করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) কারণে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস-পরীক্ষা স্থগিত করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি)। বন্ধের শুরুতেই গত ২০ মার্চ সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল আবাসিক শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেয় প্রশাসন। সেই নোটিশে ৩১ মার্চ পর্যন্ত হল বন্ধ থাকার কথা থাকলেও পরবর্তীতে ছুটি আরও বৃদ্ধি করে। তবে লম্বা সময় ধরে হল বন্ধ থাকার বিষয়টিকে ‘সুযোগ’ হিসেবে নিয়ে হলের সকল ব্যবস্থাপনার পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
Advertisement
এতে বিশ্ববিদ্যালয়ে বহুদিন ধরে চলা ‘গণরুম’ প্রথা বাতিল হবে এবং অছাত্ররাও হল ত্যাগে বাধ্য হবেন।
মঙ্গলবার (২৮ এপ্রিল) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনলাইনে প্রভোস্ট কমিটির এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. নাসরীন আহমাদ, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ এবং কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দীন সংযুক্ত ছিলেন। সভায় করোনাভাইরাস পরবর্তী সময়ে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি ও হলের সামগ্রিক পরিবেশ নিয়ে আলোচনা হয়।
সভা শেষে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি নিরসন এবং আবাসিক হলের শিক্ষা ও জীবনমানসহ সামগ্রিক পরিবেশ উন্নয়নের লক্ষ্যে হল প্রশাসন নিম্নোক্ত সিদ্ধান্তসমূহ বাস্তবায়ন করবে বলে সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
Advertisement
সিদ্ধান্তগুলো হলো-
>> বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পর শুধুমাত্র বৈধ শিক্ষার্থীরা সংশ্লিষ্ট হলের নীতিমালার আলোকে হলে অবস্থান করবে। যাদের ছাত্রত্ব নেই, তারা কোনক্রমেই হলে অবস্থান করত পারবে না। তাদেরকে হল প্রশাসন থেকে দেয়া সময়ের মধ্যে ব্যক্তিগত জিনিসপত্র নিয়ে সংশ্লিষ্ট কক্ষ/সিট ছেড়ে দিতে হবে। তীব্র আবাসন সংকট নিরসনে এর বিকল্প নেই।
>> হলের কোনো কক্ষের মেঝেতে কোনো শিক্ষার্থী অবস্থান করতে পারবে না। প্রয়োজনে যথাযথ নিয়মে ডাবলিং করতে পারবে।
>> যে সকল কক্ষে খাট/বেড নেই, ছুটিকালীন সময়ে সে সকল কক্ষে নিয়মমাফিক খাট/বেড সরবরাহ করার ব্যবস্থা নেবে হল প্রশাসন।
Advertisement
উপরোক্ত সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়িত হলে দীর্ঘদিনের গড়ে ওঠা কথিত ‘গণরুমের’ অবসান ঘটবে। তবে এই ‘গণরুমের’ অবসান ও ‘যাদের ছাত্রত্ব নেই, তাদের হলে অবস্থান না করার’ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনগুলোর আন্তরিক সহযোগিতা অত্যাবশ্যক বলেও সভায় অভিমত ব্যক্ত করা হয়।
সর্বশেষ, বিশ্ববিদ্যালয় ছুটিকালীন সময়ের মধ্যে হল প্রশাসন হলের সংস্কার ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ সম্পন্ন করবে বলে সিদ্ধান্ত নেয়।
এফআর/এমএস