জাতীয়

বিএসএমএমইউ-এর ২৩তম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপিত

আজ ৩০ এপ্রিল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ২২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী এবং ২৩তম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস।

Advertisement

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৮ সালের ৩০ এপ্রিল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন দেশের প্রথম এ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়।

করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণজনিত পরিস্থিতিতে এ বছর সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে সীমিত আয়োজনের মাধ্যমে উদযাপিত হয় দিবসটি। ‘মানবশত্রু ভাইরাস করোনা, এই যুদ্ধে বাংলাদেশ হারবে না’ এ প্রতিপাদ্যে দিবসটি উদযাপিত হয়েছে।

এ বছর আয়োজনের মধ্যে ছিল- সকাল ৯টায় বি ব্লকে স্থাপিত বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে পুষ্পস্তবক অর্পণ এবং বি ব্লকের সামনে গোল চত্বরে জাতীয় পতাকা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব পতাকা উত্তোলন। পতাকা উত্তোলনের সময় জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করা হয়।

Advertisement

এছাড়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশাসনের পক্ষ থেকে উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়ার শুভেচ্ছা বাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শুভানুধ্যায়ীসহ শিক্ষক, চিকিৎসক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, নার্স, কর্মচারীদের সেলফোনে/অনলাইনে পৌঁছে দেয়া হয়।

জাতীয় পতাকা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব পতাকা উত্তোলন এবং বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে পুষ্পস্তবক অর্পণের সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন- উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ডা. সাহানা আখতার রহমান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. মুহাম্মদ রফিকুল আলম, উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. জাহিদ হোসেন, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান, শিশু অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. চৌধুরী ইয়াকুব জামাল, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল হান্নান, প্রক্টর অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোজাফফর আহমেদ প্রমুখ।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের বি ব্লকে স্থাপিত বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে পুষ্পস্তবক অর্পণের পর সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার জন্য বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

২৩তম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে সংশ্লিষ্ট সকলকে শুভেচ্ছা জানিয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় মানুষের আস্থা ও নির্ভরতার চিকিৎসাসেবা প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে উঠেছে। সংশ্লিষ্ট সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা শিক্ষা, চিকিৎসাসেবা ও গবেষণাকে বিশ্বমানে উন্নীত করতে হবে।’

Advertisement

তিনি বলেন, ‘কোভিড-১৯-এর কারণে এ বছর সীমিত আয়োজনের মধ্য দিয়ে ২৩তম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন করা হচ্ছে। করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে বাংলাদেশসহ সমগ্র বিশ্ব আজ কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে অতিক্রম করছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে মহান মুক্তিযুদ্ধে যেমন আমরা জয়ী হয়েছিলাম, ঠিক তেমনই জাতির পিতার কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আজকে আমরা করোনা সংক্রমণের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছি। এই যুদ্ধে চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য সেবা কর্মীরা হচ্ছেন অগ্রবর্তী বাহিনী।’

প্রসঙ্গত, প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সকল শুভানুধ্যায়ীর আন্তরিক সহযোগিতা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক, চিকিৎসক, নার্স, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিরলস প্রচেষ্টায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় দেশের মানুষের আকাঙ্ক্ষার জায়গায় পৌঁছেছে।

আইসিইউ, এনআইসিইউ, কেবিনসহ এক হাজার ৯০৪ শয্যাবিশিষ্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় আজ শুধু বাংলাদেশেই নয়, আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে সুনাম অর্জন করেছে। কোভিড-১৯ এর কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতির আগ পর্যন্ত বহির্বিভাগে নতুন-পুরাতন মিলিয়ে দৈনিক ৮ হাজার রোগী সেবা নিয়েছেন। ২৭টি বিভাগে বৈকালিক স্পেশালাইজড আউটডোর সেবা দেয়া হয়েছে। প্রতিদিন বিভিন্ন বিভাগে জটিল জটিল সার্জারিসহ উল্লেখযোগ্য সংখ্যক অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হচ্ছে। শিশু হৃদরোগ বিভাগে জন্মগত ও জটিল হৃদরোগে আক্রান্ত শিশুদের বিনা অপারেশনে ও অপারেশনের মাধ্যমে বিনামূল্যে চিকিৎসা কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। ক্যানসারে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য বর্তমান প্রশাসনের নিরলস প্রচেষ্টার ফলে ইতিমধ্যেই লিনিয়ার এক্সিলারেটর মেশিন স্থাপন ও এর কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হয়েছে। বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষাসহ রোগীদের আধুনিক ও উন্নতসেবা প্রদান করায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় রোগীদের আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাসেবার পরিসর সম্প্রসারণের লক্ষ্যে সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের নির্মাণ কার্যক্রমও এগিয়ে যাচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রয়েছে মেডিসিন, সার্জারি, বেসিক সায়েন্স ও প্যারাক্লিনিক্যাল সায়েন্স, ডেন্টাল, শিশু, প্রিভেনটিভ অ্যান্ড সোশ্যাল মেডিসিন, নার্সিং, মেডিকেল টেকনোলজি নামে ৮টি অনুষদ। বিভাগের সংখ্যা ৫৬টি। রয়েছে ইনস্টিটিউট অব পেডিয়াট্রিক নিউরোডিসঅর্ডার অ্যান্ড অটিজম (ইপনা)। বিভিন্ন প্রকল্প বিদ্যমান রয়েছে। ৬২টি রেসিডেন্সি কোর্সসহ পোস্ট গ্রাজুয়েট কোর্সের সংখ্যা ৯৫টি। অধিভুক্ত কলেজ ও ইনস্টিটিউটের সংখ্যা ৪৩টি।

এ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভারত, নেপাল, ভুটান, মালদ্বীপ, সোমালিয়াসহ বিভিন্ন দেশের ছাত্রছাত্রীরা উচ্চশিক্ষা গ্রহণ ও গবেষণার জন্য অধ্যয়ন করছেন। প্রায় ৪ হাজার ৬৩৯ জনবল নিয়ে পরিচালিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণার ক্ষেত্রেও অবদান রেখে চলেছে।

এমইউ/এফআর/পিআর