করোনাভাইরাসের কারণে পরিবর্তিত সময়ে খেলাধুলা আবার কবে মাঠে গড়াবে, কবে আবার ক্রীড়াপ্রেমী মানুষ তাদের প্রিয় তারকা এবং দলগুলোকে নিয়ে মেতে উঠবে, সে অপেক্ষায় সবাই। কিন্তু, সেই পরিকল্পনা যে সুদুর পরাহত! করোনাভাইরাস কবে নির্মুল হবে, কবে সবকিছু স্বাভাবিক হবে, সে নিশ্চয়তাই বা দেবে কে?
Advertisement
তবুও এই পরিস্থিতিতে, বিশেষ করে যখন ইউরোপে প্রতিদিনই কয়েক হাজারা মানুষের মৃত্যু হচ্ছে করোনায়, তখন কিভাবে ইতালি, স্পেন, জার্মানির মত দেশগুলো পূনরায় টাইম-টেবল ঠিক করে ফুটবল শুরু করার কথা ভাবতে পারে!
অথচ, এরই মধ্যে ফিফার মেডিক্যাল কমিটি পরামর্শ দিয়েছে, আগামী সেপ্টেম্বরের আগে ফুটবল মাঠে গড়ানোর চিন্তা করাটাই হবে বোকামি। সংস্থাটির চেয়ারম্যান মাইকেল ডি’হুগি বলেন, ‘করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধ করে সব কিছু স্বাভাবিক হয়ে পূনরায় ফুটবল মাঠে গড়ানোর জন্য সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত সময় দিতেই হবে। যদি এখনই ফুটবল শুরু করতে হয়, তাহলে হলুদ কার্ড হাতের মধ্যে রেখেই খেলতে নামতে হবে।’
স্কাই স্পোর্টস নিউজের সঙ্গে এক ইন্টারভিউতে মাইকেল হুগি বলেন, ‘মেডিক্যালীয় দিক থেকে যদি বলা হয় যে কোন বিষয়টাকে সবার আগে প্রাধান্য দেয়া উচিৎ, তখন আমি বলবো যে, অন্তত সেপ্টেস্বরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত অপেক্ষা করা উচিৎ। এটা শুধু অর্থের বিষয় নয়, এখানে বিষয়টা হচ্ছে জীবন এবং মৃত্যুর।’
Advertisement
বর্তমান সময়কে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে কঠিন পরিস্থিতি আখ্যায়িত করে মাইকেল হুগি বলেন, ‘দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর আমরা সবচেয়ে কঠিন এবং নাটকীয় একটি সময়ে বেঁচে আছি। আমাদের কোনোভাবেই এই সময়কে অবমূল্যায়ন করা চলবে না।’ মূলতঃ করোনাভাইরাস পুরোপুরি নির্মূল না হওয়া সত্ত্বেও যে খেলা শুরুর চিন্তা করা হচ্ছে, সে কারণেই এ কথা বললেন হুগি।
ফিফা মেডিক্যাল কমিটির চেয়ারম্যানের বক্তব্য এমন এক সময়ে এলো, যখন জার্মান বুন্দেসলিগা আগামী মাসের শুরুতেই শুরু করার ঘোষণা দেয়া হচ্ছে। ইতালি চিন্তা করছে তাদের লিগ চালু করবে এবং যুক্তরাজ্যও চিন্তা-ভাবনা করছে তাদের ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ চালু করবে আগামী জুন থেকে।
ডি হুগি সরাসরি বলে দিয়েছেন, ‘এখনই খেলোয়াড়দের একে অপরের কাছাকাছি আসার এই সিদ্ধান্ত খুব দ্রুত এবং সময়ের অনেক আগে হয়ে যাচ্ছে। যখন সামাজিক দুরত্বের বিষয়টি এখনও পর্যন্ত প্রতিষ্ঠিত এবং বলবৎ রয়েছে।
ফিফার পাওয়ারফুল নির্বাহী কমিটির সাবেক এই সদস্য এবং নামকরা এই ডাক্তার সরাসরি বলে দিয়েছেন, ‘বিশ্ব এখন কোনোভাবেই প্রতিযোগিতামূলক ফুটবলের জন্য প্রস্তুত নয়। আমি আশা করি এই পরিস্থিতি খুব দ্রুতই পরিবর্তন ঘটবে। এখন প্রয়োজন আপনাকে অনেক বেশি ধৈর্য্য ধরা।’
Advertisement
কখন ফুটবল খেলা সম্ভব হবে, সে ইঙ্গিতও তিনি দিয়েছেন। ডা. ডি’হুগি বলেন, ‘ফুটবল তখনই সম্ভব, যখন সামাজিক দুরত্বের বিষয়টা আর থাকবে না। একজন আরেকজনের সঙ্গে হাত মেলাতে পারবে, তখন। ফুটবল হলো একে অপরের সঙ্গে মেলামেশার একটি খেলা। একজন আরেকজনের সংস্পর্শে আসতেই হবে।’
আইএইচএস/