অর্থনীতি

বীমা পেশার লক্ষাধিক শিক্ষার্থীর দুঃসময়

পড়া-লেখার খরচ জোগাড় করতে বীমা পেশায় খণ্ডকালীন চাকরি করেন লক্ষাধিক শিক্ষার্থী। নিজের খরচ জোগাড় করে তাদের অনেকে পরিবারের খরচেরও সহায়তা করেন। করোনাভাইরাসের প্রকোপে দুঃসময়ে পড়েছেন দরিদ্র পরিবারের এ শিক্ষার্থীরা।

Advertisement

বীমা সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কমিশনভিত্তিতে বীমা পেশায় তারা জড়িত আছেন তাদের বড় অংশ শিক্ষার্থী। কমিশনের ভিত্তিতে বিভিন্ন বীমা কোম্পানিতে কাজ করেন এমন শিক্ষার্থীর সংখ্যা এক থেকে দেড় লাখ।

এ শিক্ষার্থীরা বীমা পলিসি বিক্রির মাধ্যমে নির্দিষ্ট কমিশন পান। কমিশনের বাইরে তাদের অতিরিক্ত কোনো অর্থ দেয়া হয় না। সুতরাং পলিসি বিক্রি করতে পারলে আয় আছে, আর বিক্রি করতে না পারলে আয় নেই। করোনা ভাইরাস প্রকোপের কারণে প্রায় দেড় মাস ধরে তাদের পলিসি বিক্রি বন্ধ। ফলে আয়হীন দিন কাটাতে হচ্ছে এই লড়াকু শিক্ষার্থীদের।

এ বিষয়ে জেনিথ ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) এস এম নুরুজ্জামান বলেন, যেই সময়টাতে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা কিংবা গল্প-গানে মেতে ওঠার কথা, সেই সময়টাতে আমাদের দেশের কলেজ, মাদরাসা ও বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া অনেক শিক্ষার্থীকে ব্যস্ত থাকতে হয় অর্থ উপার্জনের ভাবনায়।

Advertisement

‘দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে আসা এসব শিক্ষার্থীকে শুধু পড়ালেখায় মনোনিবেশ করলেই চলে না, ভাবতে হয় পড়ালেখা চালিয়ে নেয়ার অর্থের জোগান নিয়েও। এমনকি কখনো কখনো নিতে হয় পরিবারের দায়িত্বও।’

তিনি বলেন, জীবন সংগ্রামে টিকে থাকার এ লড়াইয়ে শিক্ষার্থীদের অবলম্বন বীমা পেশা। কিন্তু কোভিড-১৯ এর প্রাদুর্ভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বর্তমানে সেই অবলম্বনটুকুও হারিয়েছেন তারা। দেশের বিভিন্ন কলেজ, মাদরাসা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বীমা পেশায় জড়িত এসব শিক্ষার্থীর প্রায় সবাই বর্তমানে অর্থের অভাবে এক কঠিন দুঃসময় পার করছেন, সেই সঙ্গে ভবিষ্যৎ নিয়েও ভুগছেন অনিশ্চয়তায়।

এই প্রধান নির্বাহী বলেন, কমিশন ভিত্তিতে যারা বীমা পেশায় কাজ করেন তাদের অর্ধেকের বেশি শিক্ষার্থী। এমন শিক্ষার্থীর সংখ্যা এক লাখের ওপরে। এরা কমিশন থেকে যে আয় করে তা দিয়ে নিজের পড়ালেখা চালানোর পাশাপাশি পরিবারকেও কিছু সহযোগিতা করতেন। কিন্তু বর্তমানে অফিস বন্ধ রয়েছে অথচ তাদের প্রতি মাসে বাড়িভাড়া প্রদান করতে হবে। এখন কীভাবে পরিশোধ করবে!

বীমা পেশায় থেকে পাওয়া অর্থে ভর করে চলা শহরাঞ্চলে থাকা শিক্ষার্থীদের করোনাভাইরাসের কারণে কলেজ, মাদরাসা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ফি ও মেস ভাড়া সঠিক সময়ে পরিশোধ করতে হবে। যদি এই পরিস্থিতি আরও দীর্ঘায়িত হয় তাহলে পরবর্তী সেমিস্টারে হয়তো অনেকে ভর্তিই হতে পারবো না- এমন শঙ্কার কথাও জানান নুরুজ্জামান।

Advertisement

তিনি আরও বলেন, রাজধানীর বাইরের চিত্রও অনেকটা একই। এমনকি অর্থের অভাবে তাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় চাহিদাগুলো পূরণেও হিমশিম খাচ্ছে। এই শিক্ষার্থীদের সহায়তায় সরকারের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট কোম্পানি, বিআইএ এবং আইডিআরএর এগিয়ে আসা উচিত।

এমএএস/এএইচ/এমএস