রমজানের প্রতিটি ইবাদত মুমিনের জন্য রহমত। এ ইবাদত পালনে মুমিন মুসলমান নিজেদের হৃদয়কে রহমতের বারিধারায় সিক্ত করে নেয়। রহমতের অনুভূতির ফলে উপবাসের কষ্ট উপভোগ করে না রোজাদার। দিনভর সিয়াম সাধনায় কাটিয়ে ইফতারের মাধ্যমে রহমতের ফোটায় সিক্ত হওয়ার তৃপ্তি লাভ করে।
Advertisement
রমজানের রোজা ঈমানদারের হৃদয়ে শারীরিক মানসিক আত্মিক প্রশান্তি দেয়। যার ফলে রোজাদার দিনভর ইবাদত-বন্দেগিতে অতিবাহিত করে। ঈমান ও রহমতের শক্তিতে বলিয়ান হয় মুমিন।
এ মাসে মুমিন তিন কারণে ঈমানি শক্তি লাভ করে। রহমতে সিক্ত হয়। মুনের হৃদয়ে এ কথা বেশি উঁকিঝুঁকি দেয় যে, এ মাসেই আল্লাহ তাআলা মুমিন বান্দাকে দান করেছেন তিনটি রহমত। আর তাহলো-- এ মাসেই মুমিনের জন্য সেরা উপহার কুরআন নাজিল হয়।- রমজান মাসে রোজা পালন ফরজ হয়।- এ মাসেই মুমিন লাভ করে লাইলাতুল কদর।
মুমিন বান্দার জন্য এর চেয়ে বড় রহমত বা খুশির সংবাদ আর কি হতে পারে। কুরআন নাজিলের মাসে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত রোজাদার রহমতের ধারায় সিক্ত হয়। রোজা পালনে মহান আল্লাহর ফরজ ইবাদত পালন করার আত্মতৃপ্তি লাভ করে মুমিন। লাইলাতুল কদর লাভের আশায় নেচে ওঠে মুমিনের দেহ ও মন। আর তাতে রহমত লাভ করে মুমিন মুসলমান।
Advertisement
মুমিন মুসলমানের জন্য রহমত লাভের আরও অনেক কারণ রয়েছে। এ মাসে মুমিন মুসলমান প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অনুকরণে সিক্ত করে দেহ ও মন। যথাযথভাবে নামাজ রোজা পালনসহ রমজানের সব ইবাদত পালনে উদ্যোগী হয়। সব ইবাদত-বন্দেগিতে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে অনুসরণ ও অনুকরণ করেন।
মুমিন মুসলমান রোজা পালনের জন্য শেষ রাতে সাহরি গ্রহণের মাধ্যমে লাভ করে অসংখ্য বরকত ও কল্যাণ। আবার ইফতারের মাধ্যমে লাভ করে জান্নাতি প্রশান্তি। প্রিয় নবির এ ইফতার ও সাহরি ছিল সাধারণ। যেখানে ছিল না কোনো বাহারি আয়োজন ও বিলাসিতা কিংবা অপচয়। এমন ইফতার ও সাহরিতেই রহমত নাজিল হয়।
আবার নিজে ইফতার ও সাহরির করার পাশাপাশি অন্যকে নিজের ইফতার শামিল করাও ছিল প্রিয় নবির আদর্শ। তিনি হাদিসে অন্যকে নিজেদের ইফতার ও সাহরিতে অন্যকে শামিল করতে উৎসাহ দিয়েছেন। এতে ইফতার ও সাহরির আয়োজনকারীর জন্য রয়েছে দ্বিগুণ সাওয়াব ও রহমত।
এ রোজায় রয়েছে জান্নাত লাভ ও জাহান্নাম থেকে মুক্তির ঘোষণা। বান্দার জন্য এর চেয়ে বড় রহমত আর কি হতে পারে। মুমিন মুসলমান জান্নাত লাভ ও জাহান্নাম থেকে মুক্তির আনন্দে রমজানে রহমতের বারিধারায় নিজেকে সিক্ত করতে ইবাদত-বন্দেগিতে নিয়োজিত হয়।
Advertisement
মহামারি করোনার এ সময়ে আল্লাহ তাআলা বান্দার প্রতি তার রহমত আরও বাড়িয়ে দেবেন, যদি বান্দা শুধু তারই ইবাদত-বন্দেগিতে নিজেকে একনিষ্ঠভাবে নিয়োজিত করে। সুন্নাতের যথাযথ অনুসরণ করে। তখনই বান্দার রোজা ও রমজান হবে রহমতের বারিধারায় পরিপূর্ণ।
দুর্যোগ মহামারি আক্রান্ত সময়ে নিজে যেমন আল্লাহর ইবাদতে নিয়োজিত হবো। আবার সমাজের অসহায় মানুষকে ইফতার-সাহরি ও সাহায্য সহায়তায় অভাব লাগবে সচেষ্ট হওয়াও জরুরি। আর তাতে বয়ে আসবে রহমতের অবিরাম বারিধারায়। যে বারিধারায় সিক্ত হবে মুমিনের দেহ ও মন। দুনিয়ার এ পরিবেশেই অনুভূত হবে জান্নাতের প্রশান্তি।
এ রহমতে নিজেদের সিক্ত করতে রোজা ও রমজানের যথাযথ হক আদায় করে ইবাদত-বন্দেগিতে নিয়োজিত হওয়ার তাওফিক দিন হে প্রভু! মুক্তি দিন মহামারি করোনা থেকে। কবুল কুরুন মুমিন মুসলমানের হৃদেয়র সব আকুতি। আমিন।
এমএমএস/এমএস