলেভাস্করের কাদামাটির স্তূপ;শিল্প বিদায় নেয় যদিমানুষের মন ও মগজ থেকে-পৃথিবী কি তবে হেঁটে যাবে আবারআট লাখ বছর আগেহোমো সেপিয়েন্স যুগে?

শনাক্তহীন

Advertisement

কলাবতী ফুলের প্রসঙ্গ এলেবিলুপ্ত জনপদের মতোমানসচক্ষে ভাসেবহুবর্ণী এক পুরোনো ফুলের বাগান;পটভূমিতেশিল্পীর তুলিতে আঁকাস্বচ্ছ ছবির মতো সাদা চুনকাম করাছিমছাম দোতলা বাড়ি।পড়ন্ত বেলায়আরাম কেদারায় বসাবাড়ির বয়োজ্যেষ্ঠ সদস্যমালিদের বাগান পরিচর্যারতদারকি রত,চোখেমুখে তার ঠিকরে পড়েফুলের সৌরভ ও সৌন্দর্য মাখাসুখ সুখ অনুভব।

কলাবতী ফুলের প্রসঙ্গ এলেতথ্যসূত্রের মতোএই পুরো দৃশ্য মানসচক্ষেভেসে উঠলেওবর্তমান ফুলবিষয়ক গবেষণা থেকেতাদের রঙ রূপ বর্ণ-বৈচিত্র্যএকে একে মুছে যায়,চিত্রকল্পের গায়েফুটে ওঠেনাতিদীর্ঘ বাজারি ফর্দ,সেখানে বাগানের প্রকট অনুপস্থিতিতেফুলগুলো সবএকই মাপ ও আকারেবিন্যস্ত হয়ে পড়ে থাকে।

কলাবতী ফুলের প্রসঙ্গ এলেএখন আর কলাবতী কিংবা দোপাটিগন্ধরাজ বা নয়নতারাকেতাদের নিজ নিজ বৈশিষ্ট্যেআলাদাভাবে শনাক্ত করা যায় না।

এইচআর/বিএ/জেআইএম

Advertisement