বিনোদন

দিনে দুইবার রোজা রাখতাম : নাদিয়া

তারকাদের ধর্ম কর্ম নিয়ে ভক্তদের অনেক কৌতূহল। অনেকেই মনে করেন মিডিয়াতে কাজ করা তারকারা ধর্ম নিয়ে উদাসীন। কিন্তু এটি ভুল ধারণা। সব তারকাই যার যার ধর্ম পালন করে থাকেন।

Advertisement

মুসলিম তারকারাও রোজা রাখেন। রোজা নিয়ে শুটিং করেন, ব্যস্ত থাকেন নানা রকম কাজে। আর সবার মতো তাদেরও আছে রোজা রাখার অনেক মজার স্মৃতি। যা ফেলে আসা শৈশবে পড়ে আছে সোনালি স্মৃতি হয়ে।

মডেল, অভিনেত্রী ও নৃত্যশিল্পী নাদিয়া আহমেদ কিছু অভিজ্ঞতা জানালেন রোজা নিয়ে। জাগো নিউজের পাঠকদের জন্য তা তুলে ধরা হলো-

জাগো নিউজ : প্রথম রোজা রাখার মধুর স্মৃতি সম্পর্কে জানতে চাই......নাদিয়া : সেইভাবে মনে নেই আসলে কত বছর বয়সে প্রথম রোজা রেখেছিলাম। সম্ভবত পাঁচ বছর হবে। ছোটবেলায় তো রোজ দুইটা করে রোজা রাখতাম। দুপুর পর্যন্ত একটা, দুপুরের পর ইফতার পর্যন্ত আরেকটা।

Advertisement

জাগো নিউজ : প্রথম ইফতার বা সেহরির কোনো স্মৃতি কি মনে পড়ে......নাদিয়া : মনে নেই। তবে ছোটবেলায় ইফতার ও সেহরিগুলোতে অনেক মজা হতো। সবার সঙ্গে বসে খাওয়া দাওয়া। সবকিছুতেই একটা উৎসবের আমেজ ছিলো। রোজা রেখে সারাদিন অপেক্ষা করতাম কখন সন্ধ্যে হবে। ইফতার করবো। আবার সেহরির সময় ঠিক উঠে বসে থাকতাম। কী মজার সব দিন ছিলো।

জাগো নিউজ : রোজার মজার কোনো স্মৃতি.....নাদিয়া : অনেক স্মৃতিই আছে। বিশেষভাবে বলতে গেলে বলবো আমার প্রথম বিয়ের পর প্রথম যখন রোজা এলো সেই সময়টা খুব দারুণ ছিলো। বিয়ের পর প্রথম রোজা, প্রথম ঈদ, প্রথম সবকিছুতেই একটা অন্যরকম আনন্দ থাকে। বিয়ের পর প্রথম রোজায় আমার শ্বশুরবাড়ির লোকেরা আমাদের বাড়িতে ছিলো।

সবাইকে নিজের হাতে রান্না করে ইফতার খাইয়েছিলাম। এটা এখন নিয়মিতই করি। তবে ভালো লাগে সেই স্মৃতিটা।

জাগো নিউজ : বড় বেলার রোজা আর এখনকার রোজায় কী পার্থক্য পান.....?নাদিয়া : অবশ্যই অনেক পার্থক্য আছে। শৈশব সবার কাছেই সেরা। তখনকার সবকিছুই স্পেশাল। ছোটবেলায় রোজা রাখতাম মজা করে। আমি যে বড় হয়ে গেছি, আমিও রোজা রাখতে পারি এইটা সবাইকে দেখানোর একটা ব্যাপার ছিলো।

Advertisement

পাশাপাশি স্কুলে গিয়ে বন্ধুদের দেখাতাম আমি রোজা রেখেছি। কে কয়টা রোজা রাখতে পারে সেই প্রতিযোগিতা চলতো। নির্মল সব ভাবনা ছিলো।

আর এখন তো রোজা রাখি এর গুরুত্ব ও মহাত্ম বুঝে। এটা মুসলিম হিসেবে কর্তব্য। এছাড়াও রোজায় নানা রকম দায়িত্ব সামলাতে হয়।

জাগো নিউজ : ইফতার ও সেহরিতে কী ধরনের খাবারকে প্রাধান্য দেন.....?নাদিয়া : যত ভাজাপোড়া সব খাই আমি ইফতারে। হা হা হা। পিঁয়াজু বেগুনি না হলে ভাল লাগে না। আর হালিম আমার খুব পছন্দ। ঘরে তৈরি এসব খাবার না থাকলে মনেই হয় না ইফতার করছি।

এছাড়া কয়েকরকম শরবত থাকে ইফতারে। ঠান্ডা পানির।

সেহরিতে একটু ফ্রেশ খাবার খাওয়ার চেষ্টা করি। শরীরটাকে সারদিনের শক্তি যুগাবে এমন খাবার।

জাগো নিউজ : করোনাকালের এই ঘরবন্দী সময়ে রোজা নিয়ে অভিজ্ঞতা কেমন.....?নাদিয়া : এখন যে সময়টা চলছে সেটা আসলে হতাশার। সারা বিশ্বই একটা মন্দার অপেক্ষায়। ব্যবসা বাণিজ্য বন্ধ, সবরকম কাজ বন্ধ। অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দেবে করোনা বিদায়ের পর। দুর্ভিক্ষের কথাও শুনছি।

তাছাড়া যারা রোজকার আয় দিয়ে চলে তাদের জন্য এটা ভয়ের। কারণ তাদের সঞ্চয় খুব বেশি কিছু থাকে না। আমরা যারা শোবিজের সঙ্গে জড়িত বেশিরভাগই সেই দলে। রোজায় অনেক কাজ থাকতো ঈদের জন্য। সেসব হয়নি। সবাই বেকার। অনেকদিন ধরে শুটিং নেই। ইনকামও নেই। এসব কারণে করোনার এই সময়টা সত্যি খুব হতাশার।

কর্মব্যস্ত মানুষ হঠাৎ করে অচল হয়ে ঘরে বসে থাকলেও এক ধরনের হতাশা কাজ করে। তার উপর রোগের আতঙ্ক।

তবে কিছু পজিটিভ দিকও আছে। করোনার কারণে সবাই পরিবারকে সময় দিতে পারছে। রোজায় বাড়ি থেকে বেশি করে ইবাদত করার সুযোগ এসেছে। বাইরের প্রকৃতিটা নানারকম দুষণ থেকে মুক্ত আছে। এসব ভেবেই আসলে এতগুলো দিন গৃহবন্দী হয়ে আছি।

তাছাড়া ঘরে না থেকে উপায়ও নেই। করোনার সংক্রমণ কমাতে এটা বাধ্যতামূলক। এখনো রোজ রোজ হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। আমাদের দেশেও অনেক লোক আক্রান্ত হচ্ছে। মারাও যাচ্ছে অনেকে।

জাগো নিউজ : এবারের রোজায় বিশেষ কী প্রার্থনা করছেন....?নাদিয়া : একটাই প্রার্থনা - এই মহামারী কেটে যাক। আমার ধারণা বিশ্বের সব মুসলিমই রোজা রেখে এই দোয়া করছেন আল্লাহ যেন করোনা থেকে আমাদের রক্ষা করেন, এই পৃথিবীকে রক্ষা করেন। আবার যেন সবাইকে নিয়ে হেসে আনন্দে বেঁচে থাকার স্বাদ নিতে পারি।

এলএ/এমএস